ভ্যাকিউয়াম অ্যাডভান্সের কাজ বোঝার উপায় – এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “বৈদ্যুতিক পদ্ধতি” অধ্যায়ের একটি পাঠ।
ভ্যাকিউয়াম অ্যাডভান্সের কাজ বোঝার উপায়
ভ্যাকিউয়াম লাইনটি কারবুরেটর থেকে খুলে মুখের সাহায্যে টানলে যদি ব্রেকার প্লেটটি নড়াচড়া করে তাহলে বুঝতে হবে যে ভ্যাকিউয়াম ইউনিটটি ভাল আছে।
ডিস্ট্রিবিউটর শ্যাফট কোন দিকে ঘোরে তা নির্ণয় করার নিয়ম :
ডিস্ট্রিবিউটর ক্যাপটি খুলে রোটর ধরে এদিক ওদিক ঘুরলে দেখা যাবে রোটরটি একদিকে মোটেই ঘুরতে চায় না কিন্তু অন্যদিকে ১০°-১৫° পর্যন্ত ঘোরে। যেদিকে রোটরটি ১০°-১৫° ঘোরে সেই দিকটিই হচ্ছে ডিস্ট্রিবিউটর শ্যাফটের ঘোরার দিক। স্পার্ক হওয়ার সময় সি. বি. বিন্দু খোলা থাকে। সি.বি. বিন্দু প্লাটিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম, ভ্যানাডিয়াম ও টাংস্টেন সঙ্কর ধাতু দ্বারা তৈরী হয়।
ইগনিশন পদ্ধতির ত্রুটি ও ত্রুটি মুক্তকরণ :
ইগনিশন পদ্ধতিকে ত্রুটিমুক্ত করে গাড়ী সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
- ১। প্রথমে ব্যাটারীর চার্জ তড়িবিশ্লেষ্য এবং ব্যাটারীর সংযাগ (−, +) পরীক্ষা করতে হবে। এগুলি যদি ঠিক না থাকে তবে ব্যাটারী চার্জ করতে হবে এবং সংযোগ ঠিক করতে হবে।
- ২। এখন সুইচ দিয়ে দেখতে হবে বিদ্যুৎ সি. বি. বিন্দু পর্যন্ত যায় কিনা। এটি পরীক্ষা করার জন্য ডিস্ট্রিবিউটর ক্যাপ খুললে সি. বি. বিন্দু স্ক্রু-ড্রাইভার দ্বারা খুলে (ফাঁকা করলে) যদি স্পার্ক দেখায় তবে বুঝতে হবে বিদ্যুৎ সি. বি. বিন্দু পর্যন্ত ঠিক আছে। সি. বি. বিন্দুর ফাক ফিলার গেজ দ্বারা মেপে পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং সি. বি. বিন্দুতে কার্বন পড়লে অথবা ক্ষয়প্রাপ্ত হলে এমারী কাপড় দ্বারা সূক্ষ্মভাবে ঘর্ষণ করে দিতে হবে। ফাঁক কমবেশী হলে সি. বি. বিন্দুর সমন্বয় সঠিকভাবে করা উচিত।
সি. বি. বিন্দু সমন্বয় করার নিয়ম : প্রথমে ডিস্ট্রিবিউটর খুলে ফেলতে হবে। তারপর আস্তে আস্তে ক্র্যাঙ্ক করিয়ে ডিস্ট্রিবিউটর শ্যাফটকে ঘুরিয়ে সি. বি. বিন্দু খোলা অবস্থায় আনতে হবে। সি. বি. বিন্দু দুইটি অংশে বিভক্ত। এর এক অংশ গ্রাউন্ড প্লেটের সঙ্গে এবং অপর অংশ ব্রেকার আর্মের সাথে যুক্ত থাকে।
গ্রাউন্ড প্লেটটি একটি সমন্বয় করার স্ক্রু দ্বারা আটকানো থাকে। সি. বি. বিন্দুর ফাঁক কমবেশী করার জন্য গ্রাউড প্লেটে খাঁজ (slote) কাটা থাকে। সি. বি. বিন্দু খোলা অবস্থায় রেখে প্রয়োজনীয় মাপের ফিলার গেজটি সি. বি. বিন্দুর দুই অংশের মধ্যে ধরে রাখতে হয়। এমতাবস্থায় সমন্বয় করার স্ক্রুটি ঢিলা করতে হয় এবং মুক্ত (free) প্লেটটি বের করে সঠিক মাপে রেখে ত্রুটিকে এঁটে দিতে হবে। এর ফলে সঠিক মাপ পাওয়া যাবে। মাপ ঠিক হচ্ছে কিনা সন্দেহ দূর করার জন্য ফিলার গেজ দ্বারা পুনরায় ফাঁক মেপে দেখা প্রয়োজন ।
- ৩। কন্ডেন্সার (condenser) সংযোগ পরীক্ষা করার দরকার। কন্ডেন্সারের সংযোগ ঠিক না থাকলে স্পার্কে সৃষ্ট অতিরিক্ত ভোল্টেজে সি. বি. বিন্দু জ্বলে যাবে। কন্ডেন্সার খারাপ থাকলে ইঞ্জিন চালু হবে না। কন্ডেন্সার আংশিক খারাপ থাকলে হাই স্পীডে গোলযোগ দেখা দিবে। কন্ডেন্সার শর্ট হলে ইঞ্জিন ফায়ারিং না পেয়ে বন্ধ হয়ে যাবে। অনেক সময় পুরাতন কন্ডেন্সারের পরিবর্তে নতুন কন্ডেন্সার লাগালে ইঞ্জিনের অবস্থার উন্নতি হয়।
সিরিজ ল্যাম্পের সাহায্যে কন্ডেন্সার ভাল কি খারাপ তা বুঝা যায়। সিরিজ ল্যাম্পের একপ্রান্ত কন্ডেন্সারের কন্ট্রাক্ট বিন্দুতে এবং অন্যপ্রান্ত বডিতে ধরলে যদি ল্যাম্পটি জ্বলে উঠে তাহলে কন্ডেন্সারটি ভাল নয়। কন্ডেন্সার প্রাইমারী ভোল্টেজকে ২০০ হতে ২৫০ ভোল্টেজ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কন্ডেন্সার বেশী ক্যাপাসিটির ব্যবহার করতে নেই, তাতে সি. বি. বিন্দুর ক্ষতি হয় ।
- ৪। ইগনিশন কয়েলের সংযোগগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্রয়োজন হলে কয়েল পরীক্ষা করে দিতে হবে। কয়েলের প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী উইন্ডিং (winding) এর রোধ (resistence) এ্যাভোমিটার দ্বারা পরিমাপ করে বুঝা যায় ইগনিশন কয়েল ভাল কি মন্দ। যদি কোন উইন্ডিং-এর ধারাবাহিকতা না পাওয়া যায় তবে মনে করতে হবে উক্ত উইন্ডিংটির কোথাও বিচ্ছিন্ন হয়েছে। অর্থাৎ কয়েলটি বাতিল হয়ে গিয়েছে।
একটি ১২ ভোল্ট ইগনিশন কয়েলের রোধ সাধারণত ৪ হতে ৬ ১2 (ওহম) থাকে। প্রাইমারী কয়েলে (মোটা তারে) এবং সেকেন্ডারী কয়েলে ৯ হতে ১০ ১২ (ওহম) দেখায়। ইগনিশন কয়েল গরম হলে (কানেকশন ঠিক থাকলেও) বুঝতে হবে যে কয়েলের কার্যক্ষমতা কমে গিয়েছে।
৫। কোন যন্ত্রপাতি ছাড়াও কয়েলের কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করা যায়। এই পরীক্ষার জন্য ডিস্ট্রিবিউটর ক্যাপটি খুলে ফেলতে হবে এবং ইগনিশন কয়েলের হাইটেনশন লিডটি ডিস্ট্রিবিউটর ক্যাপ হতে খুলে ফেলতে হবে। এই সময় সি. বি. বিন্দু বন্ধ অবস্থায় রাখতে হবে।
প্রয়োজনবোধে সামান্য ক্র্যাঙ্ক করে সি. বি. বিন্দু বন্ধ অবস্থায় আনয়ন করতে হবে। ইগনিশন কয়েলের হাইটেনশন লিড (secondary winding)-এর খোলা প্রান্ত ইঞ্জিনের হেড অথবা বড়ির নিকট হতে ৩ইঞ্চি / ৪ দূরে ধরে রাখা অবস্থায় স্ক্রু ড্রাইভার দ্বারা পুনঃ পুনঃ সি.বি. বিন্দু খুললে যদি লিড হতে স্পার্ক পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে ইগনিশন কয়েলের অবস্থা খুব ভাল।
স্পার্ক যদি ৩ইঞ্চি / ৪ এর পরিবর্তে” ১ ইঞ্চি / ২ দূরত্বে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায় তবে মনে করতে হবে কয়েল দুর্বল হয়ে পড়েছে। স্পার্ক দুর্বল হলে লাল রং ধারণ করে। তখন কয়েল পরিবর্তন করা দরকার। কয়েল ভাল থাকলে স্পার্ক আকারে লম্বা হয় ৩ইঞ্চি /৪ – ১ইঞ্চি / ২ এবং রং নীল-সবুজ হয়। যখন স্পার্ক “G করানো হয় তখন চট্ চট্ করে শব্দ হয়। দুর্বল স্পার্ক হলে ঐরূপ হয় না ।
৬। স্পার্ক দুর্বল হতে পারে কন্ডেন্সার, সি. বি. বিন্দু এবং ব্যাটারীর দোষে। তাই কয়েলটি বাদ দেওয়ার পূর্বে অন্য একটি নতুন কয়েল দ্বারা ইগনিশন পদ্ধতিটি পরীক্ষা করা দরকার। এতে কয়েলই যে স্পার্ক দুর্বল হওয়ার জন্য দায়ী তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
৭। ডিস্ট্রিবিউটরের মধ্যে যে সেন্ট্রাল কার্বন রড়টি থাকে তাও সিরিজ ল্যাম্প দ্বারা পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। কারণ এই ত্রুটির জন্য সিলিন্ডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্ন ঘটতে পারে। তদ্রূপভাবে রোটরটিও সিরিজ ল্যাম্প দ্বারা ধারাবাহিকতা পরীক্ষা করা দরকার।
৮। ডিস্ট্রিবিউটর টার্মিনাল পোস্টসমূহ একটু পরিষ্কার করে দিতে হবে।
৯। এখন দেখতে হবে বিদ্যুৎ ডিস্ট্রিবিউটর হতে স্পার্ক প্লাগে যায় কিনা। যদি স্পার্ক প্লাগে স্পার্ক পাওয়া যায় তাহলে খুব ভাল। আর যদি না পাওয়া যায় তাহলে নিম্নলিখিতভাবে পরীক্ষা করতে হবে। ১নং সিলিন্ডারের স্পার্ক প্লাগ হতে হাইটেনশন লিডটি খুলে ইঞ্জিন বডি অথবা হেড হতে ৩ ইঞ্চি / ৪ইঞ্চি – ১ইঞ্চি / ২ দূরে ধরে রাখা অবস্থায় ইঞ্জিনটি চালু করার মত করে ক্র্যাঙ্ক করতে হবে এবং 8 দেখতে হবে হাইটেনশন লিড হতে স্পার্ক হয় কিনা। যদি স্পার্ক হয় তবে বুঝতে হবে হাইটেনশন লিড ভাল আছে (অনেক সময় লিড পুরানো হলে বা ছিদ্র হলে বা শর্ট হলে স্পার্ক হয় না)।
এখন হাইটেনশন লিডটি স্পার্ক প্লাগে লাগিয়ে বড়িতে ধরে রাখা অবস্থায় ইঞ্জিন ক্র্যাঙ্ক করে দেখতে হবে স্পার্ক প্লাগে স্পার্ক হয় কিনা। যদি স্পার্ক হয় তবে বুঝতে হবে স্পার্ক প্লাগটি ভাল অর্থাৎ এই সিলিন্ডার পর্যন্ত ইগনিশন ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত।
যদি স্পার্ক প্লাগে স্পার্ক না হয় তবে স্পার্ক প্লাগের ফাক ফিলার গেজ দ্বারা সমন্বয় করে এবং কার্বন ভালভাবে পরিষ্কার করে পুনরায় উপরোক্ত পদ্ধতিতে স্পার্ক পরীক্ষা করতে হবে। যদি স্পার্ক হয় তবে বুঝতে হবে স্পার্ক প্লাগটি পূর্বে ত্রুটিযুক্ত ছিল তাই স্পার্ক হয়নি। আর যদি মোটেই স্পার্ক না হয় তবে বুঝতে হবে স্পার্ক প্লাগটি ত্রুটিপূর্ণ এবং বদল করতে হবে।
সকল হাইটেনশন লিড এবং স্পার্ক প্লাগ পরীক্ষা করার জন্য উপরোক্ত পদ্ধতি প্রয়োগ করে ত্রুটিযুক্ত করতে হবে। ত্রুটিমুক্ত করার পর ইগনিশন টাইমিং ঠিক থাকলে নিশ্চিতভাবে বলা চলে যে ইগনিশন ব্যবস্থায় কোন ত্রুটি নেই। অন্য সকল ব্যবস্থায় ঠিক থাকলে ইঞ্জিন চালু হবে।
মিসফায়ার কি এবং কেন হয়:
পেট্রোল ইঞ্জিনের বেলায় এয়ার ফুয়েল মিশ্রণ না জ্বললে বা কম জ্বালানোকে মিসফায়ার বলে। নিম্নলিখিত কারণে মিসফায়ার হতে পারে।
(ক) কম্প্রেশন কম হলে,
(খ) এয়ার এবং ফুয়েলের মিশ্রণ যথোপযুক্ত না হলে,
(গ) তেলের সাথে পানি বা ময়লা থাকলে,
(ঘ) স্পার্ক প্লাগ হতে স্পার্ক না পেলে, বা দুর্বল স্পার্ক হলে,
(৬) হাইটেনশন লিড উল্টো লাগানো হলে, (চ) টাইমিং বেশী অ্যাডভান্স বা রিটার্ড হলে,
মিসফায়ার হলে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়। ইঞ্জিন হতে নানা ধরনের শব্দ বের হয় এবং কাঁচা তেলের গন্ধ বের হয়।
ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ : নিম্নলিখিত কারণে ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে
যায়।
(ক) স্পার্ক না পেলে, (খ) কারবুরেটরে তেল না আসলে, (গ) এ. সি. পাম্প কাজ না করলে, (ঘ) ট্যাঙ্কে তেল না থাকলে, (ঙ) সুইচ বন্ধ হলে, (চ) সি. বি. বিন্দুর সমন্বয় স্ক্রু ঢিলা হয়ে ফাঁক কনে গেলে, (ছ) হাইটেনশন লিড বিচ্ছিন্ন হলে, (জ) ইগনিশন কয়েল নষ্ট হলে।
মিসিং সিলিন্ডার :
সিলিন্ডার কোন কারণে শক্তি উৎপাদনে ব্যর্থ হওয়াকে মিসিং সিলিন্ডার বলে। সিলিন্ডার মিসিং হলে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়। ইঞ্জিনের ঝাঁকুনি বেড়ে যায় ও ইঞ্জিনের দ্রুতি কমে যায়।
মিসিং সিলিন্ডার বের করার উপায় :
(ক) অন্য সিলিন্ডারের তুলনায় ঐ সিলিন্ডার কম গরম হবে, (খ) ইঞ্জিনের শক্তি কমে যাবে, (গ) ইঞ্জিনে ঝাঁকুনি শুরু হয়, (ঘ) ফুয়েল লাইন বিচ্ছিন্ন করলে উক্ত সিলিন্ডারের বেলায় ইঞ্জিনের দ্রুতি একই রকম থাকবে। কিন্তু এটি ভাল সিলিন্ডার হলে ইঞ্জিনের দ্রুতি আরও কমে যাবে, ঝাঁকুনি বেড়ে যাবে (ডিজেল ইঞ্জিনের বেলায়), (ঙ) পেট্রোল ইঞ্জিনের বেলায় স্ক্রু ড্রাইভার দ্বারা স্পার্ক আর্থ করে দেওয়া হয় অথবা স্পার্ক প্লাগ হতে হাইটেনশন লিড তুলে নেওয়া হয়।
তবে ইঞ্জিনের দ্রুতির কোন পরিবর্তন হবে না বা ঝাঁকুনিও বাড়বে না। কিন্তু এটা যদি ভাল সিলিন্ডার হতো তাহলে ইঞ্জিনের দ্রুতি কমে যেত এবং ঝাঁকুনি বেড়ে যেত, (চ) কম্প্রেশন না হলে, (ছ) ফুয়েল স্প্রে না হলে, (জ) সিলিন্ডারে পানি গেলে।
ইগনিশন কয়েল রোধক (Resistor) :
বর্তমানে মোটরযানসমূহে ইগনিশন কয়েলের প্রাইমারী উইন্ডিং-এর সাথে সিরিজে একটি রোধক তার ব্যবহার করা হয়। ইঞ্জিন চালানোর জন্য যখন ক্র্যাঙ্কিং করা হয় তখন বিদ্যুৎ রোধক ডিঙ্গিয়ে সরাসরি সলেনয়েড হতে ইগনিশন কয়েলে যায় (পূর্ণ ভোল্টেজে) যাতে সহজে চালু হয়।
আবার ইঞ্জিন যখন চালু হয়ে যায় এবং ইগনিশন সুইচ চালু অবস্থায় (on position) থাকে তখন ঐ রোধক তারটি সি.বি. বিন্দুকে অতিরিক্ত বিদ্যুতের হাত হতে রক্ষা করে। ১২ ভোল্টের ইগনিশন কয়েল সবসময় ১২ ভোল্ট দ্বারা চালিত হলে এর আয়ুষ্কাল কমে যায়। ঐ রোধকটি তাই কয়েলে সবসময় কম ভোল্টেজ সরবরাহে সহায়তা করে। বর্তমানে মোটরযানে রেডিও এবং টেলিভিশন চালনা করার বাধা অতিক্রম কল্পেও এই রোধক ব্যবহার করা হয়।
ক্যাম কোণ বা ডুয়েল কোণ (Cam angle or dwell angle ):
ক্যাম বা ডুয়েল একটি কোণ (angle) বিশেষ। সি.বি. বিন্দু বিন্দু বন্ধ থাকাকালীন অবস্থায় ডিস্ট্রিবিউটর ক্যাম যত ডিগ্রী পথ অতিক্রম করে তাকেই ক্যাম বা ডুয়েল কোণ বলে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় একটি ছয় সিলিন্ডারবিশিষ্ট পেট্রোল ইঞ্জিনের ক্যাম কোণ হচ্ছে ৩৬০° + ৬ = ৬০°। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা যায় ঐ ইঞ্জিনের ক্যাম কোণ ৩৬°। কারণ ৬০° পথ অতিক্রম করতে সি.বি. বিন্দুর ৩৬° পথ বন্ধ থাকে এবং ২৪° পথ খোলা থাকে। অর্থাৎ ফায়ারিং বিন্দুর ১২° পূর্বে সি.বি. বিন্দু খুলে যায় এবং ফায়ারিং-এর পরে ১২° পৰ্যন্ত সি.বি. বিন্দু খোলা থাকে।
আবার একটি চার সিলিন্ডারবিশিষ্ট ইঞ্জিনের ক্যাম কোণ ৪১। অর্থাৎ ৩৬০° + ৪ = ৯০° পথ অতিক্রম করার সময় সি.বি. বিন্দু ৪১° পথ বন্ধ থাকে এবং ৪৯° পথ খোলা থাকে। এখানে স্বভাবতই একটি ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, সি.বি. বিন্দুর ফাঁক বাড়লে ক্যাম কোণ কমে যায় এবং সি. বি. বিন্দুর ফাঁক কমে গেলে ক্যাম কোণ বেড়ে যায়। ক্যাম বা ডুয়েল কোণ সরাসরি ক্যাম বা ডুয়েল মিটার দ্বারা পরিমাপ করা যায় ।
আরও দেখুনঃ
- ট্যাপেট ক্লিয়ারেন্স
- বিভিন্ন যন্ত্রের ধাতুর পরিচয়
- ভালভ টাইমিং
- ট্যাপেট ক্লিয়ারেন্স
- মোটর গাড়ীর বিভিন্ন পদ্ধতি
- মোটরগাড়ি শিল্প