জ্বালানির ক্ষণস্থায়ী প্রজ্বলন বিন্দু বা জ্বালানির ফ্লাশ পয়েন্ট নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিভাগ এর “ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস” বিষয়ের একটি পাঠ। তরল জ্বালানি তেলে আস্তে আস্তে তাপ প্রদান করলে, সর্বনিম্ন যে তাপমাত্রায় তেলের উপরে একটি হাল্কা দাহ্য গ্যাস বা বাষ্পের সৃষ্টি হয় সেই অবস্থায় যদি একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা উহা সন্নিকটে আনা হয় তবে দপ করে জ্বলে উঠবে। কিন্তু একটু দূরে সরিয়ে নিলেই নিভে যাবে। বিভিন্ন তেলের ফ্লাশ পয়েন্ট তত বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যে তেল যত বেশী উন্নতমানের তার ফ্লাশ -পয়েন্ট তত কম।
ক্ষণস্থায়ী প্রজ্বলন বিন্দু বা ফ্লাশ পয়েন্ট
ফ্ল্যাশ পয়েন্ট যন্ত্রের সাহায্যে এই পরীক্ষা করা যায়। দাহ্য -গ্যাস বা বাষ্পের সন্নিকটে অগ্নিশিখার দূরত্ব বিভিন্ন যন্ত্রে বিভিন্ন রকম রাখা হয়। তবে সাধারণত ঐ দূরত্ব ১ হতে ৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে রাখা হয়। বার্থ থার্মোমিটারের সাহায্যে তাপমাত্রা নির্ণয় করা হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য ফ্লাশ -পয়েন্ট জানা দরকার। ইহা দ্বারা অগ্নিশিখার প্রকৃতিও জানা যায়। কেরোসিন তেলের ফ্লাশ -পয়েন্ট সাধারণত ১০০° ফাঃ হতে ১৬০° ফাঃ। তবে বেশিরভাগ তেলের ফ্ল্যাশ পয়েন্ট ১৫০ ফাঃ হতে ৩০০ ফাঃ এর মধ্যে। লুব অয়েলের ফ্ল্যাশ পয়েন্ট ৩৪০° ফাঃ হতে ৪৫০ ফাঃ হয়ে থাকে।
ফ্লাশ পয়েন্ট নির্ণয় পদ্ধতি :
ফ্লাশ পয়েন্ট নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত পেনস্কাই মারটিন যন্ত্রের গঠন ও কর্মপদ্ধতি চিত্রের সাহায্যে দেখানো হয়েছে। অয়েল কাপে ৭৫ মিলিমিটার পরিমাণ নমুনা তেল নেওয়া হয়। এখানে লক্ষ্য রাখা দরকার, নমুনা তেলে যেন কাপের উপরের দাগ পর্যন্ত পূর্ণ হয়।
এই সময় বার্থ থার্মোমিটারটি চিত্রানুসারে কাপের মধ্যে স্থাপন করা হয়। এমতাবস্থায় ইগনিশন বার্নার চালু করতে হয়। এর ছিদ্রমুখের ব্যাসার্ধ হচ্ছে ৩.৯ মিলিমিটার। কাপটিতে বুনসেন বার্নার বা বৈদ্যুতিক হিটারের সাহায্যে প্রতি মিনিটে ৯° ফাঃ হতে ১১° ফাঃ তাপমাত্রায় তাপ দিতে হয়।
নাড়ানো—যন্ত্রের সাহায্যে কাপের নমুনা তেল প্রতিনিয়ত নেড়ে দিতে হয়। প্রতি মিনিটে অন্ততঃ ৬০ বার নাড়তে হয়। নাড়ানো কম হলে তেলের সকল অংশ সমভাবে উত্তপ্ত হবে না। ফলে পরীক্ষাটি সঠিক হবে না। ইগনিশন বার্নারের সাহায্যে অগ্নিপ্রজ্বলন প্রথমে ৩০° ফারেনহাইটে শুরু করে প্রতি ৫° ফাঃ তাপমাত্রা বৃদ্ধির পর পর বা অর্ধমিনিট পরপর প্রজ্বলন প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হয়। যে তাপমাত্রায় তেলের দাহ্য গ্যাস বা বাষ্প জ্বলে উঠে সেই তাপমাত্রাই হচ্ছে ঐ নমুনা তেলের ফ্লাশ -পয়েন্ট।
অগ্নিবিন্দু (Fire Point) :
তরল জ্বালানি তেল উত্তপ্ত করলে তেলের উপরিভাগে এমন একটি দাহ্য গ্যাস সৃষ্টি হয় যার সংস্পর্শে অগ্নিশিখা আনলে এমনিতেই অগ্নি প্রজ্বলিত হয় এবং তা জ্বলতেই থাকে। বিভিন্ন তেলের অগ্নিবিন্দু বিভিন্ন তাপমাত্রায় হয়ে থাকে।
আরও দেখুনঃ
- ছোট বড় গোলাকার ছিদ্রের জন্য ড্রিলের ব্যবহার | অটোমোবিল- ইঞ্জিনিয়ারিং
- ধাতুনির্মিত পদার্থ কাটার জন্য হ্যাক-স এর ব্যবহার | অটোমোবিল -ইঞ্জিনিয়ারিং
- স্ক্রেপারের ধরন | অটোমোবিল- ইঞ্জিনিয়ারিং
- ফাইলিং করার জন্য ভাইস এর ব্যবহার | অটোমোবিল- ইঞ্জিনিয়ারিং
- যন্ত্রাংশে রূপ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত ফাইল | অটোমোবিল- ইঞ্জিনিয়ারিং
- মোটরগাড়ি শিল্প
3 thoughts on “জ্বালানির ক্ষণস্থায়ী প্রজ্বলন বিন্দু বা জ্বালানির ফ্লাশ পয়েন্ট”