স্ক্রেপারের ধরন – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।
স্ক্রেপারের ধরন
স্ক্রেপার (Scraper)
মেশিনের সাহায্যে এবং ফাইল দ্বারা ধাতুর উপরিভাগ মসৃণ করার চেষ্টা করা হয়। যন্ত্রাংশ সংযোজন করার সময় কখনও কখনও কিছু অমসৃণ অংশ ধরা পড়ে, এসব অংশ স্ক্রেপারর সাহায্যে দূরীভূত করা হয়। স্ট্রেপার সাধারণত কাস্ট স্টীলের তৈরী হয়। বাজারে
সাধারণত তিন ধরনের স্ট্রেপার দেখা যায়।
১. ফ্ল্যাট স্ট্রেপার (Flat scraper)
২. হাফ রাউন্ড স্ট্রেপার (Half round scraper )
৩. টায়াঙ্গুলার স্ক্রেপার (Triangular scraper)।
কল-কারখানায় প্রায়ই পুরানো ফাইল থেকে স্ট্রেপার তৈরী করা হয়। এই সকল ক্ষেত্রে ফাইলের অগ্রভাগের দাঁতগুলিকে গ্রাইন্ডিং করে যথোপযুক্ত কাটিং এজ (cutting edge) তৈরী করা হয় এবং পরে অয়েল স্টোন বা শানপাথরে ঘর্ষণ করে ধার তীক্ষ্ণ করা হয় ।
বস্তুর উপরিভাগ স্ট্রেপারের সাহায্যে আস্তে আস্তে সামান্য মসৃণ করার প্রণালীকে স্কেপিং বলা হয়। ফাইলের ন্যায় স্ট্রেপারও সামনের দিকে চলার সময় ধাতু ক্ষয় করে থাকে। স্ক্রেপারর উপর চাপ কি পরিমাণে দিতে হবে তা নির্ভর করে ধাতু কি পরিমাণে নরম এবং কি হারে ক্ষয় করা প্রয়োজন তার উপর। বিভিন্ন প্রকার কাজে বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেপার ব্যবহারের একটি প্রণালী ১.৬৬ চিত্রে দেখানো হলো।
স্ক্রেপারর এক প্রান্তের ধার বা তীক্ষ্ণতা নষ্ট হয়ে গেলে অন্য প্রান্ত ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু উভয় প্রান্তের তীক্ষ্ণতা কমে গেলে শানপাথরের সাহায্যে তীক্ষ্ণতা বৃদ্ধি করতে হয়। স্ট্রেপার দৃঢ়ভাবে রেখে যে স্থানে ক্ষয় করা প্রয়োজন কেবল সেই স্থানে তা চালনা করতে হবে।
প্রতিবার আনুমানিক ১২ মি. মি. বা ” দৈর্ঘ্যের বেশী চালনা করা উচিত নয় এবং ০.০৫ হতে ০.০৭৫ মি.মি. এর (বা ০০২ হতে ০০৩”)-র বেশী গভীর করে চালনা করা উচিত নয়। স্ট্রেপিং করার সময় ছিদ্র থাকলে তার উপর স্ট্রেপিং না করে বরং তার চারদিক সযত্নে স্ট্রেপিং করা বাঞ্ছনীয়। শেল বিয়ারিং (Shell bearing) বা অর্ধ-গোলাকার বস্তু স্ট্রেপিং করার সময় এর দৈর্ঘ্যের দিকে চালনা না করে বরং এর গহ্বরের দিক ক্রমে ক্রমে চালনা করা দরকার। সমতল বস্তুর উপরিভাগ স্ট্রেপিং করার পর এটি সমতল সারফেস প্লেটের সাহায্যে পরীক্ষা করা হয়।
পরীক্ষা প্রণালী
সমতল বস্তুটিকে ১.৬৭ চিত্র অনুযায়ী সারফেস প্লেটের উপর রাখতে হবে। বস্তুটি রাখার পূর্বে সারফেস প্লেটের উপর হালকাভাবে রং লাগিয়ে দিতে হবে এবং চিত্রের তীরচিহ্ন অনুসারে ঘর্ষণ করতে হবে। এর ফলে সমতল বস্তুটির কোন অংশ উঁচু থাকলে সেখানে রং লাগবে। এমতাবস্থায় বস্তুটি উল্টালে ১.৬৮ (ক-খ) চিত্রের ন্যায় দেখা যাবে। যেসব অংশে রং লেগেছে সেসব অংশ পুনরায় ঘর্ষণ করে সমতল করতে হবে, তারপর সারফেস প্লেটের উপর পূর্বের ন্যায় স্থাপন করে পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
গোলাকার শ্যাফটের জন্য দুই অংশে তৈরী বুশ বিয়ারিং নিখুঁতভাবে লাগানোর জন্য ১.৬৯ চিত্র অনুযায়ী স্ক্রেপিং করে কাজ করা যায়। অয়েল স্টোন দ্বারা স্ট্রেপার ধার বা শান দওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি ১, ৭০, ১, ৭১ এবং চিত্রে দেখানো হলো।
স্ট্রেপার ব্যবহারে সতর্কতা
(১) স্ট্রেপার ব্যবহার করার সময় হাতে অথবা স্ট্রেপারের হাতলে যেন ঘাম, তেল অথবা গ্রীজ না লাগে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। নচেৎ স্ক্রেপার পিছলে হাত জখম হতে পারে।
(২) স্ট্রেপার চালানোর সময় উভয় হাত এমনভাবে রাখতে হবে যেন ধাতু খণ্ডের কোণে আঘাত না লাগে।
(৩) স্ট্রেপার কখনও নিজের দেহের দিকে চালানো উচিত নয়। এতে বিপদের সম্ভাবনা থাকে।
আরও দেখুনঃ
1 thought on “স্ক্রেপারের ধরন”