Site icon অটোমোটিভ গুরুকুল [ Automotive Gurukul ], GOLN

ই. এফ. আই. পদ্ধতির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের নাম

আজকের আলোচনার বিষয় ইলেকট্রনিক ফুয়েল ইনজেকশন (ই.এফ.আই. / EFI) পদ্ধতির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের নাম ও তাদের কার্যকারিতা। ই.এফ.আই পদ্ধতি আধুনিক অটোমোবাইল প্রযুক্তির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা গাড়ির ইঞ্জিনের জ্বালানি সরবরাহ প্রক্রিয়াকে আরও দক্ষ, নির্ভুল এবং পরিবেশবান্ধব করে তোলে। এই পাঠে আমরা ই.এফ.আই সিস্টেমের মূল উপাদানগুলো, তাদের ভূমিকা এবং কাজের পদ্ধতি বিশ্লেষণ করব।


এই অধ্যায়টি “অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “অটোমোবাইলের ইতিহাস” বিভাগের অন্তর্গত হলেও এর প্রযোজ্যতা ও গুরুত্ব বর্তমান আধুনিক যানবাহনে অপরিসীম। তাই শিক্ষার্থীরা এই অধ্যায় থেকে আধুনিক অটোমোবাইল প্রযুক্তির মৌলিক জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবে।

 

ই. এফ. আই. পদ্ধতির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের নাম

 

যে সকল যন্ত্রাংশ নিয়ে ই, এফ. আই. পদ্ধতি গঠিত :

ইলেকট্রনিক ফুয়েল ইঞ্জেকশন (EFI) পদ্ধতি আধুনিক অটোমোবাইল ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ ও নিয়ন্ত্রণের একটি অত্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা। এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ একসাথে সমন্বয় করে ইঞ্জিনের দক্ষতা বৃদ্ধি, জ্বালানি সাশ্রয় ও দূষণ কমানো সম্ভব হয়। নিম্নে ই.এফ.আই. পদ্ধতির গঠনে ব্যবহৃত প্রধান যন্ত্রাংশসমূহের তালিকা ও তাদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলো:

১। জ্বালানি পাম্প (Fuel Pump)

২। ইনার্শিয়া সুইচ (Inertia Switch)

৩। জ্বালানি ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিট (Fuel ECU – Electronic Control Unit)

৪। প্রধান রিলে (Main Relay)

৫। জ্বালানি রিলে ও পাম্প ব্লাস্ট রোধক (Fuel Relay & Pump Blast Preventer)

৬। বায়ু প্রবাহের মিটার (Air Flow Meter)

৭। ফুয়েল ইনজেক্টর ও ধারক ক্লিপ (Fuel Injector & Holder Clip)

৮। ফুয়েল ফিল্টার (Fuel Filter)

৯। থ্রোটল হাউজিং (Throttle Housing)

১০। এয়ার ভাল্ভ নিয়ন্ত্রক মোটর (Air Valve Control Motor)
– ইঞ্জিনের বাতাস প্রবাহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।

১১। থ্রোটল পটেনশিওমিটার (Throttle Potentiometer)
– থ্রোটলের অবস্থান নির্ণয় করে ECU-কে তথ্য প্রদান করে।

১২। জ্বালানি চাপ নিয়ন্ত্রক (Fuel Pressure Regulator)
– ইনজেকশনের জন্য নির্দিষ্ট চাপ বজায় রাখে।

১৩। জ্বালানি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক সুইচ (Fuel Temperature Sensor/Switch)
– জ্বালানির তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে।

১৪। শীতলীকরণ তাপমাত্রার মিটার (Cooling Temperature Sensor)
– ইঞ্জিনের তাপমাত্রা মাপতে ব্যবহৃত হয়।

১৫। জ্বালানি সরবরাহ লাইন (Fuel Supply Line)
– ট্যাঙ্ক থেকে ইনজেক্টর পর্যন্ত জ্বালানি পরিবহন করে।

১৬। জ্বালানি তৈল ফেরত যাওয়ার লাইন (Fuel Return Line)
– ব্যবহৃত ও অতিরিক্ত জ্বালানি ট্যাঙ্কে ফেরত পাঠায়।

১৭। জ্বালানি ট্যাঙ্ক ও ফেরত আসা তৈল পাত্র (Fuel Tank & Return Oil Reservoir)
– জ্বালানি সঞ্চয় ও অতিরিক্ত তেল ধারণ করে।

উল্লেখ্য, এই ই.এফ.আই. পদ্ধতির যন্ত্রাংশসমূহ বিশেষভাবে অস্টিন রোভার “O” সিরিজ ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা আধুনিক প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্য ও দক্ষ ইঞ্জিনের প্রতীক।

 

ইনজেক্টরের অবস্থান :

ইনজেক্টরের অবস্থান সাধারণত দুটি স্থানে হতে পারে:

() ইনটেক মেনিফোল্ডের বাতাস সরবরাহ ক্ষেত্র:
এই পদ্ধতিতে ইনজেক্টর থেকে জ্বালানি একক পয়েন্ট থেকে ইনটেক মেনিফোল্ডে সরবরাহ করা হয়, যা পরে বাতাসের সঙ্গে মিশে ইঞ্জিনে প্রবেশ করে। এই পদ্ধতিকে থ্রোটল বডি ইনজেকশন (Throttle Body Injection) বলা হয়। চিত্র ১৮.২-এ এই পদ্ধতির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।

() প্রত্যেক ইঞ্জিন সিলিন্ডারে পৃথক ইনজেক্টর:
এখানে প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য আলাদা ইনজেক্টর থাকে, যা সরাসরি সিলিন্ডারে জ্বালানি সরবরাহ করে। এই পদ্ধতিকে পোর্ট ইনজেকশন (Port Injection) বলা হয়। চিত্র ১৮.৩(ক) ও ১৮.৩(খ) তে এই পদ্ধতির বর্ণনা ও চিত্রায়ন দেওয়া হয়েছে।

 

 

ইনজেক্টরের নিয়ন্ত্রণ ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিট (.সি.ইউ):

উপরোক্ত যেকোনো ইনজেক্টর ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিট (ECU) অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। ECU ইনজেক্টরের মাধ্যমে সঠিক পরিমাণে ও সঠিক সময়ে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করে, যা ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা, জ্বালানি দক্ষতা এবং নির্গমন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

 

 

 

ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিটের গঠন:

ই.সি.ইউ বিভিন্ন সেন্সর (Sensors), ক্যাপাসিটর ও রোধক (Resistors) দ্বারা গঠিত একটি জটিল ইলেকট্রনিক সিস্টেম। চিত্র ১৮.৪-এ একটি ECU-এর অভ্যন্তরীণ গঠন ও বিভিন্ন সেন্সরের সাথে এর সংযোগের নমুনা প্রদর্শিত হয়েছে, যা ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ইনজেক্টর ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

Exit mobile version