আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হাইড্রোলিক ব্রেক সিস্টেমের কৌশল
হাইড্রোলিক ব্রেক সিস্টেমের কৌশল
হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমের বয়াংশ শনাক্তকরণ
নিয়ে ব্রেক সিস্টেমে ব্যবহৃত মুখ বন্ত্রাংশ সনাক্তকরণের নিমিত্তে ছবি ক্ষপ্ত বর্ণনা প্রদান করা হলো:
ব্রেক প্যাডেল:
প্রত্যেক প্রকার ব্রেক সিস্টেমেই চালকের পারের নাগালের মধ্যে একটি প্যাডেল থাকে। এটা ব্রেক প্যাডেল নামে পরিচিত। গাড়িতে যখন তিনটি প্যাডেল পাশাপাশি থাকে, সে ক্ষেত্রে মধ্যবর্তী প্যাডেলটি ব্রেক প্যাডেল। এ ব্রেক প্রয়োগের মাধ্যমে চালক গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ।
চিত্র : ব্রেক প্যাডেল
মাস্টার সিলিন্ডার :
এটা সাধারণত ইঞ্জিন প্রকোষ্ঠে ব্রেক ফ্লুইডের একটি রিজার্ভারসহ বসানো থাকে। একটি ছোট পুশ রডের মাধ্যমে এটা ব্রেক প্যাডেলের সাথে যুক্ত থাকে। এটা ব্রেক লাইনের মাধ্যমে প্যাসকেল-ল এর ভিত্তিতে হুইল সিলিন্ডারে ফ্লুইডের চাপ সরবরাহ ও বর্ধিত করে থাকে ।
প্রেসার ডিফারেন্স তালত/কম্বিনেশন ভাত:
দ্বৈত হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমে এ জাতীর একটি ভালত ব্যববহার করা হয়। কোনো
কারণে একটি ভাত কেটে গেলে এটা অন্য লাইনকে সচল রাখে এবং অকার্যকারিতার জন্য চালককে ওয়ার্নিং সিগন্যাল প্রদান করে।
রেখাচিত্রের সাহায্যে হাইড্রলিক ব্রেকের কারজপ্রনালি
অধিকাংশ হালকা মোটরগাড়িতে একক লাইন যুক্ত হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেম ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিধায় এ জাতীয় একটি ব্রেক সিস্টেমের কার্যপ্রণালি বর্ণনা করা হলো: মাস্টার সিলিন্ডারের রিজার্ভার হতে বাহিত হাইড্রলিক ফ্লুইড দ্বারা বায়ুমণ্ডলের চাপ হতে কিছুটা অধিক চাপে ব্রেক লাইন সর্বদা পরিপূর্ণ থাকে । পাড়ির চালক যখন পাড়ির গতি মন্থর করতে চায় বা খামাতে চায় তখন ব্রেক প্যাডেলে পা দ্বারা চাপ প্রয়োগ করে থাকে।
তখন পুশ রড মাস্টার সিলিন্ডার অবস্থিত পিস্টনকে রিটেনার স্প্রিং এর বিপরীতে সম্মুখ দিকে গুণ করে। ফলে ব্রেক লাইনে অবস্থিত ব্রেক ফ্লুইডের উপর চাপ পড়ে এবং প্রাপ্তসমূহের সামগ্রিক ব্যাস মাস্টার সিলিন্ডার হতে কয়েকগুণ বেশি বিধায় এ চাপও প্যাসকেল– মোতাবেক কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
চিত্র : মাস্টার সিলিন্ডার
তারপর হুইল সিলিন্ডারের পিস্টনের ধাক্কায় ব্রেক ল্যু সম্প্রসারিত হয়ে লিডিং ও টেলিং/টু-ইন লিডিং পদ্ধতিতে ব্রেক ড্রামের গতি মন্থর করে বা সম্পূর্ণ থামিয়ে দেয় এবং ব্রেকিং কার্য সম্পন্ন করে। ব্ৰেক স্যু জোড়া ভিত্তিক থাকে বিধায় ইহাদের দুটিকে রিটেনার স্প্রিং দ্বারা সংযুক্ত করা থাকে।
চালক ব্রেক প্যাডেল হতে চাপ অপসারণ করলে এ রিটেনার স্প্রিংয়ের চাপে স্যুয় আবার পূর্বাবস্থার ফেরত আসে এবং মাস্টার সিলিন্ডার হতে অপসারিত ফ্লুইড আবার স্বস্থানে ফেরত আসে। তখন গাড়ি আবার ব্রেকমুক্ত হয় এবং চলতে আরম্ভ করে ।
ব্রেক ড্রাম অ্যাসেম্বলি :
এটা একটি ব্রেক ড্রাম, একজোড়া ব্রেক স্ম একটি/দুটি হুইল সিলিন্ডার ও ধাতু নির্মিত একটি ব্যাক প্লেট নিয়ে গঠিত। ড্রামটি চাকার সাথে যুক্ত থেকে ঘোরে বিধায় এতে বাধা হইলও আবর্তিত হয়ে গাড়িকে গতিশীল করে। প্রয়োজনে স্যু জোড়া বর্ধিত হয়ে ড্রামের আবর্তন বন্ধ করে ও ব্রেকিং কার্য সম্পন্ন করে। ড্রাম ব্রেক সিস্টেমে প্রতিটি ঢাকার এ জাতীয় একটি অ্যাসেম্বলি ইউনিট থাকে। এটা বর্ষণ জনিত প্রতিক্রির কাজ করে গড়িকে নিয়ন্ত্রণ করে।
ডিক্স ব্রেক অ্যাসেম্বলি :
অতিরিক্ত ব্রেক প্রশ্নোপজনিত কারণে অনেক সময় ড্রাম ব্রেক মাত্রাতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে ব্রেক প্যাড জ্বলে যায়। এটা প্রতিরোধকল্পে আজ-কাল অনেক গাড়িতে কেমিক্যাল যুক্ত ভিন্ন ব্রেক ব্যবহৃত হয়। এতে গ্রামের পরিবর্তে একটি ধাতু নির্মিত ডিক্স ও স্যু-এর পরিবর্তে ব্রেক প্যাড ব্যবহৃত হয়।
হইল সিলিন্ডার :
গ্রাম অ্যাসেম্বলি ব্যবহৃত হুইল সিলিন্ডার সাধারণত একমুখী ও দ্বিমুখী হয়। একমুখী হুইল সিলিন্ডার লিভিং অ্যান্ড টেলিং স্যু পরিচালনা করে। অন্যদিকে দ্বিমুখী হুইল সিলিন্ডার টু-ইন-লিডিং স্যু পরিচালনা করে। সাধারণত একমুখী হুইল সিলিন্ডার পিছনের চাকার ও দ্বিমুখী হইল সিলিন্ডার সম্মুখ ঢাকার অ্যাসেম্বলিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমের সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধাসমূহ:
১। হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমের যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম ও সংযোগ অন্যান্য ব্রেক সিস্টেম তথা পাওয়ার ও এয়ার ব্রেকের তুলনায় হালকা, সহজ ও সরল বিধায় এ সিস্টেম ছোট মাঝারি ও দ্রুতগামী গাড়িসমূহের যথার্থ ও প্রয়োগ উপযোগী।
চিত্র : হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেম
২। দ্বৈত হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমে ডুয়েল ভাত অথবা প্রেসার ডিফারেন্সিয়াল ওয়ার্নিং ভাদৃত সংযোগের ব্যবস্থা থাকে যা অন্য কোনো ব্রেক সিস্টেম থাকে না। এটা ব্যবহারের সুবিধা হলো একটি লাইন কেটে গেলে/ফেটে গেলে/বাকেট মিস করলে অন্য লাইনটি তখন কার্যকর থেকে গাড়িকে দুর্ঘটনামুক্ত রাখে।
৩। এ সিস্টেমে ব্রেকিং কাজে অনেক ক্ষেত্রেই দ্রুত গতির গাড়ি থামাতে সম্মুখ চাকাইরে সর্বাধিক চাপ প্রয়োগ করার জন্য মোট চাপ হতে প্রয়োজনে ৬০ হতে ৭০ ভাগ সম্মুখ চাকাতে সরবরাহ করাতে হয়। এ কাজটি অনেক ক্ষেত্রে মাস্টার সিলিন্ডার অথবা প্রেসার ডিফারেন্সিয়াল ভাত করে থাকে, অন্য ব্রেক সিস্টেমে এ সুবিধা পাওয়া যায় ।
৪। সাধারণত সম্মুখ চাকাতে দুটি স্যু লিডিং হিসেবে কাজ করে আর পশ্চাৎ চাকাতে একটি স্যু লিডিং ও অপরটি টেলি স্যু হিসাবে কাজ করে। সম্মুখ ঢাকাতে ব্রেকিং দক্ষতা বাড়ানো এবং পশ্চাৎ ঢাকার টেলিং স্যু গাড়ি পিছনে চালাতে আবার লিডিং স্যু হয়ে যায়। সুতরাং সম্মুখ ও পিছনে চালার যে সুবিধা এ ব্যবস্থার পাওয়া যায় এয়ার ব্রেকে তা পাওয়া সম্ভব নয় ।
অসুবিধাসমূহ:
১ । সাধারণত একক লাইন যুক্ত হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমের লিকেজ পুরো সিস্টেমকে অকার্যকর করে দেয় এবং এ অকার্যকারিতার জন্য এ জাতীয় ব্রেক সিস্টেমযুক্ত গাড়ি ব্রেক ফেইলরজনিত দুর্ঘটনায় পতিত হয় ।
২। এয়ার লক হবে এ সিস্টেমের একটি সাধারণ ত্রুটি যা প্রতিনিয়তই ঘটতে পারে। এ জাতীয় এয়ার লক হলে হাইড্রলিক ব্রেক প্যাডেলে প্রতিক্রিয়া অনুভূত হয় এবং ব্লিডিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিনিয়তই এ সমস্যার সমাধান করতে হয় । যা এয়ার ব্রেকের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় না ।
৩। হাইড্রলিক ব্রেকযুক্ত গাড়িতে স্টিল পাইপ ব্যবহার করতে হয় আর দৈর্ঘ্য সংকোচন ও প্রসারনের কোনো অবকাশ নেই । তাই এ জাতীয় ব্রেক সিস্টেম ট্রেলার যুক্ত গাড়িতে ব্যবহার করা যায় না ।
৪ । হাইড্রলিক ব্রেকযুক্ত গাড়ি কোনো উঁচু স্থানে উঠতে/পাহাড়ি রাস্তায় চলতে বার বার ব্রেক কষতে হয় । তাই ড্রাম মাত্রাতিরিক্ত গরম হয়ে পড়ে । ফলে ব্রেক স্যু/প্যাড ক্ষয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে ব্রেক তার কার্যকারিতা হারায় ।
৫। এর মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও হাইড্রলিক ফ্লুইডের মাত্রা নিরীক্ষণ একটি নিয়মিত কাজ যা সম্পর্কে কোনো গাড়ি যাত্রা আরম্ভ করার পূর্বে নিশ্চিত থাকতে হয় ।
প্রশ্নমালা-১২
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. হাইড্রলিক ব্রেক কি ?
২. হাইড্রলিক ব্রেক পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি ?
৩. হাইড্রলিক ব্রেক পদ্ধতির যন্ত্রাংশসমূহের নাম লেখ ।
৪. হাইড্রলিক ব্রেক পদ্ধতিতে কি কি সিলিন্ডার থাকে?
৫. হাইড্রলিক ব্রেক পদ্ধতি কোনো সূত্রভিত্তিক কাজ করে ?
৬. ব্রেক প্যাড কী?
৭. লিডিং ও টেলিং স্যু কোথায় ব্যবহার হয়?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমের সুবিধা ও অসুবিধা লেখ।
২. হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমের যন্ত্রাংশের নাম লেখ ও বর্ণনা কর ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. রেখাচিত্রের সাহায্যে হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেমের কার্যপ্রণালি বর্ণনা কর ।
আরও দেখুন :