বস্ এল জেট ট্রোনিকস্ ইনজেকশন পদ্ধতি নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “অটোমোবাইলের ইতিহাস” বিষয়ক পাঠের অংশ। এই পদ্ধতি বিশ্বের সর্বাধুনিক। ইহার ব্যবস্থাপনা এবং ইউনিটসমূহ অত্যাধুনিকভাবে প্রস্তুত। এই পদ্ধতি খুবই সাশ্রয়ী, নির্ভরশীল এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের নিশ্চয়তা যন্ত্রাংশের অবস্থান, আকার, সংযোগ এবং কার্যক্রম দেখানো হয়েছে। চিত্র ১৮.১০ দ্বারা বাতাস, জ্বালানি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রবাহ চিত্র দেখানো হয়েছে।
বস্ এল জেট ট্রোনিকস্ ইনজেকশন পদ্ধতি
এই পদ্ধতি নিম্নলিখিত যন্ত্রাংশ নিয়ে গঠিত :
১। থার্মোটাইম সুইচ, ২। সাহায্যকারী বাতাস প্রবাহ–ব্যবস্থা, ৩। আইডেল মিশ্রণ সমন্বয়কারী স্ক্রু, ৪। ডিস্ট্রিবিউটর পাইপ, ৫। প্রেসার রেগুলেটর, ৬। কন্ট্রোল ইউনিট, ৭। ইনজেক্টর ভাল্ভ, ৮। স্টার্ট ভাল্ভ, ৯। আইডেল স্পীড সমন্বয় স্ক্রু, ১০। থ্রোটল ভাল্ব সুইচ, ১১। থ্রোটল ভাল্ব, ১২। বাতাস প্রবাহ সেন্সর, ১৩। রীলে কম্বিনেশন, ১৪। ল্যামডা সেন্সর (Lambda sensor), ১৫। ইঞ্জিন টেম্পারেচার সেন্সর। চিত্র ১৮.১০(ক) এবং চিত্র ১৮.১০ (খ) দ্বারা বস–কে. ই–জেট–ট্রনিকস পদ্ধতি এবং বস–ডি–জেট–ট্রনিকস পদ্ধতি সুন্দরভাবে দেখান হয়েছে।
বস–মোটরনিক সম্মিলিত প্রজ্বলন এবং জ্বালানি পদ্ধতি (Bosch Motornic Combined igrition and fuel-injection system) :
এই পদ্ধতিটি মোটরযান প্রযুক্তির এক গৌরবময় সংযোজন। একটি মাইক্রো কম্পিউটারের সাহায্যে প্রজ্বলন পদ্ধতি এবং জ্বালানি ইনজেকশন করার পদ্ধতিকে সুসংযোজিত করা হয়েছে। চিত্র ১৮.১১ এই পদ্ধতির বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই পদ্ধতি নিম্নলিখিত ইউনিট নিয়ে গঠিত।
১। পালসেশন ডেম্পার ২। হাইটেনশন ডিস্ট্রিবিউটর ৩। থ্রোটল ভাল সুইচ ৪। বাতাসের তাপমাত্রা নির্ণয়ের সেন্সর ৫। থারমোটাইম সুইচ ৬। ইঞ্জিনের তাপমাত্রা নির্ণয় সেন্সর ৭। ইঞ্জিনের গতি নির্ণয় সেন্সর ৮। রেফারেন্স মার্ক সেন্সর ৯। প্রধান রীলে ১০। পাম্প রীলে।
মটরনিক পদ্ধতিতে অতিরিক্ত যে সমস্ত সুবিধা থাকে তা হচ্ছে (ক) ইঞ্জিনের গতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, (খ) পালসেটরের সাহায্যে জ্বালানি ও ইনজেকশন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ, (গ) নক্ ও ডিটোনেশন নিয়ন্ত্রণ করা হয় নক্ সেন্সরের সাহায্যে– যাহা ইঞ্জিনের সাথে সংযুক্ত থাকে, (ঘ) টারবুচার্জড ইঞ্জিন হওয়াতে বুষ্টারের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয় ইঞ্জিন টাইমিং পিছানোর সাহায্যে (Retarded) এবং পোড়া গ্যাসের দরজা খুলে দিয়ে। ইহাতে প্রজ্বলন ধাক্কা প্রতিহত হয় (combustion knock), (ঙ) এই পদ্ধতিতে মটরযান অতি সহজে চালু ও বন্ধ করা যায়,
(চ) ইঞ্জিনে শক্তি বেশী পাওয়া যায়, (ছ) ইঞ্জিন মসৃণভাবে চলে, (জ) জ্বালানির উচ্চতর সাশ্রয় হয়, (ঝ) রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুব কম, (ট) পরিবেশ দূষণ খুব কম, (ঠ) বিশ্বাসযোগ্যতা খুব বেশী, (ড) ইঞ্জিন দ্রুত চলাচলের জন্য উপযুক্ত হয় (warm-up- enrichment), (ঢ) স্বচ্ছ আডেলিংগতি (Idle enrichment), (ণ) উচ্চগতিতে স্বাচ্ছন্দতা, (ত) উচ্চতায় স্বয়ংভরতা, (দ) ইঞ্জিন সহসা উত্তেজনায় স্বাচ্ছন্দতা, (ধ) ইঞ্জিনে যথেচ্ছা গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, (ন) অতি উচ্চ গতিতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধের ব্যবস্থা (যাতে নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে না যায়)।
প্রজ্বলন পদ্ধতি (Ignition system) :
ইলেকটানিক জ্বালানি প্রজ্বলন পদ্ধতিতে “প্রজ্বলন বক্র ম্যাপ (Ignition curvemap) ব্যবহৃত হয়, যাহা ই সি.ইউ–তে ডাটা আকারে সংরক্ষিত থাকে। এই পদ্ধতি প্রচলিত সেন্ট্রিফিউগ্যাল এবং ভ্যাকুয়াম এডভান্স পদ্ধতি হতে খুবই উন্নত। কারণ এই পদ্ধতি ইঞ্জিনের যে কোন গতি, বোঝা ও উচ্চতায়, প্রজ্বলন অগ্রগতি সমন্বয় করতে সক্ষম (spark advance muchanism) |
ইঞ্জিনের বোঝা বাড়লে বাতাস এবং জ্বালানির খরচ বৃদ্ধি পায়, যাহা বাতাস প্রবাহ সেন্সর এবং জ্বালানি প্রবাহ সেন্সরে দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ইঞ্জিনের গতি নিয়ন্ত্রিত হয় ই.সি.ইউ. এর গতি নিরূপক ইউনিট (Inductive pick up) এবং ফ্লাই হুইলের দাঁতের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে। ক্র্যাঙ্ক শ্যাফট্ এর অবস্থা নিরূপণের জন্য আর একটি গতি নিরূপক থাকে যাহা প্রতি মুহূর্তে শ্যাফটের ঘূর্ণায়ন অবস্থা পাল্স (pulse) আকারে ফ্লাই হুইল রিং গিয়ারের সহায়তায় রেফারেন্স মার্ক (Reference Mark sensor) সেন্সর প্রকাশ করে থাকে।
আরও দেখুনঃ
- অকটেন রেটিং নির্ণয় পদ্ধতি
- অকটেন রেটিং এবং অনুপান
- তেলের সান্দ্রতা পরীক্ষা
- ক্ষণস্থায়ী প্রজ্বলন বিন্দু বা ফ্লাশ পয়েন্ট
- পোর পয়েন্ট এবং ক্লাউড পয়েন্ট
- মোটরগাড়ি শিল্প
1 thought on “বস্ এল জেট ট্রোনিকস্ ইনজেকশন পদ্ধতি”