ভাল্‌ভ ও ভাল্ভ মেকানিজম

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ভাল্‌ভ ও ভাল্ভ মেকানিজম

ভাল্‌ভ ও ভাল্‌ভ মেকানিজম

ভাল্‌ভ ও ভাল্ভ মেকানিজম

ভাল্‌ভ মেকানিজম একটি যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা, যার মাধ্যমে ইঞ্জিনে ব্যবহৃত ভাল্‌ভসমূহকে পরিচালনা করে নিম্নের প্রয়োজনীয়তা সমূহ পরিপূর্ণ করা হয় :

ক. ইঞ্জিন চলাকালীন ব্যবস্থাপনা, একটি নির্ধারিত সময় পর পর অর্থাৎ ভাল্‌ভ টাইমিং মোতাবেক প্রতি সিলিন্ডারের ইনটেক ও অ্যাগজস্ট ভালভকে খুলে ইনটেক ও অ্যাগজস্ট পোর্ট দিয়ে যথাক্রমে এয়ার ফুয়েল মিকচার/এয়ারকে প্রবেশ করতে ও অ্যাগজাস্ট গ্যাস বের করে দিতে সাহায্য করে ।

 

ভাল্‌ভ ও ভাল্ভ মেকানিজম

 

চিত্র : ভাদৃত মেকানিজমের মাধ্যমে ভাভ খোলা ও বন্ধ অবস্থা (এল হেড মেকানিজম)

খ. এ ব্যবস্থাপনা পাওয়ার ও কম্প্রেশন স্ট্রোকে ইনটেক ও অ্যাগজস্ট ভাল্‌ভদ্বয়কে যথাসময়ে বন্ধ হতে দিয়ে এয়ারফুয়েল মিকচারকে/বাতাসকে উচ্চ চাপে ও তাপে আবদ্ধ কক্ষে কম্প্রেস্ত করতে সাহায্য করে এবং পাওয়ার স্ট্রোকের উৎপন্ন উচ্চ চাপে পিস্টনকে নিচের দিকে ধাক্কা দিতে সহায়তা করে। অর্থাৎ এ ব্যবস্থাপনা পরোক্ষভাবে কাঙ্ক্ষিত যান্ত্রিক শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে ।

গ. এ ব্যবস্থায় টেপেট ক্লিয়ারেন্স (Tappet clearance) অ্যাডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে ভাত খোলার পরিমাণ সংরক্ষণ করতে সাহায্যে করে ।

ঘ. এ ব্যবস্থাপনার সাথে ভালভ টাইমিংয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে । ভালভ টাইমিং সংরক্ষণের মাধ্যমে যথা
সময়ে যথার্থ ডিগ্রিতে ভালভ খুলতে ও বন্ধ হতে সাহায্য করে ।

ভালভ তৈরির ধাতু (Materials of Valve) :

১। ইনটেক ভালভের হেড, অ্যাগজস্ট ভালভের হেডের তুলনায় প্রশস্ততা বেশি এবং তুলনামূলকভাবে কম উত্তাপে কাজ করতে হয়। কারণ এর চার পাশ দিয়ে সর্বদা ইনটেক স্ট্রোকে এর ঠাণ্ডা এয়ার ফুয়েলের সংমিশ্রণ বা এয়ার প্রবেশ করে । ইনটেক ভাল্‌ভ তাই কার্বন বা লো-অ্যালয় স্টিলের তৈরি হয়ে থাকে ।

ভালভের বিভিন্ন অংन (Different portions of a valve) :

একটি তালতের নিম্নের প্রধান প্রধান অংশসমূহের নিয়ে গঠিত যার নাম ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা প্রদত্ত হলো :

ভালভ হেড (Valve head) :

ব্যাঙের ছাতার সাদৃশ্য সম্পন্ন, ভালভের মাথার প্রশস্থ অংশকে ভাত হে বলা হয়। এটা ইঞ্জিনের ইনটেক ও অ্যাপস্ট পোর্টের পরিমাপ মোতাবেক থাকে। সাধারণত ইনটেক ভালভের হেড, অ্যাগ⇒স্ট ভালভের তুলনায় বেশি প্রশস্ত থাকে, আর ভানতের এ হেডই ইনটেক ও অ্যাপস্টন্ট পোট খোলা ও বন্ধ হওয়ার কাজটি সম্পন্ন করে ।

মার্জ (Margin) :

ভাত হেডের পুরুষকে মার্গিস বলে। প্রত্যেকটি নতুন ভালতে নির্ধারিত পরিমাণের মার্জিন থাকে। এ মার্জিন যতদিন পর্যন্ত থাকবে, ততদিন ভাত কেইজকে প্রাইভিং করে পুনঃ ব্যবহার করা যাবে। মার্জিন শেষ হয়ে গেলে, ভাত ফেইজকে আর প্রাইন্ডিং করা উচিত নয়।

 

 

ভালভ ফেইস (Valve Face ) :

ভালতের এ অংশটির গুরুত্ব সর্বাধিক, কারণ এটাই ভালভের ক্ষয় হবার মতো অংশ । একে ইঞ্জিন ব্লকের ভালুভ সীটের মধ্যে বলে, ইনটেক ও অ্যাপস্ট পোর্টকে সম্পূর্ণ সীল করে রাখার ক্ষমতা অর্জন করে রাখতে হয়। ভালুত কেইজ কৌণিক অবস্থার থাকে, যা ইঞ্জিন ভেদে ৪৫০° হয়ে থাকে । আবার যে সীটের মধ্যে ভালভ ফেইজ বসে, তা সাধারণ যথাক্রমে ৪৬৬১° হয়ে থাকে। স্বল্প স্থানে সুদৃঢ় সীলিংয়ের জন্য এ ১° ব্যতিক্রম রাখতে হয় । যাকে ভাদৃত ইন্টারফেয়ারেন্স অ্যাঙ্গেল বলা হয় ।

ভাল্ভ স্টেম (Balve Stem):

ভালভের সরাসরি খাড়া অংশটিকে ভাদৃত স্টেম বলা হয়। এটা ভাত পাইডের ভিতর থেকে নামা ওঠা করে এর ভিতরেই ভাত স্প্রিং লক যারা সংকোচিত অবস্থায় থাকে। এটা সর্বদা সোজা থাকতে হবে । কোনোরূপ ৰাঁকা বা টাল হলে, এটা কার্যকারিতা হারার। এ স্টেমের দৈর্ঘ্যের কম বাড়া করা চলবে না বা অপ্রয়োজনে এর গ্রন্থকে সিরিজ পেপার দ্বারা ধর্ষণ করাও চলবে না। সহজে ঠাণ্ডা করণের জন্য কোনো কোনো ভাত স্টেমে সোডিয়াম ধাতু যারা পূর্ণ থাকে।

লকিং এন্ড (Lockinggroove ) :

এটা দুই খণ্ডের একটি লক্ ও রিটেনার ব্যবহার করা হয়। এ লক্‌ স্প্রিংকে সংকুচিত করে ভালভ বন্ধ রাখে ।

ভালভের সম্ভাব্য দোষ-ত্রুটি ও প্রতিকার (Probable troubles and Remain of valve)

নিম্নে তালতের কয়েকটি মুখ্য ত্রুটি ও রুটিজনিত প্রভিডিরা উল্লেখ করা হলো :

– এতে ভালভ ইন্টার ফেয়ারেন্স অ্যাঙ্গেলের পরিমাণ নষ্ট হয়ে যাবে।

– বন্ধাবস্থার পর্যাপ্ত সীলিং করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবে।

– কম্প্রেশন লিক করবে ও ব্লো-বাই বৃদ্ধি পাবে । – ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা কিছুটা হলেও লোপ পাৰে । ভালভ ফেজ ও ভালভ সীট রিকন্ডিশনিং করে এ দোষসূহ মুক্ত করা যায়। সীট ৪৬° তে কেটে ও ভালভ ফেজকে, ভালভ গ্রাইন্ডিং মেশিনে ৪৫° তে গ্রাইন্ডিং করে এ কাজটি করা সম্ভব, যদি মার্জিন থাকে।

ভালভ স্টেম স্টিকিং/জাম হবে (Valve stem sticking) :

ভাভ গাইডের মধ্যে ভাল্‌ভ আটকে / জাম হয়ে যাবে এবং এতে :

– ভাল্‌ভ যথার্থভাবে বন্ধ হবে না ।

– ভাল্‌ভ স্বাভাবিকভাবে ঠাণ্ডা হয় না ।

-Valve guide

– ভাল্‌ভ জ্বলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে ।

– ভাল্‌ভ বেঁকে /টাল হয়ে যেতে পারে।

 

ভাল্‌ভ ও ভাল্ভ মেকানিজম

চিত্র : ভাল্‌ভ গাইড হোল

ওভারহিট/বার্নিং ভাল্‌ভ (Over heat / burning valve) :

পর্যাপ্ত লুব্রিকেন্টের অভাবে বা সীটে বসতে না পারলে ভালভ জ্বলে যায় ও বিবর্ণ হয়ে যায় । ফলে :

– এতে ভাল্‌ভ স্টেম বাঁকা হয়ে যায়,

– বক্রজনিত কারণে ভাল্ভ সিটে বসে না,

– ফেজ অ্যাঙ্গেলের পরিমাণ নষ্ট হয়ে যায়,

– ভাভে কার্বন জমা হওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি ।

প্রশ্নমালা-১৮

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১ । ভাল্‌ভ মেকানিজ কী?

২। ভালভ খোলার সময় কীভাবে সংরক্ষণ করতে হয় ?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১। ভালভ কত প্রকার ও কি কি?

২। আইহেড বা ওভারহেড ভালভ মেকানিজমের অংশসমূহ লেখ ।

৩। এলহেড বা সাইড ভালভ মেকানিজমের অংশসমূহ লেখ।

৪ । ওভারহেড ক্যাম টাইপ ভাল্‌ভ মেকানিজমের অংশসমূহ লেখ ।

৫ । ভালভ মেকানিজমের সম্ভাব্য ত্রুটি ও প্রতিকারসমূহ লেখ।

৬। ভালভ তৈরির ধাতুসমূহ লেখ।

রচনামূলক প্রশ্ন

১। ভালভ-এর অংশসমূহ চিত্রসহ বর্ণনা কর ।

২। ভালভ মেকানিজমের সম্ভাব্য ত্রুটি ও তার প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা কর ।

আরও দেখুন :

 

Leave a Comment