তাপ ইঞ্জিন

তাপ ইঞ্জিন – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।

 

Table of Contents

তাপ ইঞ্জিন

 

তাপ ইঞ্জিন

 

যেসব ইঞ্জিন তাপ শক্তিকে পাথেয় করে চলে তাকে তাপ (heat) ইঞ্জিন বলে। যেমন— ডিজেল ইঞ্জিন, পেট্রোল ইঞ্জিন এবং স্টীম ইঞ্জিন।

 

ইঞ্জিন এবং মেশিনের মধ্যে পার্থক্য

ইঞ্জিন তাপ শক্তিকে পাথেয় করে নিজেই শক্তি উৎপন্ন করে এবং তার নিজস্ব শক্তি দিয়েই চলে। যেমন— মোটরগাড়ীসমূহ। কিন্তু মেশিন নিজে কোন শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না। অন্যের দেয়া শক্তিতে চলে এবং কাজ করতে পারে। যেমন—লেদ মেশিন, মিলিং মেশিন, বোরিং মেশিন, সেফার মেশিন, হোনিং মেশিন ইত্যাদি মেশিন বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে চলে এবং বিভিন্ন কাজ করতে পারে। উভয় ক্ষেত্রে মানুষ শুধু নিয়ন্ত্রণ করে। ইঞ্জিন (অটোমোবিল) একস্থান হতে অন্যস্থানে চলে যেতে পারে কিন্তু মেশিন তা পারে না।

 

পৃথিবীর সকল ইঞ্জিনকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, 

১। অন্তর্দাহ ইঞ্জিন (internal combustion engine

২। বহির্দাহ ইঞ্জিন (external combustion engine)

১। অন্তর্দাহ ইঞ্জিন : যে ইঞ্জিনের দহনকার্য সিলিন্ডারের মধ্যে সম্পন্ন হয় তাকে অন্তর্দাহ ইঞ্জিন বলে। ডিজেল ইঞ্জিন এবং পেট্রোল ইঞ্জিন অন্তর্দাহ ইঞ্জিনের অন্তর্ভুক্ত। অন্তর্দাহ ইঞ্জিনকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।  যথা :

  • ১। টু-স্ট্রোক ইঞ্জিন।
  • ২। ফোর-স্ট্রোক ইঞ্জিন।

টু-স্ট্রোক পেট্রোল এবং ডিজেল ইঞ্জিন হতে পারে। ফোর-স্ট্রোক পেট্রোল এবং ডিজেল

ইঞ্জিন হতে পারে।

 

স্ট্রোক

পিস্টন সিলিন্ডারের মধ্যে একবার টিডিসি হতে বিডিসি অথবা একবার বিডিসি হতে টিডিসি পর্যন্ত উঠানামাকে স্ট্রোক বলে। (চিত্র ২১ দ্রষ্টব্য)।

 

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

টু-স্ট্রোক ইঞ্জিন : 

যে ইঞ্জিনে পিস্টন দুবার উঠানামা করে অর্থাৎ একবার টিডিসি হতে বিডিসিতে নামে এবং আবার বিডিসি হতে টিডিসিতে উঠে এবং ক্র্যাঙ্কশ্যাফট ৩৬০ ঘুরে এসে শক্তির সৃষ্টি করে তাকে টু-স্ট্রোক সাইকেল ইঞ্জিন বলে। যেমন—৫০ সিসি হো. ডা, ১০০ সিসি হোন্ডা, ইয়ামাহামা, ভেসপা ইত্যাদি।

 

বহির্দাহ ইঞ্জিন : 

যে ইঞ্জিনের দহনকার্য সিলিন্ডারের বাইরে সম্পন্ন হয় তাকে বহির্দাহ ইঞ্জি-ন বলে। স্টীম ই-ঞ্জিন বা লোকমোটিভ ই-ঞ্জিন বহির্দাহ ই-ঞ্জিনের অন্তর্ভুক্ত।

 

এস. আই ইঞ্জিন (S. I. engine) : 

যে ইঞ্জিনের দহনকার্য ইলেকট্রিক্যাল স্পার্কের সহায়তায় সম্পন্ন হয় তাকে এস. আই বা স্পার্ক ইগনিশন ই-ঞ্জিন বলে। পেট্রোল ইঞ্জি-নের অপর নাম স্পার্ক ইগনিশন ইনি ।

 

সি. আই. ই-ঞ্জিন (C. I. engine) :

যে ইঞ্জিনে উচ্চ কম্প্রেশনের সহায়তায় দহনকার্য সম্পন্ন হয় তাকে সি. আই. ই-ঞ্জিন বা কম্প্রেশন ইগনিশন ই-ঞ্জিন বলে।

 

টি. ডি. সি এবং বি. ডি. সি. (Top dead centre and bottom dead centre) :  পিস্টন সিলিন্ডারের মধ্যে সর্বোচ্চ যতদূর পর্যন্ত যেতে পারে সেই অবস্থানকে টিডিসি বলে এবং পিস্টন সিলিন্ডারে সর্বনিম্ন সে জায়গা পর্যন্ত নামতে পারে সেই জায়গা বা অবস্থানকে বিডিসি বলে । 

 

বোর (bore) : সিলিন্ডারের ব্যাসকে বোর বলে।

স্যুয়েফট ভলিউম (Sweft volume) :

 পিস্টন টিডিসি হতে বিডিসিতে যাওয়ার সময় (ইনটেক স্ট্রোকে) যে পরিমাণ ভলিউম গ্রহণ করে অর্থাৎ পিস্টন যে পরিমাণ আয়তন অতিক্রম করে তাকে স্যুয়েফট ভলিউম বা পিস্টন ডিসপ্লেসমেন্ট বলে। পিস্টন এই আয়তনের মধ্যে উঠানামা করে। এটি সিলিন্ডার ভলিউম নামেও পরিচিত।

 

উদাহরণ : ১

মনে করি একটি সিলিন্ডারের ব্যাস ৪ ইঞ্চি এবং পিস্টন মুভমেন্ট · ইঞ্চি। এর পিডি কত ?

 পিডি (piston displacement) সব সময় ঘন ইঞ্চিতে অথবা ঘন সেন্টিমিটারে (cc) বের হয় ।

৪৩.৯৮ ঘন ইঞ্চি একটি সিলিন্ডারের জন্য। এভাবে ই-ঞ্জিন যদি ৪.৬ অথবা ৮ সিলিন্ডারের হয় তবে একটি সিলিন্ডারের পিডি যত হতে তার সঙ্গে সিলিন্ডারের সংখ্যা গুণ করতে হবে।

যেমন = ৪৩.৯৮ গন ইঞ্জি × ৮

= ৩৫১.৮৪ ঘন ইঞ্চি (আট সিলিন্ডারের জন্য)

প্রায় ১০০ সিসি = ১ অশ্বশক্তি

 

ক্লিয়ারেন্স ভলিউম (Clearance volume)

পিস্টন টি ডি সি-তে পৌঁছানোর পর ই-ঞ্জিন হেডে যে ফাঁকা জায়গা থাকে তাকে ক্লিয়ারেন্স ভলিউম বলে। অন্য কথায় দহন প্রকোষ্ঠের আয়তনকে ক্লিয়ারেন্স ভলিউম বলে। উক্ত স্থানে দহনকার্য সম্পন্ন হয় এবং শক্তি উৎপন্ন হয়। একে দহন প্রকোষ্ঠের আয়তনও বলা হয় ৷

মোট আয়তন : স্যুয়েফট ভলিউম এবং ক্লিয়ারেন্স ভলিউম এক সঙ্গে যোগ করলে যে আয়তন পাওয়া যায় তাকে মোট আয়তন (total volume) বলে। 

(Throw) : ফ্র্যাঙ্কশ্যাফট মেইন বিয়ারিং-এর কেন্দ্র হতে ক্র্যাঙ্ক পিন বা কানেকটিং রড বিয়ারিং-এর কেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্বকে থ্রো বলে। থ্রো সাধারণত স্ট্রোকের অর্ধেক হয় । 

 

সঙ্কোচন অনুপাত

কম্প্রেশন স্ট্রোক আরম্ভ হবার পূর্বে অর্থাৎ ইনটেক স্ট্রোকের সময় সিলিন্ডারে যে পরিমাণ বাতাস (air fuel mixture) প্রবেশ করে, কম্প্রেশন স্ট্রোকের শেষে ঐ বাতাস বা মিশ্রণ সঙ্কুচিত হয়। এই সঙ্কুচিত বাতাসের আয়তন এবং পূর্বের (ইনটেক স্ট্রোকের সময়কাল) বাতাসের আয়তনের তুলনামূলক সম্পর্ককে সঙ্কোচন অনুপাত বলে। এটি আমরা অন্যভাবেও প্রকাশ করতে পারি। যেমন—টোটাল ভলিউম এবং ক্লিয়ারেন্স ভলিউমের অনুপাতই হচ্ছে সঙ্কোচন অনুপাত।

উদাহরণ : ২

একটি ইঞ্জি-নের স্যুয়েফট ভলিউম ২৪০ সিসি এবং সঙ্কোচন অনুপাত ৬.৪৪১ হলে ঐ ই-ঞ্জিনের ক্লিয়ারেন্স ভলিউম কত ?

সমাধানঃ

অথবা ২৪০ + ক্লিয়ারেন্স ভলি : = ৬.৪ x ক্লিয়ারেন্স ভলিঃ

অথবা ২৪০ = ৬.৪ ক্লিয়ারেন্স ভলিঃ – ক্লিয়ারেন্স ভলিঃ

অথবা ২৪০ = ৫.৪ ক্লিয়ারেন্স ভলিউম

সুতরাং,  ক্লিয়ারেন্স ভলিউম ২৪০/৫.৪  = ৪২.৬ ঘন সেন্টিমিটার।

উদাহরণ : ৩

৬ সিলিন্ডার বিশিষ্ট একটি ই-ঞ্জিনের বোর ৬০ মিলিমিটার (৬ সে. মি)। ট্রোকের দৈর্ঘ্য ৮৫ মিলিমিটার (৮.৫ সে. মি.) হলে সঙ্কোচন অনুপাত কত? দহন প্রকোষ্ঠ যদি অর্ধবৃত্ত হয় যার ব্যাস সিলিন্ডার বোরের সমান, তাহলে ঐ ই-ঞ্জিনের কার্যক্ষমতা কত?

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

 

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

 সমাধান

ফোর স্ট্রোক ইঞ্জি-ন :

 যে ই-ঞ্জিনে পিস্টন চারবার উঠানামা করে, অর্থাৎ পিস্টন দুইবার উপরে উঠে এবং দুইবার নীচ নামে, ফলে একটি মাত্র শক্তির সৃষ্টি হয় (অর্থাৎ ক্র্যাঙ্কশ্যাফট ৭২০° ঘুরে আসে) তাকে ফোর-স্ট্রোক (চারঘাত) ই-ঞ্জিন বলে। যেমন—বাস, ট্রাক ইত্যাদি।

 

ই-ঞ্জিনের প্রকারভেদ

  • ই-ঞ্জিনকে নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায় :

১। সিলিন্ডারের সংখ্যা অনুসারে ই-ঞ্জিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন :

  • (ক) এক সিলিন্ডার ই-ঞ্জিন (হোন্ডা ৫০ সি সি এবং ৮০ সিসি ইত্যাদি)।
  • (খ) মালটি সিলিন্ডার ই-ঞ্জিন বা ৪, ৬, ৮, ১২ সিসিন্ডারবিশিষ্ট ই-ঞ্জিন। বাস, ট্রাক ইত্যাদি। 

২। ঠাণ্ডা করার পদ্ধতি অনুসারে ই-ঞ্জিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় :

  • (ক) বাতাস দ্বারা ঠাণ্ডা করা (air cooled) ইঞ্জি-ন। যেমন ৫০ সি সি, ১০০ সিসি হোন্ডা, ভক্সওয়াগন গাড়ীর ই-ঞ্জিন ইত্যাদি।
  • (খ) পানি দ্বারা ঠাণ্ডা করা (water cooled) ই-ঞ্জিন। যেমন—বাস, ট্রাক, কার ইত্যাদি ই-ঞ্জিন ঠাণ্ডা করার জন্য ঠাণ্ডাকরণ পদ্ধতিতে পানি ব্যবহার করে। 

৩। জ্বালানির ব্যবহার অনুসারে ইঞ্জি-নকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় :

  • (ক) ডিজেল ই-ঞ্জিন, (খ) পেট্রোল ই-ঞ্জিন।

৪। ভালভ-এর অবস্থা-ন হিসাবে ই-ঞ্জিনকে চার ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন –

  • (ক) আই-হেড ই-ঞ্জিন : এই ই-ঞ্জিনে ইনলেট এবং একজস্ট ভাল্ভ দুইটি সিলিন্ডারের উপরে ই-ঞ্জিন হেডে বসানো থাকে।
  • (খ) এল-হেড ই-ঞ্জিন : এই ই-ঞ্জিনে দুইটি ভাল্ভই সিলিন্ডারের একই পার্শ্বে অবস্থিত থাকে এবং দহনে প্রকোষ্ঠের গঠন ইংরেজী অক্ষর ‘L’ এর মত।
  • (গ) এক-হেড–ই-ঞ্জিন: এই ই-ঞ্জিনে ভালভের প্রয়োগ এফ-হেড এবং এল-হেড ই-ঞ্জিনের সংমিশ্রণে গঠিত হয়েছে। এই ই-ঞ্জিন একটি ভাল্ভ সিলিন্ডারের উপরে এবং অপরটি ভালভ সিলিন্ডারের পার্শ্বে থাকে। 
  • (ঘ) টি-হেড-ই-ঞ্জিন: যে ই-ঞ্জিনের সিলিন্ডারের দুই পার্শ্বে দুইটি ভাল্ভ অবস্থান করে অর্থাৎ ইংরেজী অক্ষর ‘T’ এর মত তাকে টি-হেড ই-ঞ্জিন বলে।

 

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

৫। সিলিন্ডারের প্রয়োগ অনুসারে ই-ঞ্জিনকে ছয় ভাগে ভাগ করা যায় :

  • (ক) ইন-লাইন : এই ই-ঞ্জিনে সিলিন্ডারগুলি একই লাইনে অবস্থান করে।
  • (খ) ভি-টাইপ : এই ই-ঞ্জিনে সিলিন্ডারগুলি ইংরেজী অক্ষর (V) এর মত অবস্থান করে।
  • (গ) অপোজ পিস্টন : এই ই-ঞ্জিনে পিস্টন এবং সিলিন্ডারগুলি একে অপরের বিপরীত দিকে অবস্থান করে কিন্তু ক্র্যাঙ্কশাফট মাঝখানে অবস্থান করে।
  • (ঘ) রেডিয়াল ই-ঞ্জিন : এই ধরনের ই-ঞ্জিন উড়োজাহাজে ব্যবহৃত হয়। এতে অনেকগুলি সিলিন্ডার থাকে। সিলিন্ডারগুলি ক্র্যাঙ্কশ্যাফটের চারদিকে অবস্থান করে। প্রতিটি সিলিন্ডারের কানেকটিং রড একই ক্র্যাঙ্কশ্যাফটের সঙ্গে যুক্ত থাকে।

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

  • (ঙ) হরাইজন্টাল : এই ধরনের ই-ঞ্জিনে সিলিন্ডারগুলি একই দিকে (বামে অথবা ডানে) হেলানো থাকে। ফলে পিস্টন বামে বা ডানে যাতায়াত করে।
  • (চ) ভারটিক্যাল : এই ই-ঞ্জিনে সিলিন্ডার খাড়াভাবে উপরে নীচে অবস্থান করে। আই. এইচ. পি (I. H. P.) : অর্থ ইনডিকেটিং হর্স পাওয়ার। সিলিন্ডারের মধ্যে জ্বালানি প্রজ্বলনের ফলে যে শক্তির সৃষ্টি হয় তাকে আই. এইচ. পি বলে।

 

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

বি. এইচ. পি (B. H.P) : অর্থ ব্রেক হর্স পাওয়ার। ই-ঞ্জিন সিলিন্ডারে যে শক্তি তৈরী হয় এবং বিভিন্ন স্তরে ক্ষয় হয়ে চাকায় যে শক্তি পাওয়া যায় তাকে বি. এইচ. পি বলে।

 

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

F = ব্রেকের বাঁধা (resistance) পাউন্ডে

R= ব্যাসার্ধ (ফুটে)

N = ক্র্যাঙ্কশ্যাফটের গতি (প্রতি মিনিটে)

এফ. এইচ. পি (F.H.P) : সিলিন্ডারের মধ্যে উৎপন্ন শক্তির যে অপচয় হয় তাকে

এফ. এইচ. পি বলে।

F.H. P = I. H. P-B. H. P

মেকানিক্যাল ইফিসিয়েন্সি (Mechanical efficiency) মেকানিক্যাল ইফিসিয়েন্সি বলতে B. H. P এবং 1.H.P. এর অনুপাতকে বুঝায়।

  1. E = B.H.P / I. H. P × 100

এটি সবসময় শতকরা হিসাবে বের হয়।

থারমাল ইফিসিয়েন্সি (Thermal efficiency)

ই-ঞ্জিনে প্রজ্বলনের জন্য যে জ্বালানি ব্যবহার করা হয় তার প্রকৃত জ্বালানি শক্তির সঙ্গে তা থেকে ব্যবহারিক শক্তির অনুপাতকে থারমাল ইফিসিয়েন্সি বলে।

thermal efficiency= work done / heat supplied

  1. B.T.U = 778 ft Ib,

ভলিউমেট্রিক ইফিসিয়েন্সি (Volumetric efficiency)

 ইনটেক স্ট্রোকের সময় ইঞ্জি-ন সিলিন্ডারের যে পরিমাণ বাতাস স্বাভাবিকভাবে প্রবেশ করে এবং সম্পূর্ণ সিলিন্ডারকে বায়ুমণ্ডলের স্বাভাবিক চাপে পূর্ণ করতে যে পরিমাণ বাতাসের প্রয়োজন হয়, তার অনুপাতকে ভলিউমেট্রিক ইফিসিয়েন্সি বলে। এটি সাধারণত শতকরা হারে প্রকাশ করা হয়। এটি সাধারণত ৮০% হয়ে থাকে।

অশ্ব ক্ষমতা (Horse power) :

পূর্বে ঘোড়ার সাহায্যে বহু কাজ করা হতো। কোন ঘোড়া যদি এক মিনিটে ১৫০ পাউন্ড ওজনের কোন জিনিস নিয়ে ২২০ ফুট দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে তাহলে উক্ত ঘোড়ার কার্যক্ষমতা হয় এক অশ্বক্ষমতা। ১ অশ্বশক্তি (H.P) = ১৫০ পাউন্ড × ২২০ ফুট = ৩৩০০০ ফুট-পাঃ/মিনিট। অথবা ৫৫০ ফুট পাউন্ড/ সেকেন্ড।

কোন বৈদ্যুতিক মোটর যদি ১৫টি ঘোড়ার সমান কাজ করতে পারে (৩৩০০০ X ১৫ = ৪৯৫০০০ ফুট পাউন্ড/মিনিট) তাহলে ঐ মোটরের ক্ষমতা হবে ১৫ অশ্ব ক্ষমতা (H.P) । এই ক্ষমতা বলেই মোটরটি কাজ করে।

  1. H. P = 746 watt = 2545 BTU / hour 

ওয়াট (watt) হচ্ছে = কারেন্ট x ভোল্টেজ।

উদাহরণ : ৪

মনে করি ভাল রাস্তায় একটি মোটরযানকে চালাতে ১০ অশ্বশক্তি লাগে। প্রতি ঘণ্টায় ৩০ মাইল চলতে যদি ৫০ পাউড বলের সমান হয় তবে প্রতি মিনিটে ঐ গাড়ীটির কার্যক্ষমতা কত ?

৩০ মাইল প্রতি ঘন্টায় = 30 X 5280 / 60 ( ১ মাইল = ৫২৮০ ফুট )

= ২৬৪০ ফুট/মিনিট

আমরা জানি কাজ (W) = Fx D 

এখানে F = Force (বল)

D = Distance (দূরত্ব)

W = ৫০ পাঃ x 2680

W = ১৩২০০০ ফুট পাঃ/মিনিট

এখানে দূরত্ব ২৬৪০ ফুট মিনিট

উদাহরণ : ৫

সাধারণ পেট্রোলের ক্যালোরিফিক ভ্যালু ধরা হয় ১৯০০০ বি.টি.ইউ (BTU)/পাউন্ড (Ib), তাহলে ১২ গ্যালন পেট্রোল পোড়ালে আমরা কত হিট ভ্যালু পাব, যদি ১ গ্যালন

পেট্রোলের ওজন ৭ পাউন্ড হয়।

উত্তর : মোট পেট্রোলের ওজন = ১২ X ৭-২/১

= ১২X ১৫/২

= ৯০ পাউন্ড

                ১ পাউন্ড পেট্রোলের C. V = ১৯০০০ BTU

সুতরাং    ৯০ পাউন্ড পেট্রোলের      = ৯০ X ১৯০০০ ( BTU )   

আমরা জানি – ১বি. টি. ইউ = ৭৭৮ ফুট পাউন্ড 

 যেহেতু  ৯০ × ১৯০০০ × ৭৭৮ ফুট পাউন্ড

= ১৩৩০৩৮:০০০ ফুট পাউন্ড

উদাহরণ : ৬

পরীক্ষামূলকভাবে একটি পেট্রোল গাড়ী ২০০০ R. P. M-এ চললে ০.৬ পাইন্ট (pints) পেট্রোল প্রতি B.H.P এবং প্রতি ঘন্টায় খরচ করে। ১ গ্যালন পেট্রোলের ওজন ৭-১/২ পাউন্ড এবং C, V ১৯০০০ BTU প্রতি পাউন্ডে। তাহলে ঐ ইঞ্জি-নের থারমাল ইফিসিয়েন্সি কত?

পেট্রোলের ওজন প্রতি ঘণ্টায় ০.৬/৮ X ৭.৫০

= ৬/১০X৮ X ৭৫০/১০০

 

তাপ ইঞ্জিন | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

= ৪৯৫-৯৫

= ৫.২

 

আর দেখুনঃ