আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়- অটোমোটিভ কারবুরেশন
অটোমোটিভ কারবুরেশন Carburation
কারৱেশন (Carburation):
কারেশন এমন এক প্রক্রিয়া যাতে কার্বুরেটরের মধ্যে তরল জ্বালানি অটোমাইজেশন এ ভেপারাইজেশন অর্থাৎ বাদীর আকার ধারণ করে এয়ারের সঙ্গে ফুয়েন অনুপাতিকভাবে মিশ্রণ তৈরি করে। সুতরাং কার্বুরেটর কর্তৃক অটোমাইজড ও ডেগারাইজড পেট্রোলকে এয়ারের সাথে প্রয়োজনীয় ও দহনযোগ্য সংমিশ্ৰণ তৈরি করাকে এক কথায় কারেশন বলা হয়ে থাকে।
অন্যভাবে যদি বলা হয় তাহলে বলতে হবে। ‘কার্বুরেটরের’ কাজই হচ্ছে ‘কারেশন’ কার্বুরেটরের কালেশন প্রক্রিয়ার সঠিকতার উপর একদিকে যেমন জ্বালানি ও স্বাভাবিক থাকে, অন্যদিকে ইঞ্জিনকে তার চলার জন্য সময়ে যার্থ শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে
কার্বুরেটরের ভেনচুরি জিয়া ও প্রতিক্রিয়া (Ventury Action and Reaction of Carburetor)
কার্বুরেটরের বাতাস যখন একটি চাপা জায়গা বা স পথে বা ভেনচুরি পথে প্রবাহিত হয় সে সময় ভেনচুরিতে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যায় এবং চাপের পরিমাণ সে হারে কমে যায়। ফলে ফেচুরিকে একটি আংশিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এ শূন্যতাকে ফেচুরি ভ্যাকুয়াম বা হয়ে থাকে।
চিরে তিনটি পারদের পাত্রের সঙ্গে ভেনচুরি তার দুপাশের সঙ্গে সংযোগ প্রদান পূর্বক বাজা প্রবাহের মাধ্যম লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ভেনচুরির শোষণ এর পারন অন্য দুটি হতে অনেক উপরে উঠে এসেছে।এতে প্রমাণিত হয় যে, সমপরিমাণ বাতাস প্রবাহিত হলেও ভেনচুরিতে এ প্রবাহ গতি বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে সে স্থানে মেইন নজেল দিয়ে পাম্পের সাকশনের ন্যায় পেট্রোল উত্তোলিত হয়ে ভেনচুরিতে আসে।
কেনচুরিতে শূন্যতা থাকে বিধায় এ নিম্ন চাপের এলাকাতে ফুয়েল এসে, এটি অটোমাইজড ও ভেগারাইজড হয়ে পড়ে এবং প্রবাহিত এয়ারের সঙ্গে সংমিশ্রিত হয়ে এয়ার ফুয়েল মিকচার তৈরি করে। এভাবে এয়ার ফুয়েলের সংমিশ্রণ তৈরিকরণের প্রক্রিয়াকে ভেনচুরি প্রতিক্রিয়া বলে।এখানে লক্ষনীয় যে, চুরি প্রতিক্রিয়া জনিত কারণে নিচের কাজগুলো সম্পন্ন হয়ে থাকে-
১। ভেনচুরিতে বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পায় ও চাপ সে হারে কমে২। তেনচুরি অ্যাকুয়াম, ফ্লোট চেম্বার হতে পোট্রোলকে সাকশান পাম্পের ন্যায় ভেনচুরিতে টেনে নিয়ে আসে।
৩। কেচুরিতে আংশিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়, যা বাইরের বায়ুমণ্ডলীর চাপ থেকে মাত্রাতিরিক্ত কম।
৪। ভেনচুরি অ্যাকুয়াম এয়ার ছেলের সংমিশ্রণ তৈরি করে।
৫। ভেনচুরি অ্যাকুয়াম বা অন্যতায় পড়ে তরল পেট্রোল অণুতে বিভক্ত হয়ে বাষ্পীয় আকার ধারণ করে থাকে অটোমাইজেশন ও ডেগারাইজেশন বলা হয়।
৬। ইঞ্জিন পরিবেসে এ কেচুরি বিভিন্ন অনুপাতে এয়ার ফুয়েলের মিশ্রণ তৈরি করে।
এয়ার ফুয়েল রেশিও (Air-Fuel Ratio)
ইঞ্জিনের চলার প্রয়োজনে বাতাস ও ফুয়েলের আনুপাতিক হারে সংমিশ্রণ তৈরি করাকে এয়ার ফুয়েল রেশিও বলে কার্বুরেটর তার কেনচুরি প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট শূন্যতা দ্বারা এবং বিভিন্ন সার্কিটের সাহায্যে বিভিন্ন আনুপাতিক হারে এয়ার ফুয়েলের বাষ্পীয় সংমিশ্রণ তৈরি করতে দিয়ে যে হারে বাজাল এ ফুয়েলের পরিমাণ ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তাকে এয়ার ফুয়েল রেশিও বলা হয়ে থাকে।
যখন ইঞ্জিন আইডেলিং অর্থ দাড়িয়ে থেকে শুধুমাত্র ইঞ্জিন চলে এবং অ্যাক্সিলারেটরে পাদানির উপর কোনো চাপ প্রয়োগ করা হয় না, তখন ইঞ্জিনের গতিবেগ থাকে সাধারণত ৬০০ থেকে ৮০০ আরপিএম। এ অবস্থায় এয়ার ফুলের সংমিশ্রণের হার থাকে সাধারণত ১২:১ অর্থাৎ ১২ ভাগ বাতাসের সাথে ১ ভাগ ফুয়েল সংমিশ্রিত হয়ে থাকে বা ১২ কেজি বাতাসের সঙ্গে ১ কেজি ফুলে সংমিশ্রিতরার হার সংরক্ষণ করে সংমিশ্রণ তৈরি করাকে সংমিশ্রণের সাধারণ হার বলা হয়ে থাকে।
সংটিংয়ে অ্যাক্সিলানেশন ও ফুল-ছোটন যথাক্রমে বাতাস ও ফুয়েলের ১০১, ১০:১, ১১:১ হারে বাতাস ও ফুয়েলের সংমিশ্রণ তৈরি হয়ে সরবরাহ হয়ে থাকে, যাকে রিড মিক্সচার বলে। অর্থাৎ সাধারণ হার হতে যখন এয়ার ফুয়েল রেশিওরে বাতাসের হার কম হয়, তাকে রিচ মিকচার বলা হয়ে থাকে।
আবার পার্ট-থ্রোটল ও অ্যাক্সিলারেটিং অবস্থায় সাধারণত গাড়ি ১৩:১ হতে ১৫৪১ রেশিওতে এয়ার ফুয়েলকে সংমিশ্রিত করে গাড়িটি পরিচালনা করে। এ হারে এয়ার ফুয়েল সংমিশ্রণের রেশিওকে লিন মিকচার বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যখন স্বাভাবিক হার হতে এয়ার ফুয়েল সংমিশ্রণে বাতাসের হার বা ভাগ বেশি থাকে তাকে লিন মিকচার বলে।
প্রদত্ত রেখাচিত্রে ইঞ্জিনের প্রয়োজনে কখন কোন জাতীয় মিকচারের প্রয়োজন পড়ে তা দেখানো হলো।
১৬.৪ এয়ার ফুয়েল রেশিও-এর বিভিন্ন তারতম্যের প্রয়োজনীয়তা (Necessity of Different Afr Fuel Ratio): কখন এবং কেন বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন এয়ার- ফুয়েল রেশিও-এর প্রয়োজন পড়ে তা নিচে সংক্ষেপে বর্ণনা
করা হলো :
ক. স্টার্টিং অবস্থা এ অবস্থায় ইঞ্জিন ও কার্বুরেটর ঠাণ্ডা থাকে। তাই ইঞ্জিনকে দ্রুত স্টার্ট করার জন্য এবং তাড়াতাড়ি ইঞ্জিনকে ওয়ার্কিং তাপমাত্রায় আনার জন্য রিচ মিকচারের প্রয়োজন পড়ে। এ রিচ মিকচার তৈরি করার জন্য ঢোক ভালভ বন্ধ রাখতে হয়। এ অবস্থায় রিচ মিকচারের সংমিশ্রণের আনুপাতিক হার সাধারণত ৯১ হতে ১০১ হয়ে থাকে।
খ. অ্যাক্সিলারেশন হঠাৎ করে কোনো কোনো সময় ইঞ্জিনের গতি বৃদ্ধি করতে হলে বা কোনো চালু রাস্তার উপরে উঠতে হলে, ইঞ্জিনে লোড বেশি পড়ে। এ গতি ও লোড বৃদ্ধির জন্য হঠাৎ করে রিচ মিকচারের প্রয়োজন পড়ে অ্যাক্সিসিরেশন পাম্প দ্বারা ভেনচুরিতে এ অবস্থায় কিছু অতিরিক্ত ফুয়েল স্প্রে করে ফুয়েলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় আনুপাতিক এয়ার- ফুয়েল সংমিশ্রণের হার সাধারণত ১০:১ থেকে ১১৪১-এর মধ্যে থাকে।
গ. পার্ট প্রোটল ইঞ্জিন গাড়িতে তার গতিপথের অধিকাংশ সময়ে পার্ট প্রোটল অবস্থায় চলে থাকে। পার্ট প্রোটন অর্থ হচ্ছে থ্রোটল ভালভ বিভিন্ন আংশিক অবস্থায় খোলা রেখে ইঞ্জিনের গতি কম-বেশি করানো। এ অবস্থায় ইঞ্জিনের উপর হঠাৎ করে তেমন কোন লোড পড়ে না। স্বাভাবিক হারেই গতি বাড়ে বা কমে। এতে করে এ অবস্থায় ইঞ্জিনের জন্য দিন মিকচারের প্রয়োজন পড়ে। আর এ মিকচারে বাতাস ও ফুয়েলের সংমিশ্রণের আনুপাতিক হার হয়ে থাকে সাধারণত ১২৪১ হতে ১৫৪১।
ঘ. ফুলপ্রোল প্রোটন ভালভকে সম্পূর্ণ খুলে অ্যাক্সিলারেটর প্যাডেলে চাপ দিয়ে কার্বুরেটরের সম্পূর্ণ খুলে দেওয়া অবস্থাকে ফুল থ্রোটল অবস্থা বলা হয়ে থাকে। ইঞ্জিনের গতি বৃদ্ধি করে গাড়ি পরিচালনা করা হলে অর্থাৎ ৭০ হতে ১০০ কি.মি. গতিতে গাড়ি চালাতে অনেক ক্ষেত্রেই ফুল প্রোটল অবস্থানে কার্বুরেটরকে রাখতে হয়।
এ অবস্থায় খুব রিচ মিকচারের প্রয়োজন পড়ে। এ অবস্থায় এয়ার -ফুয়েল সংমিশ্রণের আনুপাতিক হার হয়ে থাকে সাধারণত ১২:১ হতে ১৩:১। গাড়িতে অনেক ক্ষেত্রে নিচু ও উপরে ওঠাতেও হঠাৎ করে ফুল প্রোটনের প্রয়োজন পড়ে।
প্রশ্নমালা – ১৬
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। কারেশন প্রক্রিয়া কাকে বলে?
২। এক কথায় কার্বুরেটরের কাজ কী?
৩। স্বাভাবিক সংমিশ্রণের আনুপাত কত?
৪। ভেনচুরি ভ্যাকুয়াম বলে?
৫। ভেনচুরিতে ফুয়েল কীভাবে প্রবেশ করে?
৬। এয়ার- ফুয়েল মিকচার কীভাবে তৈরি হয়
৭। কীভাবে ভেনচুরি ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি হয়।
৮। এয়ার -ফুয়েল রেশিও কাকে বলে?
৯। আইডেলিং স্পিডে ইঞ্জিনের আরপিএম কত?
১০। রিচ মিকচার কিভাব সরবরাহ করা হয়?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১। কারেশন বলতে কি বোঝায় ?
২। ইঞ্জিনের জ্বালানি খরচ স্বাভাবিক রাখার জন্য কীরূপ কারেশন প্রয়োজন?
৩। ভেনচুরি ভ্যাকুয়াম কেন সৃষ্টি হয় !
৪। ফুয়েলের অটোমাইজেশন কীভাবে সৃষ্টি হয়।
৫। আইডেলিং স্পিড ও ফুল থ্রোটল এয়ার- ফুয়েল রেশিও কত?
৬। স্টার্টিং অবস্থায় এয়ার- ফুয়েল রেশিও কীরূপ হয়?
৭। পার্ট থ্রোটল অবস্থায় এয়ার- ফুয়েলের রেশিও কীরূপ হয়?
৮। ফুল থ্রোটল অবস্থা বলতে কী বোঝায়?
৯। অ্যাক্সিলারেশন পাম্পের কাজ কী?
১০। ৭০ হতে ১০০ কি.মি. গতিতে গাড়ি চালাতে কার্বুরেটরকে কীরূপ অবস্থায় রাখতে হয়।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। কারেশন সম্পর্কে সংক্ষেপে বিবৃত কর।
২। কারেশন-এ ভেনচুরি প্রতিক্রিয়াজনিত কারণে কী কী কাজ সম্পন্ন হয়?
৩। এয়ার -ফুয়েল রেশিও সম্পর্কে যা জানো লেখ।
৪। এয়ার -ফুয়েল রেশিও-এর বিভিন্ন ভারতম্যের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর ।
আরও দেখুন :