ইনজেক্টর পরীক্ষা করার নিয়ম – এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “পেট্রোল জ্বালানি ব্যবস্থা” অধ্যায়ের একটি পাঠ।
ইনজেক্টর পরীক্ষা করার নিয়ম
ইনজেক্টর টেস্টারের সাহায্যে ইনজেক্টর পরীক্ষা করা হয়। একটি ইনজেক্টর টেস্টারের কার্যাবলী এবং গঠন ১০.১৭ চিত্রে দেখানো হয়েছে। এখানে ইনজেক্টর টেস্টারের কয়েকটি যন্ত্রের নাম উল্লেখ করা হলো। যেমন : (১) ফুয়েল ট্যাঙ্ক, (২) প্রেসার গেজ, (৩) সমন্বয়করণ স্ক্রু, (৪) প্রেসার পাইপ, (৫) লকিং নাট, (৬) ইনজেক্টর হোল্ডার, (৭) এয়ার বিল্ডিং স্ক্রু, (৮) হাই প্রেসার পাম্প, (৯) অপারেটিং আর্ম, (১০) শাট-অফ-কক।
নজল সমন্বয় করা বা পরীক্ষা করার নিয়ম নিম্নরূপ :
- (১) প্রথমে ফুয়েল ট্যাঙ্ক ডিজেল দ্বারা পূর্ণ করতে হবে।
- (২) ইনজেক্টর হোল্ডারে ইনজেক্টর ভালভাবে বাঁধতে হবে।
- (৩) এয়ার বিল্ডিং স্ক্রু ঢিলা করে পাম্প লিভার চালা না করে পাম্প হতে বাতাস বের করে দিতে হবে। প্রয়োজনবোধে ইনজেক্টর সংযোগ স্থলের নাট ঢিলা করে বাতাস বের করে দেওয়া যেতে পারে।
- (৪) পাম্প হতে সম্পূর্ণভাবে বাতাস বের করার পর নাট ও ক্রুসমূহ ভালভাবে আঁটাতে হবে। শাট-অফ-ককগুলি ভালভাবে খুলে দিতে হবে।
- (৫) এখন অপারেটিং হ্যান্ডেলের সাহায্যে বার বার হাত দ্বারা আঘাত করলে পাম্পে চাপ বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং ইনজেক্টর হতে তেল স্প্রে হবে। প্রেসার গেজে চাপ দেখাবে যে কত চাপে ইনজেক্টর স্প্রে করছে। যদি গেজের চাপ নির্মাতার দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী হয় তবে বুঝতে হবে যে ঠিক আছে। একই সময় তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে যেন স্প্রে হওয়ার পর স্প্রে টিপ ভিজা (অথবা শুকনা থাকে। যদি শুকনা থাকে তবে বুঝতে হবে নজল ভাল আছে। ভিজা থাকলে খারাপ আছে বুঝতে হবে ।
- (৬) হ্যান্ডেল যতই চালানো হোক না কেন চাপ মাটেই বাড়বে না অথবা কমবে না যতক্ষণ পর্যন্ত লক নাট ঢিলা করে সমন্বয়ের স্ক্রু কম বা বেশী করে সমন্বয় না করা হয় ।
- (৭) টিপ হোল জ্বালানি লিক করলে ইনজেক্টর খারাপ আছে বুঝতে হবে। ফুয়েল ভাল্ভ বা নজল ভাল্ভ খুলে লুব অয়েল অথবা ইনজেক্টর গ্রাইন্ডিং পাউডার দ্বারা গ্রাইন্ডিং করে পুনরায় ইনজেক্টরটি পরীক্ষা করলে যদি ঠিক না হয় তবে বদলী করতে হবে।
ইনজেক্টর পরীক্ষা করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, ইনজেক্টরের স্প্রে সরাসরি শরীরের কোন অংশে না লাগে। লাগলে লোমকূপের মধ্যে দিয়ে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে ডিজেল রক্তের সাথে মিশে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। স্প্রে ঠিকমত হলে ইনজেক্টরের সম্মুখে সাদা কাগজ ধরলে দেখা যাবে স্প্রের আঘাতে কাগজটি ঝাঁঝরা হয়ে গেছে এবং ইনজেক্টরের মুখ তখনও শুকনা আছে। এতে বুঝা যাবে ইনজেক্টর ভাল আছে।
(১) জ্বালানি ট্যাঙ্ক পরিষ্কার রাখা উচিত।
(২) জ্বালানি ছাঁকনি (প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী) পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন ।
(৩) জ্বালানি পাম্প এবং ইনজেক্টরের সংযোগ এঁটে রাখা উচিত। এর অন্যান্য যন্ত্রগুলি পরিষ্কার রাখা উচিত।
(৪) ইঞ্জিন থেকে জ্বালানি পাম্প এবং ইনজেক্টর পৃথক করলে পাইপের মুখসমূহ
পরিষ্কার রাখা উচিত।
(৫) ইনজেক্টরের ছাঁকনি থাকলে পরিষ্কার রাখতে হবে।
(৬) স্প্রে টিপ হোল পরিষ্কার রাখতে হবে।
(৭) প্রয়োজনবোধে ইনজেক্টরের চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
(৮) ইঞ্জিনের তাপমাত্রার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত।
জ্বালানি ইনজেকশন নির্দিষ্ট সময়ের পূর্ব ও পরে হলে এর নিম্নরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। (১) কালো ধুম্র বের হবে অ্যাডভ্যান্স হলে, আর সাদা ধুম্র বের হবে রিটার্ড হলে, (২) জ্বালানি খরচ বেশী হবে, (৩) পাওয়ার কম উৎপন্ন হবে, (৪) ইঞ্জিন গরম হবে, (৫) ফুয়েল সম্পূর্ণ জ্বলতে পারবে না, (৬) ইঞ্জিনে নকিং হবে।
আরও দেখুনঃ
- কুলিং এবং ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- ক্লাচের প্রকারভেদ | কুলিং এবং ট্রান্সমিশন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- মোটর গাড়ীর অয়েল লেভেল ইনডিকেটর | মোটর গাড়ীর বিভিন্ন পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং
- লুবরিকেটিং পাম্পের বিভিন্ন অংশের নাম | মোটর গাড়ীর বিভিন্ন পদ্ধতি | অটোমোবিল -ইঞ্জিনিয়ারিং
- মোটর গাড়ীর লুবরিকেটিং পদ্ধতি | মোটর গাড়ীর বিভিন্ন পদ্ধতি | অটোমোবিল- ইঞ্জিনিয়ারিং
- বাংলাদেশের মোটরগাড়ি শিল্প