বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” এর “বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর” বিষয়ক পাঠ।

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি

(ক) পানি পরিমাপক যন্ত্র (water gauge) : এ যন্ত্রের সাহায্যে বয়লারের মধ্যে পানির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এর সাথে বাষ্পের চাপ পরিমাপকযুক্ত থাকে। ১৫.৬ চিত্র দ্বারা

 

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

একটি পানি পরিমাপক যন্ত্র এবং প্রেসার গেজ একই সাথে দেখানো হয়েছে। পানির গেজটি একটি কাচের নল বিশেষ। এর একটি নল বা মুখ বয়লারের পানিতে ডুবানো থাকে। ভাল্ভ C2 খুলে দিলে পানি কাচের টিউবে উঠে আসে এবং পানির পরিমাণ নির্দেশ করে। ভালভ C1 খুলে দিলে বাষ্পের চাপ প্রেসার গেজে নির্দেশ করবে। এর সাহায্যে বয়লারে বাষ্পের চাপের পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। প্রেসার গেজের মধ্যে শিপহন টিউব থাকে এবং এই টিউবের মধ্যে পানি পূর্ণ করা থাকে। এই টিউবটি মূলতঃ অর্ধবৃত্তের মত থাকে। বাষ্পের চাপ পড়লে এটি বৃত্তের মত হয়। ১৫.৭ চিত্রে এটি দেখানো হয়েছে। টিউবটির দুই প্রান্ত দুইটি বিন্দুর সাথে যুক্ত থাকে ৷

 

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

শিপহন টিউবের দুই প্রান্ত বিন্দু C এবং D এর সাথে যুক্ত থাকে। টিউবটি যখন চাপযুক্ত হয় বা টিউবের উপর বাষ্পের চাপ পড়ে তখন বিন্দু C, রড R এর সাহায্যে লিভার L-কে ধাক্কা দেয়। লিভারটি সেক্টর পিনিয়ন G-এর সাথে যুক্ত। সেক্টর গিয়ারটি পিনিয়ন P- এর সাথে যুক্ত থাকে।

পিনিয়ন Q-এর সাথে চাপ নির্দেশক কাঁটা বা নিড্‌ল যুক্ত থাকে। ফলে বিন্দু C-এর চাপে নিড়ল ডায়ালের উপর নড়াচড়া করে চাপের পরিমাণ নির্দেশ করে। বাষ্পের চাপের তারতম্য অনুসারেই কাঁটাটি নড়াচড়া করবে এবং ডায়েলের উপর চাপের পরিমাণ নির্দেশ করবে। এভাবেই একটি প্রেসার গেজ এবং একটি ওয়াটার গেজ একত্রে কাজ করে এবং একই বডিতে অবস্থান করে। এই প্রেসার গেজকে বার্ডন প্রেসার গেজও বলা হয়।

 

(খ) নিরাপত্তামূলক ভাল্ভ (safety valve) :

এই ভাল্ভ বয়লারের বাষ্পের জায়গায় উপরিভাগে বসানো থাকে। যদি কখনও বাষ্পের চাপ বেশী হয় তখন এই ভাল্ভ অতিরিক্ত বাষ্পের চাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ এই ভাল্ভটি তখন খুলে যায় এবং অতিরিক্ত বাষ্প ঐ পথে বের হয়ে যায় এবং বয়লারকে বিপদের হাত হতে রক্ষা করে। একটি বয়লারে সাধারণত দুইটি নিরাপত্তামূলক ভাল্ভ থাকে। বয়লারে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তামূলক ভাল্ভ ব্যবহার করা হয়। যেমন : (১) ডেড ওয়েট সেফটি ভাল্ভ (dead weight safety valve) ১৫.৮ চিত্রে এটি দেখানো হয়েছে। (২) লিভার সেফটি ভাল্ভ

 

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

(Lever safety valve) ১৫.৯ চিত্রে দেখানো হয়েছে। (৩) স্প্রিং লোডেড সেফটি ভাল্ভ (spring loaded safety valve) ১৫.১০ চিত্রে দেখানো হয়েছে।

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

(গ) স্টপ ভাল্ভ (stop valve) :

বয়লার হতে বাষ্পকে কর্মশালায় অথবা অন কোন পাইপের সাথে সংযোগের ক্ষেত্রে এই ভালভের ব্যবহার দেখা যায়। বাষ্পকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রাখার জন্যও এই ভাল্ড ব্যবহার করা হয়। ১৫.১১ চিত্রে এই ভাল্ড-এর নমুনা দেখানো হলো।

 

(ঘ) ব্লো-অফ-ভাল্ভ (Blow off valve) :

এই ভাল্ভ বয়লারের সম্পূর্ণ পানি খালি করার জন্য অথবা আংশিক খালি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। বয়লার ধুয়ে সম্পূর্ণ ময়লা বের করার জন্য এই ভাল্ভ ব্যবহার করা হয়। এটি বয়লারের তলদেশে বসানো হয়। ১৫.১২ চিত্রে ব্লো-অফ ভাল্ভ-এর গঠন দেখানো হয়েছে।

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

 

(ঙ) ফিড ভালভ (Feed valve):

যে পাইপ দ্বারা বয়লারে পানি সরবরাহ করা হয় সেই পাইপে এই ভালভ স্থাপন করা হয়। এই ভাল্ভ দুইটি কাজ করে থাকে। যেমন : (১) বয়লারের পরিমাণের বেশী পানি সরবরাহ করতে দেয় না। (২) যখন ফিড পাম্পের চাপ কমে তখন বয়লা যায়, তখন বয়লারের উষ্ণ পানি (বাষ্পের মাধ্যমে) বের হতে পারে না। ১৫.১৩ চিত্রে এই ভালভ-এর নমুনা দেখানো হলো।

 

(চ) জ্বলনযোগ্য প্লাগ (Fusible plug) :

এটি একটি বিশেষ ধরনের প্লাগ যা বয়লারকে অতিরিক্ত তাপের হাত থেকে রক্ষা করে। এটি বয়লারের পানির অংশে থাকে। যখন বয়লারের পানি কমে যায় তখন তাপ বেড়ে যায়। বয়লারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা থাকে। বয়লার শেল ও টিউবসমূহ যে ধাতুর তৈরী এই প্লাগটি তার চেয়ে নরম ধাতুর তৈরী। বয়লারে যখন অতিরিক্ত তাপের সৃষ্টি হয় তখন প্লাগের ধাতু প্রথমে গলে যায় এবং বয়লারকে বিপদের হাত হতে রক্ষা করে থাকে। ১৫.১৪ চিত্রে এই প্লাগের নমুনা দেখানো হলো।

 

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

(ছ) ফিড পাম্প (Feed pump) :

এই পাম্প পানি পাম্প করে ফিড ভাল্ভ-এর সাহায্যে বয়লারে সরবরাহ করে। ইহাই এই পাম্পের প্রধানতম কাজ। এই পাম্পের কার্য সম্পাদনের জন্য দুই ধরনের পাম্প ব্যবহার করা যায়। যেমন : (১) সেন্ট্রিফিউগ্যাল ও (২) ‘রেসিপ্রোকেটিং পাম্প। সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত হয়। কিন্তু রেসিপ্রোকেটিং পাম্প বিদ্যুৎ ও বাষ্প দ্বারা চালিত হয়। এসব পাম্পের বর্ণনা পূর্বেই দেওয়া হয়েছে।

(জ) ফিড ওয়াটার হিটার (Feed water heater) : বয়লারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পানি বয়লারে যাওয়ার পূর্বে পানিকে অল্প গরম করাই এই হিটারের মুখ্য কাজ । কিন্তু বয়লারের যদি প্রতিনিয়ত ঠান্ডা পানি সরবরাহ করা হতো তাহলে বয়লারের কার্যক্ষমতা লোপ পেত। দুই ধরনের ফিড ওয়াটার হিটার আছে। যেমন : (১) ইকোনোমাইজার (economiser), (২) একজস্ট স্টীম ফিড ওয়াটার হিটার (exhaust steam feed water heater)।

 

(১) ইকোনোমাইজার :

এটি স্টেশনারী বয়লারের জন্য খুবই উপযুক্ত। যে পথ দিয়ে ফ্লু–গ্যাস বের হয়ে যায় সেই পথেই ইকোনোমাইজার ইউনিটটি স্থাপন করা হয়। এতে কতকগুলি উল্লম্ব (vertical) পাইপ (P) থাকে এবং উল্লম্ব পাইপগুলির দুই প্রান্ত দুইটি আনুভূমিক (Horizontal) পাইপের সাথে সংযুক্ত থাকে। এসব পাইপ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ১৫.১৫ চিত্রে ইকোনোমাইজারের কার্যক্রম এবং গঠন দেখানো হয়েছে।

ফিড ওয়াটার পাম্প হতে পানি নীচের আনুভূমিক পাইপে (A) আসে। এখান থেকে উল্লম্ব পাইপসমূহের (P) ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপরের আনুভূমিক পাইপে (B) যায়। পাইপ ‘A’ থেকে ‘B’ তে যাওয়ার সময় পানি উত্তপ্ত হয়। উত্তপ্ত বা উষ্ণ পানি পাইপ ‘B’ হতে বয়লারে প্রবাহিত হয়। তখন ভাল্ভ ‘V” খুলে দিতে হয়। পানির চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য পাইপ ‘B’ এর এক প্রান্তে একটি নিরাপত্তামূলক (safety) ভাল্ভ ব্যবহার করা হয়। পরিত্যক্ত ফ্লু-গ্যাস চিমনি

 

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

দিয়ে বের হওয়ার পূর্বে ইকোনোমাইজার ইউনিটের মাধ্যমে পানিকে উত্তপ্ত করে বিধায় বেশ কিছুটা জ্বালানি খরচ বেঁচে যায় এবং সময়ও কম লাগে। এ কারণে বয়-লারে কার্যক্ষমতাও ঠিক থাকে। উল্লম্ব পাইপ (P) কে পরিষ্কার করার জন্য স্ক্র্যাপার (S) ব্যবহার করা হয়।

স্ক্র্যাপার গিয়ারের সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলতে থাকে। ফ্লু-গ্যাসের সাথে যেসব হাল্কা ছাই চুল্লি (furnce) থেকে ভেসে আসে এবং পাইপগুলির উপরি ভাগে আস্তরের সৃষ্টি করে তার ফলে ইকোনোমাইজারের কার্যক্ষমতা লোপ পায়। সেজন্য স্ক্র্যাপার (৪) ব্যবহার করে পাইপসমূহ (P) পরিষ্কার রাখা হয়। ১৫.১৫ চিত্রে এটি দেখানো হয়েছে। গ্রেটে বায়ু প্রবাহের ক্ষমতা লোপ পেলে ইকোনোমাইজারের কার্যক্ষমতা লোপ পায়। আনুভূমিক এবং উল্লম্ব পাইপসমূহের মধ্যে যে তলানি জমে তা পরিষ্কার করা জন্য ব্লো-অফ ভাল্ভ ব্যবহার করা হয় ।

 

(২) একজস্ট স্টীম ফিড ওয়াটার হিটার :

স্টীম ইঞ্জিন বা স্টীম টারবাইন থেকে কার্য সম্পাদনের পর যে বাষ্প বের করে দেওয়া হয় সেই বাষ্প কাজে লাগানোর পদ্ধতিই হচ্ছে একজস্ট স্টীম ফিড ওয়াটার হিটার। এর কার্যক্রম ইকোনোমাইজারের মতই। ইকোনোমাইজার একজস্ট ফ্লু—গ্যাস দ্বারা পানি গরম করে বয়-লারে দেয়। কিন্তু একজস্ট স্টীম

 

বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি | বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

ফিড ওয়াটার হিটার তা না করে বাষ্পের পরিত্যক্ত অংশ থেকে পানিকে গরম করে বয়-লারে সরবরাহ করে থাকে। ১৫.১৬. চিত্রে এই প্রক্রিয়ার কার্যক্রম দেখানো হয়েছে। বাষ্প ‘A’ পথে প্রবেশ করে এবং বাষ্পের পাইপসমূহকে ‘U’ গরম করে ‘B’ পথে বের হয়ে যায়। ফিড পাম্প হতে পানি পাইপ ‘P’ হয়ে শেল (S) এর মধ্যে প্রবেশ করে এবং পাইপসমূহ ‘U’ এসে উত্তপ্ত হয়ে পাইপ ‘Q’ পথে বয়-লারে চলে যায়। পানির চাপও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নিরাপত্তামূলক  ভাল্ভ (V) ব্যবহার করা হয় . (S) এর তলানি নির্গমনের জন্য ব্লো-অফ ভাল্ভ ব্যবহার করা হয়। চিত্রে ‘D’ দ্বারা দেখানো হয়েছে।

 

(ক) স্টীম সেপারেটর (steam seperator) :

বাষ্প হতে জলীয় কণাকে যতদূর সম্ভব পৃথক করে দেওয়াই এর প্রধান কাজ। ইঞ্জিন এবং টারবাইনে ভিজা বাষ্প ব্যবহার করা মোটেই উচিত নয়। সেপারেটরকে ইঞ্জিন অথবা টারবাইনের যত কাছাকাছি বসানো যায় ততই ভাল। এতে দুইটি পাইপ থাকে। একটি দিয়ে বাষ্প আসে এবং অন্যটি দিয়ে বের হয়ে যায়।

১৫.১৭ চিত্রে এটি দেখানো হয়েছে। বাষ্প যখন ‘A” দ্বারা সেপারেটরে প্রবেশ করে তখন রাম্প ৯০° কোণ করে নীচের দিকে নামে এবং বাষ্প যখন পুনরায় উপর দিকে উঠে তখনও ৯০° কোণ করে পাইপ ‘B’ দিয়ে বের হয়ে যায়। সেপারেটর দিয়ে বাষ্প প্রবাহিত হওয়ার সময় ভারী কণাগুলি সেপারেটরে আলাদা হয়ে যায় এবং পরে পানিতে পরিণত হয়।

 

(ঞ) ড্রাফট (Draught) :

ড্রাফট এমন একটি ব্যবস্থা সার সাহায্যে গ্রেটে (grate) সবসময় বাতাস সরবরাহ করা যায়। বয়ালারের কার্যক্ষমতা নিভরি করে গ্রেটে বাতাস সরবরাহের উপর। বয়-লারের পূর্ণক্ষমতা পাওয়ার জন্য ড্রাফ্ট একান্ত প্রয়োজন। এটি দুই প্রকার। যেমন :

 (১) চিমনি ড্রাফট বা প্রাকৃতিক ড্রাফট (chemney draught or natural draught), (২) কৃত্রিম ড্রাফট (artificial draught) ।

 

(১) চিমনি ড্রাফট বা প্রাকৃতিক ড্রাফ্ট :

চুল্লির পরিত্যক্ত ফ্লু-গ্যাল তাড়াতাড়ি বের করার জন্যও ড্রাফট ব্যবহার করা হয়। সাধারণত ফ্লু-গ্যাস চুল্লি থেকে বের হয়ে পানি উত্তপ্ত করে চিমনি দিয়ে বের হয়ে যায়। বিশেষ ব্যবস্থাধীনে এই ফ্লু-গ্যাসকে গ্রেটে সরবরাহ করা হয় বলে একে চিমনি বা প্রাকৃতিক ড্রাফ্ট বলা হয়।

প্রাকৃতিক ড্রাফটের জন্য চিমনি খুব উঁচু ও প্রশস্ত করে তৈরি করতে হয় যেন সহজেই পরিত্যক্ত গ্যাস বের হয়ে যেতে পারে। চাপের পার্থক্যের কারণে এতে জনজীবন এবং পরিবেশ নোংরা হয় না। চিমনি খুব মজবুতভাবে স্থাপন করতে হয় যাতে ঝড়, বৃষ্টি ও বাদলে সহজে পড়ে না যায়। চিমনির সর্বোচ্চ শিখরে লাল আলো দিতে হয় যেন উড়োজাহাজের চালকগণ অতি সহজেই বুঝতে পারে এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখে চালাতে পারে।

 

(২) কৃত্রিম ড্রাফ্‌ট :

স্বাভাবিকভাবে গ্রেটে বাতাস সরবরাহ করার পরিবর্তে কৃত্রিমভাবে অর্থাৎ বৈদ্যুতিক পাখা, ব্লোয়ার বা স্টীম জেট দ্বারা গ্রেটে বাতাস সরবরাহ করাকে কৃত্রিম ড্রাফ্ট বলে। কৃত্রিম ড্রাফটের কয়েকটি সুবিধা আছে। যেমন :

(ক) এটি সব আবহাওয়াতেই কাজ করতে সক্ষম।

(খ) নিম্নমানের জ্বালানি দ্বারা উত্তম ফ্লু–গ্যাস তৈরি করা যায়।

(গ) প্রয়োজন অনুসারে চুল্লির যে-কোন চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে কাজ করা যায়।

(ঘ) প্রাকৃতিক ড্রাফটের মত উচ্চ তাপের ফ্ল-গ্যাসের দরকার হয় না। এই ড্রাফটের অসুবিধার কারণ হলো এর প্রাথমিক ব্যয় খুব বেশী এবং এটি তাড়াতাড়ি মেরামতের প্রয়োজন হয়।

 

(ট) কাঠি (Damper) :

(ক) এটি এমন একটি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যার সাহায্যে গ্রেটে সরবরাহকৃত বাতাসকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

(খ) ফ্লু–গ্যাসের সরবরাহ কম বেশী করা যায়।

(গ) কোন নির্দিষ্ট বয়-লারে পরিমিত পরিমাণে বাতাস সরবরাহ করা যায়। এটি হস্তচালিত অথবা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত হয়। এটি সাধারণত লৌহ প্লেট দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে। বাষ্পচালিত ইঞ্জিন (steam engine) : বাষ্পচালিত ইঞ্জিন হিট ইঞ্জিনের অন্তর্গত। এই ইঞ্জিনের কয়েকটি সুবিধা আছে। যেমন : (ক) এটি খুব শক্তিশালী ইঞ্জিন, (খ) সাধারণত এই ইঞ্জিন, টু-স্ট্রোক ডবল অ্যাকটিং হয়ে থাকে, (গ) ক্র্যাঙ্কশ্যাফটের গতি উভয় দিকে করা যায়, (ঘ) এই ইঞ্জিন সহজে মেরামত করা যায়। বাষ্পচালিত ইঞ্জিনকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন :

(১) সিঙ্গল অ্যাকটিং ইঞ্জিন।

(২) ডবল অ্যাকটিং ইঞ্জিন।

(৩) কন্ডেন্সিং এবং নন-কন্ডেন্সিং ইঞ্জিন। 

(৪) সিম্পল এবং কম্পাউন্ড ইঞ্জিন।

 

আরও দেখুনঃ

 

2 thoughts on “বয়লারের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি”

Leave a Comment