প্রাকৃতিক গ্যাস

প্রাকৃতিক গ্যাস (Natural gas or fuel) নিয়ে আজকের আলোচনা। | এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস” বিষয়ক পাঠ।  সাধারণত ভূ-গর্ভের চাপে ও তাপে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সংমিশ্রণে ও ভৌগোলিক অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপত্তি হয়। এর প্রধান অনুপানগুলি হচ্ছে মিথেন, ইথেন, প্রোপেন এবং প্যারাফিনিক হাইড্রোকার্বন।

প্রাকৃতিক গ্যাস

প্রাকৃতিক গ্যাস

প্রাকৃতিক গ্যাস হতে তিন প্রকারে ঘনীভূত হাইড্রোকার্বনগুলি দূরীভূত করা যায়। যেমন:

(ক) শোষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে (By absorption)

(খ) সঙ্কোচনের মাধ্যমে (By compression system)

(গ) শীতলীকরণের মাধ্যমে (By cooling system)।

প্রাকৃতিক গ্যাসে কিছু অদাহ্য পদার্থ থাকে, যেমন— কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন এবং হিলিয়াম।

এইসব গ্যাস বিভিন্ন পরিমাণে থাকতে পারে। তবে সাধারণত ১০% এর নীচেই থাকে। প্রাকৃতিক গ্যাসে কিছু পরিমাণে হাইড্রোজেন সালফাইড থাকে। ইহা দাহ্য বস্তু হলেও গ্লাস এবং লৌহজাত পদার্থ শিল্পের জন্য ক্ষতিকারক। প্রাকৃতিক গ্যাসে প্রতি ঘনফুটে তাপমাত্রার তারতম্য ঘটতে পারে ১০০০ হতে ১৪০০ বি.টি.ইউ. । ইহা নির্ভর করে প্রকৃতি, চাপ, তাপ ও অবস্থানের উপর।

প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রধান উপাদান হচ্ছে মিথেন। এই গ্যাসে মিথেন শতকরা ৭০ হতে ৯৭ ভাগ বিদ্যমান। এই গ্যাস খনিতে পাওয়া যায় এবং পেট্রোলিয়াম খনিতেও পাওয়া যায়। খনিতে গ্যাস ফুরিয়ে গেলে পেট্রোল পাওয়ার খুবই সম্ভাবনা থাকে। আমাদের দেশে অনেকগুলি গ্যাস খনি পাওয়া গেছে। আশা করা যায় গ্যাস খনিগুলির গ্যাস শেষ হয়ে গেলে পেট্রোল পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে।

ইতোমধ্যে সিলেটের হরিপুরে অপরিশোধিত পেট্রোল পাওয়া গেছে। হরিপুরের অপরিশোধিত তেল বেশ উন্নতমানের। এই তেল আমাদের তেল শোধনাগারেই পরিশোধন করা যাবে। তেল উত্তোলনের সময় প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যাবে। 

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

 

আমাদের দেশে বহু স্থানে তেল ও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে যেসব স্থানে গ্যাস খনি আবিষ্কৃত হয়েছে তার একটি তালিকা দেওয়া হল। যেমন-

(ক) তিতাস

(খ) হবিগঞ্জ

(গ) বেগমগঞ্জ

(ঘ) ছাতক

(ঙ) কাস্তী

(চ) ফেনী

(ছ) বাখরাবাদ

(জ) হরিপুর

(ঝ) কুতুবদিয়া

(ঞ) রশিদপুর

(ট) বিয়ানী বাজার

(ঠ) কৈলাসটিলা। 

 

গ্যাস ক্ষেত্রে নাম                                                                       ব্যাবহার ক্ষেত্রের নাম

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

এছাড়া অন্যান্য গ্যাস ক্ষেত্রের উন্নয়ন কাজ চলছে। আশা করা যায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও গ্যাস খনি হতে গ্যাস জনগণের দ্বারা প্রান্তে পৌঁছবে এবং জীবনযাত্রা ও শিল্পায়নে দেশ আরও উন্নত হবে। ইতোমধ্যে গ্যাস ও এর উপজাত ব্যবহার করে প্রতি বছর ১০০০ হতে ১৫০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে। সুখের কথা যে সরকার জাতীয় গ্যাস গ্রীড লাইনের মাধ্যমে সারা দেশে বিশেষ করে বড় বড় শহরে গ্যাস সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। 

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

নিম্নলিখিত ছকের সাহায্যে বিভিন্ন প্রাকৃতিক গ্যাসের অনুপানগুলি শতকরা হিসাবে দেখানো হলঃ

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

গ্যাস দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন :

(ক) প্রাকৃতিক গ্যাস (Natural gas)

(খ) উৎপাদিত গ্যাস (Manufactured gas)

 

উৎপাদিত গ্যাসকে আবার আট ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন :

(ক) শোধনাগার তেল গ্যাস (Refinery oil gas)

(খ) উৎপাদনকারী গ্যাস (producer gas)

(গ) ব্লাস্ট ফারনেস গ্যাস (Blast Furnace gas)

(ঘ) ‘পানি গ্যাস (water gas)

(ঙ) কারবুরেটেড পানি গ্যাস (Carburated water gas)

(চ) তেল গ্যাস (Oil gas)

(ছ) কয়লা গ্যাস বা কোক ওভেন গ্যাস (Coal gas or coke oven gas)

(জ) নর্দমা গ্যাস (Sewarage gas)

 

(ক) শোধনাগার তেল গ্যাস :

এই গ্যাস তেল শোধনাগারের প্রদান উপজাত (By- product)। এই গ্যাসের প্রধান প্রধান উপাদান হচ্ছে মিথেন, ইথেন, ইথিলিন। এই গ্যাসের তাপমাত্রার পরিমাণ ১৪০০ হতে ১৭০০ বি.টি.ইউ (প্রতি ঘন ফুটে)। এই গ্যাস সাধারণত শোধনাগারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও মেশিনপত্র উত্তপ্তকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইহা ছাড়া এই গ্যাস গৃহস্থালি এবং বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ব্যবহার করা হয়। এই গ্যাস হাই অকটেন গ্যাসোলিন উৎপাদনের জন্য প্রধান কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

(খ) উৎপাদনকারী গ্যাস :

এই গ্যাস বহুকাল থেকেই শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই গ্যাস তৈরী করা হয় উত্তপ্ত জ্বালানির, নিচে সজোরে বাতাস প্রবাহিত করে। এজন্য এতে নাইট্রোজেন খুব বেশী থাকে এবং তাপমাত্রা কম থাকে। এই গ্যাসে তাপমাত্রার পরিমাণ কম বলে বেশী দূরত্বে স্থানান্তর করা যায় না। এজন্য যে কারখানায় এই গ্যাস ব্যবহার করা হয় সেই কারখানার খুব কাছাকাছি স্থানেই এই গ্যাস তৈরী করতে হয়। এই গ্যাস তৈরীর একটি নমুনা ১৬.৩৮ চিত্রে দেখানো হল।

গ্যাস তৈরীর কারখানাটি কয়েকটি অঞ্চল বা জোনে বিভক্ত যেমন : (ক) প্রতিক্রিয়াশীল অঞ্চল, (খ) সঙ্কোচনশীল’ অঞ্চল, (গ) পরিশোধনশীল অঞ্চল। এই কারখানায় জ্বালানি সরবরাহ করা হয় উপর দিক থেকে এবং বায়ু সরবরাহ করা হয় নিচের দিক থেকে। সরবরাহকৃত বায়ু কিছুটা উত্তপ্ত করে কারখানায় দেওয়া হয়। জ্বালানি প্রজ্বলনের ফলে যে ছাই উৎপন্ন হয় তা একটি বিশেষ ছাইদানিতে জমা হয় এবং পরে সেখান থেকে বের করে ফেলা হয়। কারখানায় গ্যাস উৎপন্ন হয়ে উপরের দিকে একটি বিশেষ পথে কর্মকাণ্ডে প্রবাহিত হয় যা চিত্রে দেখানো হয়েছে। এই গ্যাসের তাপমাত্রা প্রতি ঘনফুটে ১৪০ হতে ১৮০ বি.টি.ইউ।

 

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

(গ) ব্লাস্ট ফারনেস গ্যাস :

আকরিক লৌহ গলানোর জন্য ব্লাস্ট ফারনেসে কোক পোড়ানো হয়। এই কোক পোড়ানোর ফলে উপজাত হিসেবে যে গ্যাস পাওয়া যায় তাই ব্লাস্ট ফরানেস গ্যাস নামে পরিচিত। এর উৎপাদন প্রক্রিয়া অনেকটা উৎপাদনকারী গ্যাসের মত । এই গ্যাসের তাপমাত্রা কম বলে এই গ্যাস উৎপাদন কারখানার যথাসম্ভব কাছাকাছি ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। এর তাপমাত্রা সাধারণত প্রতি ঘনফুটে ৯০ বি.টি.ইউ। সাধারণত বয়লারের জ্বালানি হিসাবে, ফারনেসে সরবরাহকৃত ব্যয় উত্তপ্ত বল্লনের জন্য এবং অন্তর্দাহ ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসাবে ইহা ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

(ঘ) পানি গ্যাস (water gas) :

পানি গ্যাসের উৎপাদন প্রক্রিয়া অনেকটা উৎপাদনকারী (Producer gas) গ্যাস এর ন্যায়। পার্থক্য শুধু গরল জ্বালানিসমূহের ভিতর দিয়া বাষ্প প্রবাহিত করাতে হয়। কিন্তু বাষ্প যে একেবারেই প্রবাহিত করতে হয় না তা নয়, প্রয়োজনে সময় সময় বায়ু প্রবাহিত করতে হয়। প্রথমে জ্বালানি স্তরের মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত তাপমাত্রা পাওয়ার জন্য বায়ু প্রবাহিত করানো হয়। এরপর তাপমাত্রা কমানোর জন্য এবং বিক্রিয়া বন্ধ করার জন্য বাষ্প প্রবাহিত করানো হয়।

গ্যাস উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য এবং জ্বালানি স্তরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য পুনরায় পানি সরবরাহ করা হয়। কারণ এই গ্যাস মূল উপাদানগুলি হচ্ছে হাইড্রোজেন (42) এবং কার্বন মনো-অক্সাইড (CO)। এই গ্যাসের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শিখা নীল বর্ণের হয়। উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিভিন্নতার জন্য এই গ্যাসের তাপমাত্রার তারতম্য ঘটে। তবে সাধারণত প্রতি ঘনফুটে প্রায় ৩০০ বি.টি.ইউ তাপমাত্রা থাকে। এই গ্যাসের অনুপানগুলি নিম্নে ছকের সাহায্যে দেখানো হল।

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

এই গ্যাসের তাপমাত্রা কম বলে উৎপাদন কেন্দ্রের মধ্যেই কোন শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা শ্রেয়। এই গ্যাস অন্য গ্যাসের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায় ।

(ঙ) কারবুরেটেড পানি গ্যাস (Carburated water gas)

সাধারণত পানি গ্যাসের তাপমাত্রা কম। পাইপ লাইনের সাহায্যে দূরবর্তী স্থানে নেয়ার জন্য অবশ্যই এই গ্যাসের তাপমাত্রার পরিমাণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য পানি গ্যাস জেনারেটরটিকে আরও উত্তপ্ত করার জন্য জ্বালানি স্তরের মধ্য দিয়ে সজোরে বায়ু এবং পরে বাষ্প প্রবাহিত করানো হয়।

কারবুরেটিং প্রকোষ্ঠের মধ্যে জ্বালানির স্তর এবং চেকারব্রিক (Checker brick) উত্তপ্ত হওয়ার পর বাষ্প প্রবাহিত করানো হয় এবং কারবুরেটরে তেল ছিড়ানো (spray) হয়। পানি গ্যাস যখন কারবুরেটরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে তখন চেকারব্রিক—এর মাধ্যমে তেলের বাষ্প এসে পানি গ্যাসের সাথে মিশ্রিত হয়ে কারবুরেটেড পানি গ্যাস উৎপন্ন হয়। পানি গ্যাসের সাথে তেল মিশ্রণের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে এই গ্যাসের তাপমাত্রা উঠানামা করে। এই গ্যাসের তাপমাত্রা সাধারণত ৫৩০ বি.টি.ইউ প্রতি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যায়। গ্যাসের অনুপানগুলি নিম্নে ছকের সাহায্যে দেখানো

 

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

(চ) তেল গ্যাস (Oil gas) :

কারবুরেটেড পানি গ্যাস এবং তেল গ্যাস প্রায় একই ধরনের। তেল গ্যাসের তাপমাত্রা কিছুটা বেশী। একই ধরনের বিক্রিয়ার ফলে ঐ গ্যাসের সৃষ্টি হয়। পানি গ্যাস তৈরী এবং তেল ছিটানো একই সাথে একই সময় এবং একই কারখানায় সুসম্পন্ন হয়ে থাকে। কারখানায় কোন জ্বালানির স্তর থাকে না। এই কারখানার বায়ুপ্রবাহ উপর দিক এবং নিচের দিক থেকে দেওয়া হয়। কার্বন এবং লেম্পশ্লাক পুড়িয়ে চেকারব্রিক উত্তপ্ত করা হয়। গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে জ্বালানি তেল পুড়িয়ে কারখানায় অতিরিক্ত তাপ সরবরাহ করা হয়। গ্যাস উৎপাদনের সময় বার্নারের 

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

সাহায্যে তেল ও বাষ্প সরবরাহ করা হয়। ১৬.৩৯ চিত্রে এটি দেখানো হয়েছে। গ্যাস প্রস্তুতকালে তেল এবং বাষ্প উত্তপ্ত চেকারব্রিকের সংস্পর্শে আসে এবং একটি বিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এভাবে তেল গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই গ্যাসের তাপমাত্রার পরিমাণ সাধারণত ৫৪০ হতে ৫৭০ বি.টি.ইউ (প্রতি ঘন ফুটে)। এই গ্যাসের অনুপানগুলি শতকরা হিসাবে নিম্নে দেখানো হল।

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

(ছ) কয়লা গ্যাস বা কোকচুল্লী গ্যাস :

একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাথুরে কয়লা পোড়ানোর সময় বা কয়লা বিধ্বংসী পাতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোক প্রস্তুতকালে উপজাত হিসাবে যে গ্যাস পাওয়া যায় তাই কয়লা গ্যাস। এই গ্যাসের তাপমাত্রা সাধারণত ৬০০ বি.টি.ইউ (প্রতি ঘন ফুটে)। শহরে নানাবিধ কাজের জন্য এই গ্যাস প্রচুর পরিমাণে তৈরী করা হয়। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, কয়লা গ্যাস নিম্নলিখিত অনুপানগুলি বিদ্যমান ।

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

কয়লা বিধ্বংসী পাতন প্রক্রিয়া বা অঙ্গারীকরণ প্রক্রিয়ার (Destructive distillation or carbonaceous) সময় বায়ুশূন্য অবস্থায় কয়লা পোড়ানো হয়। এই গ্যাস ইস্পাত কারখানায় প্রভূত পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। ।

(জ) নর্দমা গ্যাস (Sewarage gas) :

একটি বিশেষ অবস্থায় শহরের নর্দমার পচা- গলা তলানি থেকে যে গ্যাস উৎপন্ন হয় সেটাই নর্দমা গ্যাস নামে পরিচিত। এই গ্যাসের ২/৩ অংশ হচ্ছে মিথেন এবং ১/৩ অংশ হচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইড। উন্নত দেশগুলিতে এই গ্যাসের ব্যবহার দেখা যায়। ভারতে এই জাতীয় গ্যাসের বহু প্রকল্প রয়েছে। আমাদের দেশেও এই · গ্যাসের প্রকল্প করার প্রচেষ্টা চলছে। এই গ্যাস বেশীরভাগ রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। নর্দমা গ্যাসের তাপমাত্রা প্রতি ঘনফুটে ৬৫০ বি.টি.ইউ

তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (Liqueified petroleum gas বা L.P.G) : ইহা হাইড্রোকার্বন সমৃদ্ধ হাল্কা জাতের জ্বালানি গ্যাস। এই গ্যাস প্রধানত তেল শোধনাগারে একটি প্রধান উপজাত গ্যাস। ইহা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকেও পাওয়া যায়। এই গ্যাসের প্রধান অনুপানগুলি হচ্ছে প্যারাফিনিক বা মিথেন সিরিজ-এর প্রোপেন, আইসোবুটেন, সাধারণ বুটেন ইত্যাদি।

আমাদের দেশেও এই গ্যাস উৎপন্ন হয় এবং প্রভূত পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে এবং চট্টগ্রামের তেল শোধনাগার থেকে বছরে লক্ষ লক্ষ লিটার এল.পি.জি উৎপন্ন হয়। আমাদের দেশের বড় বড় শহরে, যেখানে আজও গ্যাস লাইন নেওয়া সম্ভব হয় নি সেখানে বিশেষ ধরনের ট্যাঙ্কের মাধ্যমে এল.পি.জি গৃহস্থালি কাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। আমাদের দেশে বহু গাড়ীতে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে এল.পি.জি ব্যবহৃত হচ্ছে। এল.পি.জি. উৎপাদনের সময় সবচেয়ে বেশী নজর রাখতে হয় বাষ্পের চাপের উপর এবং আপেক্ষিক গুরুত্বের দিকে। নিম্নে ছকের মাধ্যমে আদর্শ এল.পি.জি-এর স্তর (Grade) এবং মিশ্রণ দেখানো হল।

 

প্রাকৃতিক গ্যাস | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

এল.পি.জি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রভূত পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। যেমন :

(ক) গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজে

(খ) গ্যাস উৎপাদন কারখানায়

(গ) শিল্প কারখানার বিভিন্ন কাজে

(ঘ) রাসায়নিক শিল্প

(ঙ) কৃত্রিম রাবার তৈরীকরণে

(চ) অন্তর্দাহ ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসাবে।

মোটরযানে যে ধরনের এল.পি.জি ব্যবহার করা হয় তা হচ্ছে প্রোপেন অথবা বুটেনের অথবা প্রোপেন ও বুটেন একত্রে মিশ্রিত এল.পি.জি। এল.পি.জি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে বর্ণনা করা হলো। 

 

আরও দেখুনঃ

 

3 thoughts on “প্রাকৃতিক গ্যাস”

Leave a Comment