আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হুইল অ্যালাইনমেন্ট কৌশল
হুইল অ্যালাইনমেন্ট কৌশল
গাড়ির সামনের চাকা দুটির টো ইন ও টো আউট নিরসন এবং সামন ও পিছনের একই দিকের চাকাদ্বয়ের অবস্থান প্যারালালে সেট করাকে হুইল অ্যালাইনমেন্ট বলা হয়। কোনো কারণে অ্যালাইনমেন্ট নষ্ট হলে কম্পিউটার যুক্ত অ্যালাইনার এর সাহায্যে অ্যালাইনমেন্ট করতে হয়।
অসম হুইল অ্যালাইনমেন্টের ক্ষতি
১। টেনেটেনে চলা এবং জোর করে টানার জন্য মাত্রাতিরিক্ত টায়ার ক্ষয় হয় ।
২। গাড়ির সম্মুখ চাকাদ্বয়ের গতিপথ, বাহিরের দিকে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি করে ।
৩ । বল জয়েন্ট ও কিংপিন মাত্রাতিরিক্ত ক্ষয় করে ।
৪ । হুইল বিয়ারিং মাত্রাতিরিক্ত ক্ষয় করে ।
৫। অসম কেম্বারের জন্য স্টিয়ারিং একপাশে টানে ।
৬ । চাকার একপাশ বেশি ক্ষয় করে । ৭ । স্টিয়ারিং কে একদিকে টানে ।
৮ । কিংপিন/বল জয়েন্টের ক্ষতি বৃদ্ধি করে ।
৯। এটা গাড়িকে একদিকে টানে ।
১০ । মাত্রাতিরিক্ত কাস্টার হার্ড স্টিয়ারিংয়ের একটি প্রধান কারণ ।
১১ । অতিরিক্ত কাস্টার রাস্তার ধাক্কা ও ঝাঁকুনি দুটিই বৃদ্ধি করে ।
১২ । আবর্তনে টায়ার স্লিপ করে ।
১৩ । টায়ার স্কোয়ালিং করে ।
হুইল ব্যালেন্সিং-এর উপকারিতা
১। এটা সম্মুখের চাকাদ্বয়কে সোজাও সমান্তরাল চলার নিশ্চয়তা
২। এটা স্টিয়ারিং নিয়ন্ত্রণের স্থিতিশীলতা দেয় ।
৩ । এটা ঢাকার অতিরিক্ত ক্ষয় ও সাইস স্লিপেজ প্রতিরোধ করে ।
৪ । এটা টায়ারের ঐ স্থানকে রাস্তার সংস্পর্শে আনে, যে স্থানে সর্বাধিক লোড পড়ে ।
৫ । এটা গাড়ির ইনার হুইল বিয়ারিং এবং স্পিন্ডলের ভার বহন করা সত্ত্বেও স্টিয়ারিংকে সহজ রাখে ।
৬ । এটা টায়ারের অতিরিক্ত ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
৭ । এটা অতিরিক্ত কেম্বার অ্যাঙ্গেলের প্রয়োজনীয়তা রোধ করে ।
৮ । এটা চাকার আবর্তনের জন্য একটি পিভন্ট পয়েন্টের সুবিধা প্রদান করে ।
৯। এটাও স্টিয়ারিংয়ের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করে ।
১০ । এটা সোজা রাস্তায়/আবর্তনের পর সোজা অবস্থায় সম্মুখ চাকাকে লীড পয়েন্ট প্রদান করে ।
১১ । এটা রাস্তার ক্রাউন অবস্থায় গাড়ির ভারসাম্য রক্ষা করে ।
১২ । এটার একমাত্র ক্রিয়া হলো গাড়ি আবর্তনের সঠিক কেন্দ্রবিন্দু প্রদান করে ।
হুইল ব্যালেন্সিং পদ্ধতি
ওয়ার্কশপ ম্যানুয়েল/অটো ডাটার বইতে হুইল অ্যালাইনমেন্ট কোণগুলির পরিমাণ সংগ্রহ করা হয়ে থাকে । ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হলে কাস্টার ও কেম্বার অ্যাঙ্গেলায় অ্যাডজাস্ট করা যায় কিন্তু কেপিআই কখনও অ্যাডজাস্ট করা যায় না। সে ক্ষেত্রে কিং পিন বা বল ভরেন্ট পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে ।
-চিত্রে তীর চিহ্নিত স্থানে সীম যোগ/বিয়োগ করে কাস্টার ও কেম্বার অ্যাঙ্গেল অ্যাডজাস্ট করা যায় ।
– কোন কোন গাড়িতে ক্যাম আকৃতির কিছু কিছু ক্যাম বোল্ট ব্যবহৃত হয়। আপার ও লোয়ার কন্ট্রোল আর্মের সংযোগস্থলের এ ক্যাম বোস্টসমূহকে চিত্রের ন্যায় অগ্রপশ্চাৎ আবর্তন করে কাস্টার ও কেম্বার অ্যাঙ্গেলকে অ্যাডজাস্ট করা যায়।
-আবার ফ্রেমে অবস্থিত বিভিন্ন ধরনের খাঁজ ব্যবহারপূর্বক ইনার শ্যাফটের অবস্থান পরিবর্তন করে ও কাস্টার কেম্বার অ্যাঙ্গেল অ্যাডজাস্ট করা যায় ।
-গাড়িতেদে ও মডেল ভেদে এ অ্যাডজাস্টামন্টে পদ্ধতি ভিন্নতরও হতে পারে। সুতরাং প্রস্তুতকারকগণের নির্দেশনা অনুরণ পূর্বক অ্যাডজাস্ট করা শ্রেয়।
-যদি গাড়ি কাস্টার, কেম্বার, কেপিআই, টো-ইন/টো-আউট সঠিক থাকে তা হলে টো-আউট- অন টার্ণ অবশ্যই সঠিক পাওয়া যায়।
-টাই রড এন্ড আবর্তন করে ও লক করে টো-ইন ও টো- আউট অ্যাডজাস্ট করা হয়ে থাকে
চিত্র : কেম্বার অ্যাঙ্গেলঘরকে অ্যাডজাস্ট করা
ক্যাথার, ফাস্টার এবং কেপি আই নিরীক্ষণ কৌশল
নিম্নে ক্যাম্বার, কাস্টার ও কেপি আই পদ্ধতি/নিরীক্ষণ করার কৌশল ধারাবাহিক ভাবে বর্ণনা করা হলো:
প্রস্তুতি:
১। প্রত্যেকটি ঢাকাতে নির্দেশ মোতাবেক হাওয়া দিতে হবে।
২। হুইল বিয়ারিং এর ক্ষরের পরিমাণ নিরীক্ষা ও সংশোধন করতে হবে ।
৩। সম্মুখ চাকার সাসপেনশন সিস্টেমের কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
৪। স্টিয়ারিং লিংকেজের টিলার পরিমাপ নিরীক্ষণ করে প্রয়োজনে সংশোধন করতে হবে ।
৫ । বল জয়েন্টের ঢিলার পরিমাণ নিরীক্ষা করতে হবে।
৬। প্রয়োজনে ব্রেক স্যু অ্যাডজাস্ট করতে হবে ।
৭। এক সেট টার্নেল টেবিল সংগ্রহ করতে হবে।
৮। একটি ইউনিভার্সেল টাইপ স্টিয়ারিং গেজ/হুইল এলাইমেন্ট গেজ সংগ্রহ করতে হবে ।
৯ । টার্নেল টেবিলের সর্ব উচ্চতায় দুইখণ্ড কাঠের টুকরা নিতে হবে ।
১০ । সমতলে গাড়ির সম্মুখ চাকাদ্বয়কে টার্নেল টেবিলের উপর স্থাপন ।
১১। একটি ব্রেক প্রয়োগিক লিভার সংগ্রহ করতে হবে। ১২। কাঠের খণ্ড দুটির উপর পিছনের চাকা দুটি স্থাপন করতে হবে ।
১৩ । ব্রেক লিভার প্রয়োগ করে এবং সীটের সাথে তা আটকিয়ে গাড়িকে ব্রেক করতে হবে ।
কাস্টার এঙ্গেল ও কেপি আই পরিমাণ
১। চাকার রিমের সঙ্গে স্টিয়ারিং গেজকে উল্লম্বভাবে আটকাতে হবে ।
২। স্টিয়ারিং গেজের স্পিরিট লেভেলের বডিকে ঘুরিয়ে চাকার সঙ্গে সমান্তরাল অবস্থায় রাখতে হবে ।
৩। টার্নেবল টেবিলের লকপিন খুলতে হবে ।
৪ । দুই হাতে চাকাকে ধরে এবং চাকাকে নিজের দিকে টেনে ২০ ডিগ্রী ঘুরাতে হবে। স্পিরিট লেভেলের মাত্রা অ্যালাইন করতে হবে।
৫। ৬। কাস্টার ও কেপি আই স্কেলকে ০ ডিগ্রীতে সেট করতে হবে ।
৭ । চাকাকে আবার ঠেলে উঠাতে বিপরীত দিকে ২০ ডিগ্রী ঘুরাতে হবে ।
৮। এ ক্ষেত্রে ও পুনঃস্পিরিট লেভেলকে অ্যালাইন করতে হবে ।
৯। কেপি আই ও কাস্টার অ্যাঙ্গেলের স্কেল পড়ে এ বার ও অ্যাঙ্গেল দুটির পরিমাণ জানতে পারে ।
১০ । প্রয়োজনে কাস্টার অ্যাঙ্গেল অ্যাডজাস্ট করা যায় ।
ক্যাম্বার অ্যাঙ্গেল পরিমাপ
১। স্পিরিট লেভেলের বডিকে এ বার ৯০ ডিগ্রী আবর্তন করে চাকার সঙ্গে উল্লম্ব অবস্থায় রাখতে হবে ।
২। এ বার সরাসরি ক্যাম্বার অ্যাঙ্গেলের স্কেল হতে ক্যাম্বারের পরিমাণ অবগত হবে।
৩। কম/বেশি ক্ষেত্রে কোনো কোনো গাড়িতে এ অ্যাঙ্গেল অ্যাডজাস্ট করা যায়। সুতরাং সে সকল ক্ষেত্রে অ্যাডজাস্ট করবে ।
প্রশ্নমালা- ২১
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ক্যাস্টার অ্যাঙ্গেল কাকে বলে?
২. ক্যাম্বার অ্যাঙ্গেল কাকে বলে?
৩. কেপিআই কী?
৪. ইনক্লুডেড অ্যাঙ্গেল কাকে বলে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. অসম অ্যালাইনমেন্ট হুইলের প্রতিক্রিয়া বর্ণনা কর ।
২. টো-ইন, টো-আউট, ক্যাস্টার অ্যাঙ্গেল, ক্যাম্বার অ্যাঙ্গেল ও কেপিআই বর্ণনা কর ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. হুইল অ্যালাইনমেন্ট নিরাক্ষণের স্থানগুলো চিহ্নিত করার কৌশল বর্ণনা কর ।
২. ক্যাম্বার, ক্যাস্টার এবং কেআইপি নিরীক্ষণ করার কৌশল বর্ণনা কর ।
আরও দেখুন :