অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস” বিভাগের পাঠ। পেট্রোলের মধ্যে অকটেন রেটিং হচ্ছে মোটরযানে ধাক্কা (knocking) নিবারণের ক্ষমতার মান। পেট্রোলের অকটেন রেটিং নির্ণয়ের জন্য একটি বিশেষ ধরনের ইঞ্জিন ব্যবহার করা যায়। এই ইঞ্জিনে সঙ্কোচন চাপ কম ও বেশী করার বিশেষ ব্যবস্থা থাকে এবং ধাক্কার তীব্রতা নির্ণয়ের জন্য নকমিটার (knockmeter) সংযোগের বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। নকমিটারের কার্যক্রম ও গঠন প্রক্রিয়া ১৬.৩৩ চিত্রে দেখানো হল।

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

ঐ বিশেষ ইঞ্জিনটি আইসোঅকটেন (১০০) এবং নরমাল হেপটেন (O) দ্বারা তৈরী একটি মিশ্রণের (তরল জ্বালানি) মাধ্যমে চালনা করলে যে পরিমাণ ধাক্কা ইঞ্জিন থেকে পাওয়া যায়, একই পরিমাণ ধাক্কা যদি শুধু গ্যাসোলিন দ্বারা ইঞ্জিনটি চালনা করলেও পরিলক্ষিত হয়, তাহলে উক্ত মিশ্রণে আইসোঅকটেনের শতকরা ভাগই গ্যাসোলিনের অকটেন রেটিং বা নম্বর বুঝায়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, ঐ মিশ্রণে ৭০ ভাগ আইসোঅকটেন এবং ৩০ ভাগ নরমাল হেপটেন ছিল। কারণ, মিশ্রণের সাহায্যে ইঞ্জিনটি চালানোর ফলাফল এবং শুধু পেট্রোল দিয়ে চালানোর ফলাফল একই রকম। তাই বলা যায় যে, এই পেট্রোল অকটেনের নম্বর ৭০ বা অকটেন রেটিং ৭০।

যে ইঞ্জিনে সঙ্কোচন চাপ বেশী তার সঙ্কোচন অনুপাতও বেশী, অধিক নকিং প্রবণতা বিশিষ্ট ইঞ্জিনে, বেশী অকটেন নম্বরের পেট্রোলে ব্যবহার করতে হয়। ইঞ্জিনের যেসব গঠন-প্রকৃতি ধাক্কার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে তাকে মেকানিক্যাল অকটেন নম্বর বলে। টারধো সুপারচার্জার ব্যবহার করে ইঞ্জিনের অপ্রত্যাশিত (অপ্রজ্বলিত গ্যাস) চার্জকে দ্রুত বের করে দিয়ে এবং বেশী সজীব চার্জ সিলিণ্ডারে প্রবাহের মাধ্যমে ধাক্কার প্রবণতা রোধ করা যায় এবং ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। দ্বৈত প্রজ্বলন পদ্ধতি অথবা প্রজ্জ্বলন প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে ধাক্কার প্রবণতা হ্রাস করা যায়।

 

সিটেন নম্বর (Cetane number) :

ডিজেল এক প্রকার তরল জ্বালানি যা ডিজেল ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই জ্বালানির গুণগত মান নির্ভর করে এতে 

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

এতে শতকরা কতভাগ সিটেন আছে তার উপর। যে ডিজেল তেলের সিটেনের পরিমাণ বেশী তার গুণগত মান বেশী, অর্থাৎ ইঞ্জিনে দহনকার্য সুচারুরূপে সম্পন্ন হয় এবং নকিং বা ধাক্কা দেওয়ার প্রবণতা কমে যায়। সিটেন হচ্ছে নরমাল হেক্সাডিকেন (D16 H34) যার মান সাধারণত ১০০ সিটেন হিসাবে ধরা হয় এবং আলফা মিথাইল’ ন্যাপথ্যালিন (C11H10) যার মান শূন্য ধরা হয়। এই দুই-এর মিশ্রণে সিটেন সৃষ্টি হয় !

প্রজ্বলন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য, সহজ স্টার্টিং-এর জন্য এবং জ্বালানির বাষ্পীভবন বৃদ্ধির জন্য ধাক্কা প্রবণতা রোধকল্পে ডিজেল তেলে সিটেনের হার বৃদ্ধি করা হয়। ডিজেলে সিটেনের মান বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত অনুপানগুলি ব্যবহার করা হয়।

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

(ক) অরগানিক নাইট্রেট (Organic nitrates), (খ) পারঅক্সাইড (Peroxides), যেমন : অ্যামাইল নাইট্রেট (Amylnitrate) এবং এসিটোন আরঅক্সাইড Acetone peroxide)। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে যে, শতকরা ৫ ভাগ হতে ৪ ভাগ অ্যামাইল নাইট্রেট মিশালে সিটেনের মান ৭ হতে ১৩ ভাগ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সমপরিমাণ এসিটোন পারঅক্সাইড মিশালে সিটেনের মান বৃদ্ধি পায় ১ হতে ৩৫ ভাগ। উক্ত রাসায়নিক দ্রব্যাদি বিভিন্ন কারণে যেমন বিষক্রিয়া, উচ্চমূল্য, বিস্ফোরক ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে খুব বেশী ব্যবহার করা হয় না। নিম্ন তাপে সুচারুরূপে ব্যবহারের জন্য ডিজেলের সাথে উদ্বায়ী (volatile) অ্যালডিহাইড; ইথার এবং কিটোন ব্যবহার করা হয় ।

ডিজেলের মধ্যে সিটেনের রেটিং হচ্ছে মোটরযানে ধাক্কা নিবারণের ক্ষমতার মান। ডিজেলে সিটেনের মান নির্ণয়ের জন্য একটি বিশেষ ইঞ্জিনের সাহায্য নেওয়া হয়। এই ইঞ্জিনে সঙ্কোচন চাপ কমবেশী করার বিশেষ ব্যবস্থা আছে। নকিং বা ধাক্কা নির্ণয়ের জন্য নকমিটার সংযোগের বিশেষ ব্যবস্থা আছে। ১৬.৩৪ চিত্র নকমিটারের সংযোগ এবং কার্যক্রম দেখানো হয়েছে।

উক্ত ইঞ্জিনটি নরমাল হেক্সাডিকেন (১০০) এবং আলফামিথাইল ন্যাপথ্যালিন ‘o’ এর তৈরি মিশ্রণ দ্বারা (তরল জ্বালানি) চালনা করলে যে ফলাফল ইঞ্জিন থেকে পাওয়া যায়, একই রকম ফলাফল যদি কেবল ডিজেল দ্বারা চালনা করলেও পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত মিশ্রণে নরমাল হেক্সাডিকেনের শতকরা ভাগই হচ্ছে উক্ত ডিজেলে (মিশ্রণে) সিটেনের রেটিং বা নম্বর বা মান।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, উক্ত মিশ্রণে ৭০ ভাগ এন-হেক্সাডিকেন এবং ৩০ ভাগ আলফা মিথাইল ন্যাপথ্যালিন আছে। কারণ কেবল ডিজেল দ্বারা ইঞ্জিনটি চালানোর ফলাফল এবং মিশ্রণ দ্বারা চালানোর ফলাফল একই রকম। তাই বলা যায়, ঐ ডিজেলে সিটেন রেটিং ৭০ বা সিটেন নম্বর ৭০।

ডিজেলে সিটেন নম্বর বেশী থাকা ভাল। এতে স্প্রে ভাল হয়, ফলে প্রজ্বলনও ভাল হয়। ইগনিশন ডীলের সময় কমে যায়। প্রজ্বলন প্রকোষ্ঠে কার্বন কম পড়ে, ফলে ধাক্কা কমে যায় এবং ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, তেল বিশেষজ্ঞগণ উচ্চগতি সম্পন্ন ডিজেল ইঞ্জিনের জন্য সিটেন নম্বর কমপক্ষে ৪৫ হতে ৫০, মধ্যম গতিসম্পন্ন ডিজেল ইঞ্জিনের জন্য ৩৫ থেকে ৪৫ এবং কম গতিসম্পন্ন ইঞ্জিনের জন্য ২৫ থেকে ৩৫ ব্যবহার করার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন প্রকার হাইড্রোকার্বনে বিভিন্ন পরিমাণ সিটেন থাকে। নিম্নে এর একটি তালিকা দেওয়া হলো।

 

(ক) সাধারণ প্যারাফিন (Normal Paraffins)                             সিটেন নম্বর

হেপটেন (Heptane)                                                                   ৫৬.৩

 অকটেন (Octane)                                                                    ৬৩.৮

ডিকেন (Decane)                                                                      ৭৬.৯

ডোডিকেন (Dodecane)                                                              ৮৭.৬

টেট্রাডিকেন (Tetradecane)                                                         ৯৬.১

হেক্সাডিকেন (hexadecane)                                                         ১০০.০

অকটাডিকেন (Octadecane)                                                       ১০২.৬

(খ) অলিফিন্স (Olefins) 

অকটিন-১ (Octene-1)                                                                  ৪০.৫

ডিসিন-১ (Decene- 1 )                                                                  ৬০.২

ডেডিসিন-১ (Dodecane-1)                                                           ৭১.৩

টেট্রাডিসিন-১ (Tetradecone-1)                                                      ৮২.২

হেক্সাডিসিন-১ (Hexadecene-1)                                                     ৮৪.২

অট্টাডিসিন-১ (Octadecene-1)                                                        ৯০.০

(গ) ন্যাপথিনস (Naphthenes)

মিথাইল সাইক্লোহেক্সেন (Methyl cyclohexane )                               ২০.০

ডাইসাইক্লোহেক্সাইল (Dicyclohexyl)                                                 ৪৭.৪

ডেকালিন (Decalin )                                                                       ৪২.১

(ঘ) অ্যারোমেটিক্স (Aromatics)

এন-অ্যামাইল বেনজিন (N-Amylbenzene)                                        ৮

এন-হেক্সাইল বেনজিন (n-Hexyl benzene)                                        ২৬

এন-নোনাইল বেনজিন (n-Nonyl benzene)                                        ৫০

এন-ডাইআইসোপ্রোপাইল বেনজিন (n-Diisopropyl benzene)             ১২

 

ইগনিশন ডীলে ও সঙ্কোচন অনুপাত :

ইঞ্জিনের কম্প্রেশন অনুপাত বেশী হলে বা থাকলে প্রজ্বলন প্রকোষ্ঠে তাপমাত্রা বেশী হয়। এর ফলে জ্বালানি দ্রুত জ্বলে যায় অর্থাৎ ইগনিশন ডীলে কম হয়। কিন্তু ইঞ্জিনের সঙ্কোচন অনুপাত কম হলে প্রজ্বলন তাপমাত্রা কম হয়। ফলে ডীলে বেশী হয়। অর্থাৎ প্রজ্বলনের সময়কাল বেশী লাগে। এতে দেখা সঙ্কোচনের অনুপাত এবং প্রজ্বলনে বিলম্ব হওয়ার ব্যাপারটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আবার দেখা যায় বেশী সিটেন নম্বরযুক্ত ডিজেল তাড়াতাড়ি প্রজ্বলিত হতে পারে না যদি না, ইঞ্জিনের সঙ্কোচন চাপ কম থাকে। ইঞ্জিনের সাধারণ পর্যায় (period) ধরা হয় ১৩ পূর্ব. টি.ডি.সি/পশ্চাদ টি.ডি.সি ।

 

উন্নতমানের জ্বালানির (তরল) গুণাবলী :

উচ্চগুণসম্পন্ন পেট্রোলের নিম্নলিখিত গুণাবলী থাকা একান্ত দরকার ।

(ক) ঠাণ্ডা এবং গরমে ইঞ্জিন সহজে চালু করার ক্ষমতা (easy start)।

(খ) ধাক্কা প্রবণতা রোধের ক্ষমতা।

(গ) পূর্ব-প্রজ্বলন (pre-ignition) প্রবণতা রোধ করা।

(ঘ) সহজে ব্যবহারযোগ্য।

(ঙ) মূল্য কম এবং সহজলভ্য হওয়া ।

(চ) ইঞ্জিনের কোন অংশে মরিচা ধরাবে না।

(ছ) এর তাপমান (caloric value) বেশী হওয়া উচিত, অর্থাৎ ১৯০০ বি.টি, ইউ প্রতি পাউণ্ডে।

(জ) এতে কোন প্রকার আঠালো পদার্থ থাকবে না।

(ঝ) বাষ্পের বাধা (জ্বালানি লাইনে) সৃষ্টি করবে না। (ঞ) স্পার্ক প্লাগে কার্বন জমতে দেয় না।

(ট) ইঞ্জিনের গতি বৃদ্ধি করে।

পেট্রোলের বাষ্পীভবন ক্ষমতা সাধারণত দুটি পরীক্ষা দ্বারা নির্ণয় করা হয়। যেমন : (ক) এ.এস.টি.এম পাতন পরীক্ষা (ASTM distillation test) (খ) রীড বাষ্পীয় পরীক্ষা (Reid vapour test) এই পরীক্ষা দুটির আলোচনা পূর্বেই করা হয়েছে।

ASTM পাতন পরীক্ষার একটি কার্ভ (distillation curves) ১৬.৩৫ চিত্রে দেওয়া হল, যাতে বিভিন্ন দ্রব্যের সাথে যেমন ভারী গ্যাস, ফার্নেস অয়েল, ডিজেল অয়েল, হাল্কা অয়েল, কেরোসিন, অবাষ্পীয়ভবন গ্যাসোলিন বাষ্পীভবন গ্যাসোলিন, উড়োজাহাজের গ্যাসোলিন, আইসোবুটেন এবং অন্যান্য গ্যাসের সাথে বাষ্পীয়ভবন এবং তাপমাত্রার সমন্বয় দেখানো হয়েছে।

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

বায়ু এবং জ্বালানি তেলের পাতন প্রক্রিয়া বা ইএডি পরীক্ষা : ১৬.৩৬ চিত্রে উল্লিখিত পরীক্ষাযন্ত্রের কার্যক্রম সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে। এই যন্ত্রের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ আছে, যেমন : ম্যানোমিটার, হিটিং কয়েল, কলিং কয়েল, সেপারেটর, থার্মোমিটার, এয়ার কয়েল এবং ইকুইলিব্রিয়াম কয়েল।

নির্দিষ্ট পরিমাণ পেট্রোল এবং বায়ু, দুটি ভিন্ন পথে, ভারসাম্য কয়েলে (equilibrium coil) প্রবেশ করানো হয়। বায়ু এবং জ্বালানি একত্রে ভারসাম্য কয়েলের দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে, ফলে একে অপরের সাথে মিলিত হবার সুযোগ গ-কক্ষে একটি হিটিং কয়েল এবং একটি কুলিং কয়েল থাকে। ফলে উক্ত কক্ষে পায়।

পরীক্ষা- তাপমাত্রা কমানো-বাড়ানো সহজ হয়। থার্মোমিটারের সাহায্যে উক্ত কক্ষে কখন কত তাপমাত্রা থাকে তা নির্ণয় করা যায়। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা তেল ও বায়ুর মিশ্রণকে বাষ্পীভূত হতে সহায়তা করে থাকে। এই বাষ্পীভূত মিশ্রণ ভারসাম্য কয়েল থেকে একটি পৃথকীকরণ যন্ত্রে প্রবেশ করে।

পৃথকীকরণ যন্ত্র বাষ্পীভূত মিশ্রণ এবং অবাষ্পীভূত মিশ্রণ পৃথক করে দুই দিকে পাঠায়। অবাষ্পীভূত মিশ্রণ বা তেল তলানি পাত্রে (residue receiver) জমা হয়, যা চিত্রে দেখানো হয়েছে। বাষ্পীভূত মিশ্রণ পৃথকীকরণ যন্ত্রের উপরপ্রান্ত হতে পাইপের মধ্যে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয় (ইঞ্জিনের ইনটেক মেনিফোল্ড অথবা কন্ডেন্সারে)। এর মাধ্যমে বাষ্পীভূত এবং অবাষ্পীভূত মিশ্রণের একটি সুস্পষ্ট পার্থক্য নির্ণয় করা যায় ।

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তাপমাত্রা প্রয়োগ করে বায়ু এবং তেলের বাষ্পীভবনের বিভিন্ন তারতম্য কার্ভ এর মাধ্যমে নির্ণয় করা যায় (১৬.৩৬ চিত্র দ্রষ্টব্য)। 

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

উল্লিখিত কার্ভের সাহায্যে তাপমাত্রার সাথে বাষ্পীভবনের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বায়ু ও তেলের মিশ্রণের অনুপাত দেখানো হয়েছে। এখানে বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য যে প্রতি পরীক্ষার সময় একই পরিমাণ বায়ু এবং তেল পরীক্ষা যন্ত্রে (test apparatus) প্রবেশ করানো দরকার। তা না হলে পরীক্ষার ফলাফল ত্রুটিপূর্ণ হবে।

উদাহরণ – ১

অটো সাইকেলের উপর চালিত একটি পেট্রোল ইঞ্জিনের ক্লিয়ারেন্স ভলিউম তার স্ট্রোকের ২০%। ইঞ্জিনটি প্রতি ঘন্টায় জ্বালানি খরচ করে ৮.১৭ লিটার এবং আই.এইচ.পি (I.H.P) উৎপন্ন করে ৩২। তেলের আপেক্ষিক গুরুত্ব .৭৬ এবং জ্বালানির তাপমাত্রা ১০৫০০ কিলোক্যালরি/কেজি। এই ইঞ্জিনের তাপীয় কার্যক্ষমতা নির্ণয় কর।

সমাধান : প্রতি মিনিটে জ্বালানি খরচ

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

উদাহরণ-২

একটি আট সিলিণ্ডার ইঞ্জিনের সিলিণ্ডার বোর ৮.৫৭ সে.মি. এবং স্ট্রোক ৮.২৫ সে.মি.। এর সঙ্কোচন চাপের অনুপাত ৭ : ১ এবং গতি প্রতি মিনিটে ৪০০০ বার। উক্ত ইঞ্জিনটি ডায়নামোমিটারের সাহায্যে ১০ মিনিট চালনা করা হয়। এতে ডায়নামোমিটার বীম স্কেলে চাপ দেখায় ৪০.৮ কেজি/ সে.মি. এবং ১০ মিনিটে জ্বালানি খরচ হয় ৪.৫৫ কেজি, যার তাপমাত্রা ১১০০০ কিলোক্যালরি/কেজি।

কারবুরেটরে যে বায়ু দেওয়া হতো তার তাপমাত্রা ২১°সে.চাপমাত্রা ১.০২৭ কেজি/ সে.মি. এবং বাতাসের পরিমাণ ছিল ৫.৫৪ কেজি/মিনিট। তাহলে দেখাও যে, (ক) ঐ ইঞ্জিনের বি.এইচ.পি. কত ? (খ) ব্রেকের প্রধান কার্যকর চাপ : (b.m.e.p) কত? গে) মূল জ্বালানি খরচ (bs.fc) কত? (ঘ) বায়ু সরবরাহের পরিমাণ কত? ব্রেক তাপীয় কার্যক্ষমতা (nb) কত? (চ) বায়ু ও জ্বালানির আনুপাত কত ? (ডায়নামোমিটারের বাহুর (arm) দৈর্ঘ্য ৫৩.৩৫ সে.মি.।)

 

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

উদাহরণ-৩

একটি চার সিলিণ্ডার চারঘাত ডিজেল ইঞ্জিনের বোর হচ্ছে ১০.৫ সে.মি. এবং স্ট্রোক ১২.৭ সে.মি। ঐ ইঞ্জিনের গতি ১৮০০ বার প্রতি মিনিটে এবং ৬৩ বি.এইচ.পি উৎপন্ন হয়। ১৫ মিনিট পরীক্ষাকালে ঐ ইঞ্জিনে ২.৭৮ কেজি জ্বালানি ব্যয় হয় এবং প্রতি কেজিতে জ্বালানির তাপমাত্রা ১০৯০০ কিলোক্যালরি। রাসায়নিক প্রজ্বলনের জন্য বায়ু ও তেলের অনুপাত ১৪.৮। ঐ ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতার শতকরা হিসাব ৮০ এবং নির্দিষ্ট আয়তন হচ্ছে ৮০৫ মি৩/কেজি। তা হলে ঐ ইঞ্জিনের ব্রেক তাপীয় কার্যক্ষমতা কত? প্রকৃতপক্ষে কত পরিমাণ বায়ু প্রজ্বলন প্রকোষ্ঠে পাওয়া যায় ? 

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

উদাহরণ – ৪:

একটি চার সিলিন্ডার পেট্রোল ইণ্ডিনের বি.এইচ.পি. ৭০। ইঞ্জিনের গতিবেগ প্রতি মিনিটে ২০০০ বার। ডায়নামোমিটার দ্বারা পরীক্ষা করে দেখা গেল ১ম, ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ সিলিন্ডার যখন কাজ না করে তখন ব্রেক টর্ক রিডিং পাওয়া যায় যথাক্রমে ১৭.৯৭, ১৭.২৮, ১৭.০০ এবং ১৭.৭০ কেজি/মিটার। স্বাভাবিকভাবে ইঞ্জিনটি চালানোর সময় . ২৭২ কেজি/ বি.এইচ.পি/ ঘন্টায় জ্বালানি ব্যয় হয়। জ্বালানি তেলের সর্বাধিক তাপমাত্রা হচ্ছে ১০,৫০০ কিলোক্যালরি/ কেজি। তাহলে ঐ ইঞ্জিনের যান্ত্রিক কার্যক্ষমতা কত? এবং ব্রেক তাপীয় কার্যক্ষমতা কত ?  সমাধান : (ক) যখন এক নম্বর সিলিন্ডার কাজ করে না তখন বি.এইচ.পি. উৎপন্ন হয় 

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

একটি চার সিলিন্ডার চারঘাত পেট্রোল ইঞ্জিনের বোর ১০ সে.মি., স্ট্রোক ১৫ সে.মি., প্রতি মিনিটে ঘূর্ণন ২৫০০ বার। জ্বালানি খরচ প্রতি মিনিটে ২০০ গ্রাম। জ্বালানির তাপমান ১১০০ কিলোক্যালরি/কেজি। ডায়নামোমিটারে পরীক্ষা করার সময় ৫০ সেমি. ব্যাসার্ধে ভর হচ্ছে ২০ কেজি। প্রতি মিনিটে শীতলীকরণ পানি সরবরাহের পরিমাণ ৭.৫ কেজি। শীতলীকরণ পানির তাপমাত্রা ৫০° সে.। ঐ ইঞ্জিনের যান্ত্রিক কার্যক্ষমতা কত? এবং নির্দিষ্ট প্রধান চাপমাত্রা কত? তাপমাত্রা ক্ষতির (loss) পরিমাণ কত? [ ঐ ইঞ্জিনের ঘর্ষণজনিত ক্ষতি (F.H.P) হচ্ছে ৬। ] (খ) ইঞ্জিনটিতে প্রতি মিনিটে তেল খরচ হচ্ছে wfx জ্বালানি তেলের তাপমাত্রা

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি | ফুয়েলস এন্ড লুব্রিক্যান্টস | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

আরও দেখুনঃ

 

2 thoughts on “অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি”

Leave a Comment