পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি

পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি – এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “কুলিং এবং ট্রান্সমিশন পদ্ধতি” অধ্যায়ের একটি পাঠ।

cropped AutomotiveGOLN.com Logo 512x512 1 1 পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি

পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি

ইঞ্জিনের উৎপন্ন শক্তিকে বিভিন্ন এককের মাধ্যমে চাকায় ( wheel) সরবরাহ করার পদ্ধতিকেই পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি বলে। সাধারণভাবে প্রায় সব গাড়িতে ইঞ্জিন থেকে শক্তি পিছনের চাকার সরবরাহ হয়। কিন্তু যেসব গাড়ির চারটি চাকায়ই সমান শক্তি সরবরাহ হয় তাকে ‘ফোর হুইল ড্রাইভ’ গাড়ি বলে।

ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়িসমূহ দূরযাত্রায়, পাহাড়িয়া এলাকায়, বালু, কাদা, গ্রামীণ পরিবেশে চলাচলে সক্ষম। ফোর হুইল গাড়ি বেশী ব্যবহৃত হয় সেনাবাহিনী, বি. ডি. আর এবং পুলিশ বাহিনীতে। ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়িতে দুইটি ডিফারেন্সিয়াল (differential) ও দুইটি গিয়ার বাক্স থাকে।

প্রয়োজনবোধে চার চাকায় অথবা কেবলমাত্র পিছনের চাকায় শক্তি সরবরাহ করা যায়। সুতরাং এতে দেখা যায় ফোর হুইল গাড়ি বেশ মজবুত করে তৈরী করা হয়। ইঞ্জিন থেকে শক্তি বিভিন্ন ইউনিট হয়ে চাকায় যাওয়ার প্রক্রিয়াকেই শক্তি সরবরাহের লাইন বলে। ৪.৪ চিত্রে তা দেখানো হয়েছে। কিভাবে শক্তি চাকায় সরবরাহ হয় তা নিম্নে ফ্লোরানিং চার্টের সাহায্যে দেখানো হলো।

১। পিস্টন (piston)

২। কানেকটিং রড (connecting rod)

৩। ক্র্যাঙ্কশ্যাফট (crankshaft)

৪। ফ্লাই হুইল (fly wheel

৫। ক্লাচ ডিস্ক (clutch disc)

৬। প্রেসার প্লেট (pressure plate)

↓ 

 

৭। ট্রান্সমিশন ইমপুট শ্যাফট (transmission imput shaft)

৮। ইমপুট বা ক্লাচ গিয়ার (imput or clutch gear) (ট্রান্সমিশন ড্রাইভ গিয়ার)

৯। কাউন্টার শ্যাফট্ ড্রিভেন গিয়ার (counter shaft driven gear)

১০। ট্রান্সমিশন মেইন শ্যাফট (transmission main shaft) (আউটপুট শ্যাফট)

১১। ইউনিভার্সাল জয়েন্ট (universal joint) এবং স্লিপ জয়েন্ট (slip joint)

১২। প্রোপেলার শ্যাফট (propeller shaft)

↓ 

১৩। ড্রাইভ বেভেল পিনিয়ন (drive bevel pinion) অথবা টেইল (tail)

↓ 

১৪। রিং গিয়ার অথবা ক্রাউন হুইল (ring gear or crown wheel)

১৫। সান অথবা সাইড গিয়ার (sun or side gear )

↓ 

১৬। ডান ও বাম এক্সেল (right and left axles )

↓ 

১৭। পিছনের চাকা/রিয়ার হুইল (rear wheel)

 

 

ক্লাচ কি এবং এর কাজ কি:

ক্লাচ এমন একটি যান্ত্রিক কৌশল (device) যা ইঞ্জিনের শক্তিকে সরবরাহ লাইনের সাথে সংযোগ এবং বিচ্ছিন্ন করতে সাহায্য করে। ক্লাচ ইউনিটের মাধ্যমেই শক্তি গিয়ার বারে যায়। সাধারণ অবস্থায় ক্লাচ প্রেসার প্লেটের সাহায্যে ফ্লাই হুইলের সাথে যুক্ত অবস্থায় থাকে। গাড়ি যখন চলে তখনও ক্লাচ অনুরূপভাবে যুক্ত অবস্থায় থাকে।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, একটি গাড়ির ইঞ্জিন চালু আছে কিন্তু গাড়িটি নড়াচড়া করছে না বা কোথাও যাচ্ছে না। এর কারণ ক্লাচ ট্রান্সমিশন লাইনের সাথে যুক্ত আছে কিন্তু গিয়ার বাক্স নিরপেক্ষভাবে অবস্থান করছে বলে গাড়িটি চলছে না। অতএব দেখা যাচ্ছে গিয়ার নিরপেক্ষ থাকলে এবং ক্লাচ যুক্ত অবস্থায় থাকলেও পাওয়ার সরবরাহ হবে না ।

পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | কুলিং এবং ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

ক্লাচ কখন করতে হয় : 

  • ১। ইঞ্জিন চালানোর সময় ক্লাচ প্যাডেলে চাপ প্রয়োগ করতে হয় যাতে ক্লাচ মুক্ত থাকে।
  • ২। গিয়ার পরিবর্তনের সময় ক্লাচ করে নেওয়া একান্ত আবশ্যক।
  •  ৩। ব্রেক করার সময় ক্লাচ করতে হয়।

ক্লাচ যেহেতু সাধারণভাবে যুক্ত অবস্থায় থাকে সেজন্য ক্লাচ প্যাডেলে চাপ দিলে ক্লাচ ডিস্ক (disc) ট্রান্সমিশন থেকে (ফ্লাই হুইল) বিচ্ছিন্ন হয়। ফলে শক্তি সরবরাহ বন্ধ হয় বা থাকে।

 

ক্লাচের অবস্থান :

ফ্লাই হুইল এবং গিয়ার বাক্সের মধ্যবর্তী স্থানে ক্লাচের অবস্থান। ফ্লাই হুইলের সাথে বেল্টের সাহায্যে ক্লাচ সংযুক্ত করা হয়। ক্লাচের অংশসমূহ নিম্নরূপ।

১। ক্লাচ ডিস্ক (clutch disc) বা ক্লাচ প্লেট (clutch plate)

২। ক্লাচ লাইনিং (clutch lining) বা ফেসিং (facing)

৩। প্রেসার প্লেট (pressure plate)

 

পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | কুলিং এবং ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

৪। কয়েল স্প্রিং (coil spring)

৫। টরশনাল স্প্রিং (torsional spring)

৬। কুশনিং স্প্রিং (cushioning spring)

৭। রিলিজ বিয়ারিং বা থ্রো-আউট বিয়ারিং। (release or throwout bearing)

৮। ক্লাচ ফর্ক (clutch fork)

৯। ক্লাচ হাউজিং (clutch housing

১০। ক্লাচ হাব (clutch hub )

১১। ক্লাচ কভার প্লেট (clutch cover plate)

১২। রিলিজ লিভার (release lever )

১৩। রিলিজ লিভার স্প্রিং (release lever spring)

১৪। স্পাইন (spline)

১৫। হাব ফ্লাঞ্জ (hub flange)

 

পাওয়ার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | কুলিং এবং ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

 

আরও দেখুনঃ