আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ক্র্যাংককেস ভেন্টিলেশন প্রক্রিয়া
ক্র্যাংককেস ভেন্টিলেশন প্রক্রিয়া
ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশনের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা ( Purpose and Necessity of Crankcase Ventilation)
১. ইঞ্জিনের সাধারণ ওয়ার্কিং টেম্পারেচার বা কার্যকালীন তাপমাত্রা ১৬০° হতে ১৭০° ফা.। এ তাপমাত্রায় ইঞ্জিনে ব্যবহৃত অনেক তরলই গ্যাসিয়াস অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। এ ছাড়াও বায়ুমণ্ডল হতে মুক্ত বাতাসও ইঞ্জিন চলাকালে ইঞ্জিনের ক্র্যাংককেইস প্রবেশ করে, যা উল্লিখিত গ্যাসের সাথে যুক্ত হয়ে চাপের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এ সকল গ্যাসের চাপ বৃদ্ধিতে ক্র্যাংককেইসর বাইরের চাপ হতে বৃদ্ধি পায়।
এ চাপ যেন ইঞ্জিনের কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য ইঞ্জিন ক্র্যাংককেইস হতে এ গ্যাস অপসারণের একটি ব্যবস্থা থাকে।
সুতরাং ক্র্যাংককেইসের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত অপ্রয়োজনীয় গ্যাস বের করে দেওয়া অথবা অপসারণ করার প্রক্রিয়াকে এককথায় ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি বলে ।
২. কমপ্রেশন লিক করে ব্লো পাইপের মাধ্যমে ক্র্যাংককেইস গ্যাস প্রবেশ করে, কার্যকালীন তাপমাত্রায় গ্যাস উৎপন্ন হয়, বাতাস প্রবেশ করে এ গ্যাসের সাথে যুক্ত হয়। এ সকল গ্যাসে অক্সিজেন, সালফার ও কার্বন থাকে যা যন্ত্রাংশে অক্সিডাইজেশন ঘটায় ও লুব অয়েলের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে স্লাজ উৎপন্ন করে, যা অত্যন্ত তাড়াতাড়ি লুব অয়েলের গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়। সুতরাং এ জাতীয় গ্যাস ইঞ্জিনের জন্য ক্ষতিকারক শুধু নয়, দুর্ঘটনার কারণও হতে পারে ।
৩. ইঞ্জিনে অনাকাঙ্ক্ষিত অক্সিডাইজেশন, স্লাশ জমা ও মাত্রাতিরিক্ত চাপে ইঞ্জিনের বিস্ফোরণ ঘটানো প্রতিরোধকল্পে তা প্রত্যেকটি ইঞ্জিনেই এ ক্ষতিকারক গ্যাস অপসারণ করা অর্থাৎ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা রয়েছে। সুতরাং ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশনের উদ্দেশ্য হলো, ইঞ্জিন ক্র্যাংককেইসের ক্ষতিকারক গ্যাস অপসারণ করা আর প্রয়োজনীয়তা হলো ইঞ্জিনকে ক্ষতি বা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা ।
ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশনের প্রকারভেদ (Types of Crankcase Ventilation )
ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি প্রধানত দুই প্রকার । যথা :
১. সাধারণ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি (General Crankcase Ventilation Process
২. পজিটিভ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি (Positive Crankcase Ventilation Process)
আবার পজিটিভ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে । যথা :
ক. আংশিক বন্ধ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি (Partially closed Crankcase Ventilation Process)
খ. পূর্ণবন্ধ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি (Fully Clossed Crankcase Ventilation Process)
ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি (Description of the Crankcase Ventilation Process)
সাধারণ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি :
চিত্র : সাধারণ ফ্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি
এ পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডলীয় মুক্ত বাতাস টেপেট কভারের এয়ার ভেন্ট দিয়ে প্রবেশ করে বিভিন্ন ফাঁকা পথে ক্র্যাংককেইস আগমন করে। তারপর এ মুক্ত বাতাস, ইঞ্জিনে উৎপন্ন গ্যাসের সঙ্গে বা ভ্যাপারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্র্যাংককেইসের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী ডিসচার্জ পাইপের ভিতর দিয়ে যুক্ত বাতাসে বের হয়ে যায়।
এ গ্যাসসমূহ বিষাক্ত বিধায় এরা যুক্ত বাতাসে ডিসচার্জ হরে বাতাসকে দূষিত করতে থাকে। বায়ু দুষিতকরণ পৃথিবীতে আজ অন্যতম সমস্যা বিধার এ সাধারণ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতির ব্যবহার ইঞ্জিনে আজ পুরনো পদ্ধতি হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে রয়েছে । তাই আজকাল ইঞ্জিনে পজিটিভ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতির ব্যবহার সর্বাধিক।
পজিটিভ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধাতি :
এ পদ্ধতিতে ক্র্যাংককেইস হতে বিষাক্ত এ গ্যাসকে মুক্ত বাতাসে বের হতে না দিয়ে কম্বাশন চেম্বারের প্রেরণের ব্যবস্থা রাখা হয় এবং প্রজ্বলনের পর এগজস্ট দিয়ে বের করে দেয়। এর মুক্ত বাতাস প্রজ্বলনে অংশ নিতে পারে এবং অবশিষ্ট গ্যাস এগজস্ট গ্যাসের সঙ্গে বের হয়ে যায় । এ পদ্ধতিতে পজেটিভ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন সিস্টেম বলে। এ পজিটিত ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন আবার নিচের দুই প্রকারের
আশিক ংককেইসে ভেন্টিলেশন পদ্ধতি :
এ পদ্ধতিতে অয়েল ফিল্টার ক্যাপের মধ্য দিয়ে মুক্ত বাতাস ক্র্যাংককেইসে প্রবেশ করে, ক্র্যাংককেইনে উৎপন্ন গ্যাসের সঙ্গে সংমিশ্রিত হয়। ক্র্যাংককেইসে এ প্যাসের চাপ বৃদ্ধি পেলে, তা একটি হুচ্ছ পাইপের সংযোগের মধ্যে নিয়ে এয়ার ফুয়েল সংমিশ্রণের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে কম্বাশন চেম্বারে প্রবেশ করে। তারপর দহন ক্রিয়ার অংগ্রহণ করে, এগজস্ট পাইপ দিয়ে বের হয়ে যায় । ম্যাককেইসে ছক্ষের সংযোগস্থলে একটি অয়েল ট্রেপ থাকে যা লুব অয়েলের পমন প্রতিহত করে।
চিত্র : আংশিক বন্ধ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি
পূর্ণ বন্ধ ক্র্যাংককেইনে ভেন্টিলেশন পদ্ধতি
পূর্ণ বন্ধ ক্র্যাংককেইস ক্ষেত্রে মুক্ত বাতাস এয়ার ক্লিপার দিয়ে ক্র্যাংককেইসে প্রবেশ করে । তারপর অয়েল ট্রেপ কর্তৃক লুব অয়েল প্রতিহত হয়ে হুজ পাইপ দিয়ে ক্র্যাংককেইসের গ্যাস থ্রোটল ভালতের নিচে একটি ভাত পর্যন্ত পৌঁছায় যেখান হতে ইঞ্জিনের শোষণ ক্রিয়ার অংশগ্রহণ করে এবং পোড়া গ্যাস এগজস্ট দিয়ে বের হয়ে যায় । এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকারের প্রস্থাপন যেন ক্র্যাংককেইসে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রেম ট্রেপ ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্নমালা-৯
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর ।
২. সাধারণ জ্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি কী?
৩. আংশিক বন্ধ ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি কী?
৪. পূর্ণ বন্ধ জ্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতি কী?
৫. ক্রাংককেইস ভেন্টিলেশন কাকে বলে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতির প্রকারভেদ দেখাও।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। ক্র্যাংককেইস ভেন্টিলেশন পদ্ধতির ব্যাখ্যা কর ।
আরও দেখুন :