Site icon অটোমোটিভ গুরুকুল [ Automotive Gurukul ], GOLN

অটোমোবাইল লুব্রিকেশন

অটোমোবাইল লুব্রিকেশন

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-অটোমোবাইল লুব্রিকেশন

অটোমোবাইল লুব্রিকেশন (Automobile Lubrication)

বিভিন্ন প্রকার সুব্রিক্যান্ট (Different Types of Lubricants) : ব্যবহারিক ধরন অনুযায়ী লুব্রিক্যান্ট প্রধানত ৬ প্রকার যথা-

ক. স্পিন্ডল অয়েল (Spindle Oil)

খ. গিয়ার অয়েল (Gear Oil)

গ. স্লাইডওয়ে অয়েল (Slideway Oil)

ঘ. গ্রিজ অয়েল (Grease Oil)

৫. এয়ার (Air) বা gas

চ. গ্রাফাইট (Graphite)

ব্যবহারিক উদ্দেশ্য অনুযায়ী লুব্রিক্যান্ট প্রধানত দুই প্রকার। যথা-

i) স্ট্রেইট মিনারেল অয়েল (Straight Mineral Oil)

ii) হাইড্রোলিক অয়েল (Hydraulic Oil)

বিভিন্ন প্রকার লুব্রিক্যান্টের বর্ণনা :

ক. স্পিন্ডল অয়েল : এটা এক প্রকার অল্প আঠালো লুব্রিক্যান্ট। এতে আবহাওয়াজনিত কারণে ক্ষয়রোধী গুণ আছে। সকল প্রকার স্পিন্ডল বা শ্যাফট এবং বেয়ারিং তৈলাক্ত করতে স্পিন্ডল অয়েল ব্যবহৃত হয়।

খ. গিয়ার অয়েল : গিয়ার অয়েল উত্তমরূপে বিশুদ্ধকৃত একপ্রকার লুব্রিকেটিং অয়েল। এটার সাথে মরিচা এবং ক্ষয়রোধকারী কেমিক্যাল মিশ্রিত থাকে। অধিক ভার বহনক্ষম কার্যরত গিয়ারকে প্রেসার বা বাথ (Bath) লুব্রিকেশন পদ্ধতিতে তৈলাক্ত করতে এ গিয়ার অয়েল ব্যবহৃত হয়।

গ. স্লাইডওয়ে অয়েল : এটা উত্তম রূপে বিশুদ্ধকৃত একপ্রকার খনিজ তেল। এটা যন্ত্রাংশের গায়ে উত্তমরূপে মেখে গিয়ে পিচ্ছিল করার এবং ঘর্ষণজনিত কারণে ক্ষয়রোধী গুণসম্পন্ন হয় ।

ঘ. এয়ার বাভাসও এক ধরনের লুব্রিক্যান্ট যা খেলনা, ছোট যন্ত্রপাতিতে প্রয়োজন হয় ।

i) স্ট্রেইট মিনারেল অয়েল : স্ট্রেইট মিনারেল অয়েল এক প্রকার খনিজ তেল। এতে মরিচা ও ক্ষয়রোধকারী কেমিক্যাল মিশ্রিত থাকে। বেয়ারিং, গিয়ারিং, স্লাইডওয়ে এবং লিড স্ক্রু যা অল্পচাপে কার্যরত থাকে এক তৈলাক্ত করতে স্ট্রেইট মিনারেল অয়েল ব্যবহৃত হয়।

ii) হাইড্রোলিক অয়েল : হাইড্রোলিক অয়েল উত্তরূপে বিশুদ্ধকৃত একপ্রকার খনিজ তেল। এ অয়েলে আবহাওয়াজনিত কারণে ক্ষয়রোধী গুণ আছে। হাইড্রোলিক অয়েল প্রধানত হাইড্রোলিক পদ্ধতির জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে এতে স্পিন্ডল, স্লাইডওয়ে এবং গিয়ার তৈলাক্ত করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

এ ছাড়াও কার্যক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার লুব্রিকেন্টের নাম নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হলো :

১। প্রাণিজ চর্বিজাত তেল (Animal fat oil)

২। বীজজাত তেল (Seed Oil), ৩। উদ্ভিদজাত তেল (Vegetable Oil)

 

অটোমোবাইল লুব্রিকেশন

২৩.২ অটোমোবাইল গ্রিজিং-এর প্রয়োজনীয়তা:

প্রপেলার শ্যাফট-এর ইউনিভার্সেল জয়েন্ট, কিং পিন, বল জয়েন্ট, টাইরড এন্ড এ গ্রিজিং করতে হয়। এসব স্থানে গ্রিজিং করলে উক্ত যন্ত্রাংশ সহজে ঘর্ষণহীন চলতে পারে ফলে ক্ষয় কম হয়। অন্যথায় মুভিং পার্টস গরম হবে এবং তাড়াতাড়ি নষ্ট হবে। অতএব ইঞ্জিনে গ্রিজিং-এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ।

ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারের গুরুত্বঃ

লুব অয়েলের পরিমাণ নির্ধারণ করে ইঞ্জিন পরিচালনা করতে হয়। কম বা বেশি পরিমাণ লুব অয়েল থাকলে ইঞ্জিনের ক্ষতি সাধিত হবে এমনকি ইঞ্জিন আটকে যেতে পারে। লুব অয়েলের মাত্রা জানার জন্য ডিপস্টিকের প্রয়োজন ।

প্রথমে ইঞ্জিন হতে ডিপস্টিক বের করে ভালোভাবে মুছে নিতে হবে, পরে আবার ইঞ্জিনের ভেতর সম্পূর্ণটি প্রবেশ করাতে হবে এবং তা বের করে এনে দেখতে হবে লুব অয়েলের পরিমাণ। স্টিকের গায়ে মিনিমাম লেখা থাকে, মেক্সিমাম মানে যদি দাগে ইঞ্জিন অয়েল থাকে তাহলে বুঝতে হবে ঠিক আছে, কম থাকলে আরও ঢালতে হবে। বেশি থাকলে কমাতে হবে। অতএব ইঞ্জিনে লুব ব্যবহারের গুরুত্ব অনস্বীকার্য ।

ডিফারেন্সিয়ালে অয়েল ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা :

ডিফারেন্সিয়াল ইঞ্জিনের উৎপাদিত শক্তিকে প্রপেলার শ্যাফটের মাধ্যমে গ্রহণ করে দুই পাশের এক্সেলে শক্তি বণ্টন করে। ডিফারেন্সিয়ালে অয়েলের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য ডিফারেন্সিয়াল হাউজিং-এর মধ্যখানে একটি নাট লাগানো থাকে। সেই নাটটি খুলে যদি ঐ নাটের লেভেল পর্যন্ত অয়েল থাকে, তাহলে বুঝতে হবে। ঠিক আছে। কম হলে আরও অয়েল যোগ করতে হবে। বেশি হলে ফেলে দিতে হবে।

 

 

গিয়ার বক্সে অয়েল ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা :

ইঞ্জিনের উৎপাদিত শক্তিতে গাড়ির গতির চাহিদা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমকেই ট্রান্সমিশন সিস্টেম বলে।

ট্রান্সমিশন গিয়ার বক্স সাধারণত দুই প্রকার :

১. অটোমেটিক গিয়ার বক্স ও

২. ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স।

১. অটোমেটিক গিয়ার বক্স অটোমেটিক গিয়ার বক্সে গিয়ার ফ্লুইডের সাহায্যে ইঞ্জিনের আর.পি.এম-এর উপর নিয়ন্ত্রত হয়। এই গিয়ার বক্সের পিয়ার অয়েল নির্ধারণের জন্য একটি ডিপস্টিক থাকে। ডিপস্টিকের শেষ প্রান্তে একটু উপরে একটি খাঁজ এবং তার আরেকটু নিচে আরেকটি খাঁজ কাটা থাকে। কোনো কোনো পাড়িতে তিনটি খাঁজ থাকে এবং স্টিকের গায়ে লেখা থাকে।

অর্থাৎ গাড়ি থামানো ও স্টার্ট বন্ধ অবস্থায় মাপলে অবস্থানে অয়েল থাকলে বোঝা যাবে অয়েলের মাত্রা ঠিক আছে এবং গাড়ি স্টার্ট অবস্থায় মাপলে অবস্থানে অয়েল থাকলে বোঝা যাবে অয়েলের মাত্রা ঠিক আছে ইন্ডিকেট করলে বোঝা যাবে ঠিক আছে। এর চেয়ে কম হলে ঢেলে পরিমাণ ঠিক করতে হবে এবং বেশি হলে কমাতে হবে। কিন্তু প্রতিবার মাপ দেয়ার পূর্বে ডিপস্টিক উঠিয়ে ভালোভাবে মুছে পুনরায় ঢুকাতে হবে।

২. ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স কোনোটি কোনো গাড়ির ক্ষেত্রে গিয়ার বক্সের অয়েল পরিমাপ করার জন্য ডিপস্টিক থাকে। পদ্ধতিটি ডিফারেন্সিয়ালের অনুরূপ।

অটোমোটিভ ট্রান্সমিশন ফ্লুইড (ATF) ও ব্রেক অয়েলের গুরুত্ব অটোমোটিভ ট্রান্সমিশন ফ্লুইড (ATF) ও ব্রেক অয়েলের গুরুত্ব অপরিসীম। অটোমোটিভ ট্রান্সমিশন সিস্টেমের যথার্থ ও সঠিক কার্যকারিতার জন্য নির্দেশিত ট্রান্সমিশন ফ্লুইড ও ব্রেক অয়েল বিকল্প নেই। এ ফ্লুইড পুরু সিস্টেমের কার্যকারিতার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

 

প্রশ্নমালা- ২৩

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :

১. গ্রিজিং কী?

২. গ্রিজিং-এ অয়েলের মাত্রা জানার জন্য কী প্রয়োজন?

৩. অয়েলের পরিমাপ জানার জন্য স্টিকের গায়ে কেন লেখা হয় ?

৪. ডিফারেন্সিয়াল কী?

৫. ট্রান্সমিশন গিয়ার বক্স কত প্রকার ও কী কী ?

৬. ট্রান্সমিশন পদ্ধতি কাকে বলে?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :

১. থ্রিজিং এর প্রয়োজনীয়তা লেখ ।

২. ডিফারেন্সিয়াল বলতে কী বোঝায়?

রচনামূলক প্রশ্ন :

১. ট্রান্সমিশন পদ্ধতি বলতে কী বোঝায়? এটি কত প্রকার ও কী কী? বর্ণনা কর ।

২. ডিফারেন্সিয়াল অয়েল ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা দেখাও ।

৩. গিয়ার বক্স অয়েল ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা লেখ।

৪. ইঞ্জিন মবিল ব্যবহারের গুরুত্ব আলোচনা কর।

আরও দেখুন :

 

Exit mobile version