পেট্রোল জ্বালানি ব্যবস্থা – এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “পেট্রোল জ্বালানি ব্যবস্থা” অধ্যায়ের একটি পাঠ।
পেট্রোল জ্বালানি ব্যবস্থা
কারবুরেশন (Carburation):
পেট্রোল ইঞ্জিনে (এস. আই ইঞ্জিনে) কারবুরেশন এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে বাতাসের সাথে জ্বালানিকে (পেট্রোল) ইঞ্জিনের ভার এবং বেগের চাহিদা অনুসারে মিশ্রিত করে সিলিন্ডারে প্রেরণ করা হয় তাকেই কারবুরেশন বলে। এই কারবুরেশন ব্যবস্থা কারবুরেটরের মধ্যে সুসম্পন্ন হয়। বাতাস—জ্বালানি মিশ্রণ (air fuel mixture) সাধারণত তিন প্রকার ।
(ক) লিন মিশ্রণ (Lean mixture) : এই মিশ্রণ ইঞ্জিনের জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়। মিশ্রণ বেশী লিন হলে ইঞ্জিন চালু হবে না এবং চালু অবস্থায় লিন হলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে। লিন মিশ্রণে বাতাস এবং জ্বালানির অনুপাত ১৬ : ১ হতে ২০ : ১।
(খ) উপযোগী মিশ্রণ (Proper mixture) : সুন্দর ও মসৃণ গাড়ী চালানোর জন্য এবং মিতব্যয়িতার জন্য এই প্রকার মিশ্রণের একান্ত প্রয়োজন। কারবুরেটরের সব যন্ত্রাংশ সঠিক থাকলে এবং রাস্তার অবস্থা ভাল থাকলে ২০ হতে ৪০ মাইল বেগে গাড়ী চালনাকালে উপযোগী মিশ্রণ পাওয়া যায়। এই মিশ্রণে বাতাসের সাথে জ্বালানির অনুপাত ১২ : ১ হতে ১৫ : ১।
(গ) সমৃদ্ধ মিশ্রণ (Rich mixture) : গাড়ীতে এই মিশ্রণ সবসময় প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনে এই মিশ্রণ কাজে লাগানো হয়। গাড়ী চালু করার সময়, দ্রুত বেগে চালানোর সময়, বেশী বোঝা বহনের সময়, গাড়ী পাহাড়িয়া এলাকায় চলাচলের সময়, ব্রীজে ওঠার সময় এবং গর্ত বা খাদে পড়ে গেলে সেখান থেকে তোলার সময় গাড়ীতে সমৃদ্ধ মিশ্রণ প্রয়োজন হয়। এই মিশ্রণে বাতাস ও তেলের অনুপাত ৫ : ১ হতে ৮ : ১।
ইঞ্জিনে মিশ্রণের প্রয়োজন : বিভিন্ন গতিতে এবং অবস্থায় ইঞ্জিনে বিভিন্ন অনুপাতের মিশ্রণ (air fuel mixture) প্রয়োজন হয়। ইঞ্জিনের এই প্রয়োজনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন :
(ক) বোঝা ছাড়া বা কম বোঝা অবস্থা, (খ) মধ্যম গতিতে ব্যয় সঙ্কোচ, (গ) উচ্চ গতিতে এবং বেশী বোঝা অবস্থায়।
(ক) বোঝা ছাড়া বা কম বোঝা অবস্থা (Idling & low load) :
আইডেলিং হচ্ছে যখন ইঞ্জিনের উপর কোন লোড বা বোঝা নেই। যেমন একটি ইঞ্জিন একই জায়গায় দাঁড়িয়ে করছে না। লো-লোড হচ্ছে ইঞ্জিন চালু অবস্থায় গাড়ীটি আস্তে আজে বা -তে চলছে অথবা গাড়িটিতে কম ওজনের বোঝা আছে। ইঞ্জিন প্রথমে চালু করতে সমৃদ্ধ মিশ্রণের প্রয়োজন হয়। কারণ একটি অচল যন্ত্রকে সচল করতে প্রথমে কিছুটা বেশী শক্তির অর্থাৎ সমৃদ্ধ মিশ্রণের প্রয়োজন হয় এবং চালু করার সময় কারবুরেটরের থ্রোটল ভাল্ভ বন্ধ থাকে।
১০.১ চিত্রে A দ্বারা চালুকরণ অবস্থা দেখানো হয়েছে। চালু করার পর মিশ্রণ আস্তে আস্তে লিন হয়ে যায়। এটি AB রেখা (line) দেখানো হয়েছে। এই রেখা দ্বারা আইডেলিং হতে ২৫ মাইল দ্রুতি পর্যন্ত বাতাস-জ্বালানি মিশ্রণের অবস্থা দেখানো হয়েছে। বোঝাবিহীন অবস্থার থ্রোটল ভাল্ভ ২৫% খোলে।
(খ) মধ্যম গতিতে ব্যয়সঙ্কোচ (Economy range with medium loads) :
এই অবস্থা চিত্রে BC রেখা দ্বারা দেখানো হয়েছে। এই অবস্থায় গাড়ী চালালে সবচেয়ে বেশী লাভবান হওয়া যায়। এইজন্য একে ইকনোমি রেঞ্জ বলে। এই গতিতে বাতাস জ্বালানি ১৫ : ১ অনুপাতে মিশ্রিত হয়। এই অবস্থায় থ্রোটল ভাল্ভ ৬৯৮% খুলে যায়। এই অবস্থায় ছোট ছোট ইঞ্জিন, যেমন ভেসপা, হোন্ডা ইত্যাদি দ্বারা বেশী ব্যয়সঙ্কোচ করা সম্ভব। রাস্তা ভাল থাকলে, কার্বুরেটরের জেটসমূহ ভাল থাকলে, স্পার্ক অগ্রিম (advance) ভাল থাকলে, সি. বি. বিন্দু এবং স্পার্ক প্লাগের ফাঁক সঠিক থাকলে ৪ বা ৬ সিলিন্ডার ইঞ্জিনেও প্রায় ৬০% খরচ কমানো সম্ভব হয়।
(গ) উচ্চ গতিতে এবং বেশী বোঝা অবস্থায় (Power range with full load) :
১০.১ (খ) চিত্রে CB দ্বারা উচ্চ গতিতে এবং বেশী বোঝা অবস্থায় থ্রোটল ভালভের অবস্থা এবং বাতাস-জ্বালানির অনুপাত দেখানো হয়েছে। এই অবস্থায় ইঞ্জিনের সমৃদ্ধ মিশ্রণ (rich mitxure) দরকার হয়। কারণ এই অবস্থায় ইঞ্জিন উচ্চ গতিতে চলে এবং বেশী বোঝা বহন করে।
উচ্চ গতিতে চলার জন্য ইঞ্জিন বেশী গরম হয় এবং বেশী বোঝা বহন করার জন্যেও বেশী গরম হয়। ফলে ইঞ্জিনের ক্ষতিও বেশী হয়। রাস্তার সঙ্গে টায়ারের ঘর্ষণ বেড়ে যায় এবং বাতাসের চাপও বৃদ্ধি পায়। এসব বাধা অতিক্রম করে গাড়ীটিকে উচ্চ গতি এবং বেশী বোঝা বহন করার জন্যে বেশী পরিমাণে জ্বালানি পোড়াতে হয়। এই অবস্থায় থ্রোটল ‘ভাল্ভ প্রায় ৯৮% খুলে যায়। জ্বালানি কারবুরেশন, ব্যবস্থা (Fuel carburation system) : পেট্রোল ইঞ্জিনের (S. I. engine) জ্বালানি ব্যবস্থার প্রধান অংশসমূহের নাম নিম্নে দেয়া হলো।
(১) জ্বালানি ট্যাঙ্ক (fuel tank), (২) জ্বালানি রেখা (fuel line), (৩) জ্বালানি ছাঁকনি (fuel filter), (৪) এ. সি. পাম্প (A. C. pamp), (৫) এ. সি. চেক ভাল্ভ (A. C. check valve), (৬) ডায়াফ্রাম (diaphragm), (৭) ডায়াফ্রাম স্প্রিং (diaphragm spring), (৮) পুল এন্ড পুশ রড (pull and push rod), (৯) এ. সি. পাম্প রকার বাহু (A. C. pump rocker arm),
(১০) ইনটেক পোর্ট (intake port ), (১১) আউট লেট পোর্ট ( out let port), (১২) কারবুরেটর (carburator), (১৩) নিড়ল ভাল্ভ (needle valve), (১৪) ফ্লোট চেম্বার (float chamber), (১৫) ফ্লোট (float), (১৬) মেইন জেট (main jet), (১৭) চোক ভাল্ভ (chock valve), (১৮) থ্রোটল ভাল্ভ (throttle valve), (১৯) ভেনচুরী (venturi), (২০) এয়ার ক্লিনার (air cleaner) এবং (১২) ইনটেক মেনিফোল্ড (intake manifold)।
পেট্রোল ইঞ্জিনের জ্বালানি ব্যবস্থা অর্থাৎ ট্যাঙ্ক থেকে ইঞ্জিন সিলিন্ডার পর্যন্ত পেট্রোল বা জ্বালানি কি-কি ইউনিট হয়ে যায় তা ১০.১ (ঘ) চিত্রে দেখানো হয়েছে। এ. সি. পাম্প এবং ফ্লোট বর্তনীর কার্যপ্রণালী ২য় অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে।
কার্বুরেটর (carburator):
কার্বুরেটর এমন একটি যান্ত্রিক কৌশল ( device) যেখানে বাতাস এবং পেট্রোল ভালভাবে মিশ্রিত হয়ে ইঞ্জিনের চাহিদা অনুসারে সিলিন্ডারে চার্জ প্রেরণ করে। কার্বুরেটরকে মুলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন :
- (১) আপ ড্রাফ্ট (up draft carburator)
- (২) ডাউন ড্রাফট (down draft carburator)
(১) আপ ড্রাফট কার্বুরেটর :
আপ ড্রাফট কার্বুরেটরে থ্রোটল ভাল্ভ থাকে উপরের দিকে এবং চোক ভাল্ভ থাকে নীচের দিকে। ফলে বাতাসের প্রবাহ থাকে নীচের দিক হতে উপরের দিকে। এই বাতাস যাওয়ার সময় মেইন জেট হতে জ্বালানি নিয়ে থ্রোটল ভাল্ভ হয়ে সিলিন্ডারে যায়। এই জাতীয় কারবুরেটরের গঠনপ্রণালী এমন যে এতে বাতাস এবং তেলের সংমিশ্রণ প্রক্রিয়া তেমন ভাল নয়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এই জাতীয় কারবুরেটরে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়। তাই বর্তমানে আপ ড্রাফট কার্বুরেটর ব্যবহার করা হয় না।
(২) ডাউন ড্রাফট (Down draft) কারবুরেটর :
বর্তমানে যেসব কার্বুরেটর ব্যবহার করা হয় তা সবাই ডাউন ড্রাফট কার্বুরেটরের অন্তর্ভুক্ত। এই কার্বুরেটরে থ্রোটল ভাল্ভ নীচের দিকে অবস্থিত এবং চোক ভাল্ভ উপরের দিকে অবস্থিত। এই জাতীয় কার্বুরেটরের গঠনপ্রণালী এবং মিশ্রণ প্রক্রিয়া সুন্দর ও কার্যকরী বলে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই জাতীয় কার্বুরেটরে বাতাস উপরের দিক হতে আসে এবং ভেনচুরীতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রেসার কমে যায়। কিন্তু গতিবেগ বৃদ্ধি পায়।
ফলে মেইন জেট হতে জ্বালানি খুব সূক্ষ্ম কণায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে বের হয়ে আসে এবং গতিশীল বাতাসের সাথে সূক্ষ্ম হতে সূক্ষ্মতর কণার আকারে মিশ্রিত হয়ে চার্জ তৈরী করে। এই চার্জ ভেনচুরী হতে মিশ্রিত হতে শুরু করে এবং সিলিন্ডারে প্রবেশ করে প্রজ্বলিত হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বাতাসের সাথে মিশে। ফলে চার্জ গুণগত দিক দিয়ে খুবই উৎকর্ষতা লাভ করে বিধায় ইঞ্জিনের দহন কার্য খুবই সন্তোষজনক হয়ে থাকে। এই কার্বুরেটরের বিশদ কার্যক্রম, গঠন এবং মেরামত ইত্যাদির বিবরণ পরে বর্ণনা করা হবে।
উপরোক্ত দুইটি পদ্ধতি ছাড়াও কার্বুরেটরকে আরও কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন :
(১) ডুয়েল ফুয়েল কার্বুরেটর, (২) ইকনোমাইজার পদ্ধতি, (৩) থ্রোটল ওপেনিং ইকনোমাইজার পদ্ধতি, (৪) ভ্যাকিউয়াম ইকনোমাইজার পদ্ধতি, (৫) কারটার কার্বুরেটর, (৯) সোলেক্স কার্বুরেটর, (১০) এইট-সিলিন্ডার কার্বুরেটর, (১১) এস. ইউ কার্বুরেটর এবং (৬) ফোর্ড কার্বুরেটর, (৭) ফোর ব্যারেল কার্বুরেটর, (৮) টু-ব্যারেল কার্বুরেটর, (১২) জেনিথ কার্বুরেটর।
কার্বুরেটর ছয়টি বর্তনীর (circuit) সাহায্যে তার কার্য সমাধা করে থাকে। যেমন : (১) আইডেলিং এবং লো স্পীড সার্কিট (idling and law speed circuit), (২) হাই স্পীড পার্ট লোড সার্কিট (high speed circuit), (৩) হাই স্পীড ফুল লোড সার্কিট (high speed full load circuit), (৪) অ্যাকসেলারেটিং পাম্প সার্কিট (accelerating pump circuit) (৫) ফ্লোট সার্কিট (float circuit), (৬) চোক সার্কিট (chock circuit)। উপরোক্ত বর্তনীসমূহ (circuits) কখন কিভাবে কাজ করে নিম্নে তার বর্ণনা দেওয়া হলো।
(১) ফ্লোট সার্কিট :
এই সার্কিটের কার্যপ্রণালী দ্বিতীয় অধ্যায়ে ২.৫ চিত্রের সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে।
(২) আইডেলিং এবং লো স্পীড সার্কিট :
১০.২ চিত্রে এই সার্কিটের গঠন এবং কার্যপ্রণালী দেখানো হয়েছে। ইঞ্জিন যখন চালু হয়ে একই স্থানে অবস্থান করে চলতে থাকে তখন এই সার্কিট কার্যসম্পন্ন করে। এই সার্কিট যখন কাজ করে তখন থ্রোটল ভালভ বন্ধ থাকে বিধায় বাতাস ও জ্বালানি মিশ্রণ আইডেলিং এবং লো স্পীড সার্কিট দিয়ে প্রবাহিত হয়। আইডেলিং স্ক্রু-এর সাহায্যে এই পোর্ট নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। আইডেলিং এবং লো স্পীড সার্কিট সমন্বয় করার নিয়ম নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
…আইডেলিং স্ক্রুটিকে স্ক্রু ড্রাইভার দ্বারা প্রথমে খুব সাধারণ চাপে আঁটাতে হয়। তারপর আড়াই থ্রেড খুলে দিতে হবে। এমতাবস্থায় ইঞ্জিন চালু করে দেখতে হবে ইঞ্জিনের শব্দ এবং বেগ কিরূপ এবং ঝাঁকুনি আছে কিনা। যদি ইঞ্জিন ঝাঁকুনি দেয় এবং কাঁপতে কাঁপতে যায় বা যেতে চায় তাহলে আইডেলিং স্কুটি আর একটু খুলে দিতে হবে। এতে যদি দেখা যায় ইঞ্জিনের শব্দ নিয়মমাফিক হচ্ছে এবং ইঞ্জিন কাঁপতে কাঁপতে বন্ধ হচ্ছে না তাহলে বুঝতে হবে আইডেলিং সমন্বয় সঠিক হয়েছে।
আইডেলিং স্ক্রুটিকে একটু ডানে বামে ঘুরিয়ে সমন্বয় করতে হয়। এই ত্রুটিকে যত থ্রেড খুললে বা কমালে ইঞ্জিন সঠিকভাবে চলে সেভাবেই খুলতে হয়। এই সমন্বয় করার দ্রুততর ক্যাবল খুব সাধারণভাবে রাখতে হয় (ক্যাবল টান রাখতে হয় না)। এই সময় আর. পি. এম ১৫০/২০০ রাখতে হয়।
(৩) হাইস্পীড পার্ট লোড সার্কিট :
একটি গাড়ী যখন দাঁড়ানো অবস্থা হতে চলতে শুরু করে তখন গাড়ীর উপর বোঝা এবং বেগ বেশী হয়। এজন্য সমৃদ্ধ মিশ্রণের প্রয়োজন হয়। এ সময় ভাল্ভ আংশিক খুলে যায় এবং বাতাস জ্বালানি মিশ্রণ তখন থ্রোটল ভাল্ভ হয়ে সিলিন্ডারে যায়। এ সময় আইডেলিং এবং লো স্পীড সার্কিট বন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু থ্রোটল ভাল্ভ খোলা সেজন্য ভেনচুরীতে ভ্যাকিউয়ামের সৃষ্টি হয়। এর ফলে মেইন জেট হতে পেট্রোল আসে।
(৪) হাইস্পীড ফুল লোড সার্কিট :
এটি সবচেয়ে উচ্চ গতিসম্পন্ন শক্তিশালী সার্কিট। এই সার্কিট যখন কাজ করে তখন থ্রোটল ভাল্ভ পূর্ণমাত্রায় খুলে যায়।
১০.৩ চিত্রে এই সার্কিটের গঠন ও কার্যক্রম দেখানো হয়েছে। থ্রোটল ভাল্ভ পূর্ণমাত্রায় খোলা থাকে বিধায় পূর্ণ ভেনচুরীর ক্রিয়া হয়। ফলে মেইন জেট দ্বারা পূর্ণমাত্রায় পেট্রোল আসে। থ্রোটল ভাভের সংযোগ অ্যাকসেলারেটর প্যাডেলের সঙ্গে থাকে। আইডেলিং ও লো স্পীড ছাড়া অন্য সব সার্কিটে গাড়ী চালনা করার সময় এই প্যাডেলে চাপ রেখে থ্রোটল ভাল্ভ স্পীড অনুসারে কম বা বেশী খুলে দিতে হয়। পেট্রোল ইঞ্জিনের বোঝা এবং বেগ নিয়ন্ত্রণ করা হয় থ্রোটল ভাল্ভ দ্বারা। থ্রোটল ভাল্ভ সংযোগের সাথেই অ্যাকসেলারেটিং পাম্প সার্কিটের সংযোগ যুক্ত থাকে ।
(৫) অ্যাকসেলারেটিং পাম্প সার্কিট :
এই সার্কিট সবসময় কাজ করে না। যখন ড্রাইভার প্রয়োজন মনে করে অথবা ইঞ্জিনের বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়। ইঞ্জিনকে সহসা গরম করা বা গতিশীল করা বা উচ্চ শক্তি প্রদান করার জন্য এই সার্কিট ব্যবহার করা হয়। সাধারণভাবে অর্থাৎ আস্তে আস্তে অ্যাকসেলারেটিং প্যাডেলের উপর চাপ দিলে এই সার্কিট তখন কাজ করে না ৷
কিন্তু অ্যাকসেলারেটিং প্যাডেলের উপর যদি আচমকাভাবে এবং ছোট ছোট স্ট্রোকে বার বার চাপ দেওয়া যায় তবে এই সার্কিট কাজ করে। অর্থাৎ ইঞ্জিনে সমৃদ্ধ মিশ্রণ সরবরাহ করে। এই সার্কিট তার নিজস্ব পথে কার্বুরেটরে জ্বালানি সরবরাহ করে।
(৬) ) চোক সার্কিট :
চোক সার্কিটের প্রধান কাজ হচ্ছে বাতাস কমবেশী করা। চোক সাধারণত দুই প্রকার। যেমন : (১) যান্ত্রিক (mechanical choke) এবং (২) স্বয়ংক্রিয় চোক (automatic choke) । যান্ত্রিক ঢোক ড্রাইভার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। স্বয়ংক্রিয় ঢোক ইনটেক মেনিফোল্ডের, ভ্যাকিউয়াম অথবা একজস্ট গ্যাস অথবা তড়িৎ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বর্তমানে প্রায় সকল গাড়ীতে স্বয়ংক্রিয় চোক ব্যবহার করা হয়। এই চোক ইঞ্জিনের চাহিদা অনুসারে কমবেশী বাতাস সিলিন্ডারে সরবরাহ করে। ১০.৫ চিত্রে একটি স্বয়ংক্রিয় চোকের গঠন ও কার্যপ্রণালী দেখানো হয়েছে।
আরও দেখুনঃ
- লুবরিকেটিং পাম্পের বিভিন্ন অংশের নাম | মোটর গাড়ীর বিভিন্ন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- মোটর গাড়ীর লুবরিকেটিং পদ্ধতি | মোটর গাড়ীর বিভিন্ন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- মোটর গাড়ীর বিভিন্ন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- বিশেষ বিশেষ ধাতুর পরিচয় | তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- ট্যাপেট ক্লিয়ারেন্স | তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- মোটরগাড়ি শিল্প