গ্যাস টারবাইন – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” এর “বাষ্পীয় বয়লার বা জেনারেটর” বিষয়ক পাঠ।
গ্যাস টারবাইন
১৫.৩৩ চিত্রে একটি গ্যাস টারবাইনের গঠন এবং কার্যক্রম দেখানো হলো। এখানে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রোটারী কম্প্রেসর এবং টারবাইন একই শ্যাফটের সাথে সংযুক্ত। গ্যাস- টারবাইন তিনটি অংশে বিভক্ত। একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্প্রেসর, একটি জ্বালানি
প্রকোষ্ঠ এবং একটি টারবাইন। গ্যাস- টারবাইনে বাষ্পের পরিবর্তে গরম গ্যাস (hot gas) বা ফ্লুগ্যাস ব্যবহার করা হয় টারবাইনকে পরিচালনার জন্য কম্প্রেসরের মধ্যে উচ্চচাপে বাতাস সঙ্কুচিত করা হয়। সেই সঙ্কুচিত বাতাস প্রবল বেগে জ্বালানি প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করে।
সেখানে ঝর্ণার দ্বারা গ্যাস, ডিজেল অথবা ফার্নেস অয়েল স্প্রে করানো হয়। ফলে দহন- প্রকোষ্ঠে তীব্রভাবে দহন কার্য সম্পন্ন হয়। তীব্র দহনের ফলে সৃষ্ট ফ্লু-গ্যাস তীব্র বেগে টারাবইন ব্লেডের উপর আঘাত হানে। ফলে টারবাইন ঘূর্ণায়মান হয়।
টারবাইনকে ঘূর্ণায়নের পর ফ্লু–গ্যাস বায়ুমন্ডলে বিলীন হয়ে যায়। সেজন্য একে মুক্ত (open) গ্যাস- টারবাইন বলে। এখানে টারবাইন কম্প্রেসরকে চালনা করে। কারণ এরা একই শ্যাফটের সাথে যুক্ত থাকে। ক্লোজ সাইকেল গ্যাস -টারবাইনে গরম বা ফ্ল-গ্যাসকে পুনরায় ব্যবহার করা হয়। টারবাইন থেকে গরম গ্যাস বায়ুমন্ডলে ছেড়ে না দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে কুলারের মাধ্যমে ঠান্ডা করে পুনরায় কম্প্রেসরে পাঠানো হয়।
গ্যাস- টারবাইন রেসিপ্রাকেটিং বাষ্পীয় ইঞ্জিন এবং বাষ্পীয় টারবাইনের প্রধান পরিপূরক। বর্তমানে গ্যাস -টারবাইন বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদনে, বিমান পরিচালনায়, রেলওয়ে লোকোমোটিভ এবং মেরিন প্রকল্পে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।
জেট ইঞ্জিন (Jet engine) :
জেট ইঞ্জিনের মূলসূত্র হচ্ছে আমাদের দেশের হাওয়াই বাজি। হাওয়াই বাজিতে আগুন দিলে অগ্নি বিচ্ছুরণ করতে করতে উপরের দিকে উঠতে থাকে। অর্থাৎ এর যে দিকে গ্যাস বিচ্ছুরিত করে তার বিপরীত দিকে পরিচালিত হয়। উপরোক্ত সূত্রেই জেট ইঞ্জিন এবং রকেট পরিচালিত হয়। ১৫.৩৪ চিত্রে একটি রকেটের সাধারণ গঠন এবং কার্যক্রম দেখানো হলো।
একটি বিশেষ ধরনের দহন প্রকোষ্ঠ থেকে যদি প্রবল বেগে উত্তপ্ত গ্যাস নির্গত হতে থাকে তাহলে একটি বিপরীতমুখী গতির সৃষ্টি হয়। এর ফলে উক্ত দহন প্রকোষ্ঠসহ মূল যন্ত্রটি নির্গত গ্যাসের বিপরীত দিকে চলতে শুরু করে। এভাবেই জেট ইঞ্জিন চালিত হয়। জেট ইঞ্জিনকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : থার্মাল জেট ইঞ্জিন এবং রকেট। থার্মাল জেট ইঞ্জিন বায়ুমন্ডল হতে অক্সিজেন গ্রহণ করে টারবু
চার্জারের মাধ্যমে দহনকার্য সম্পাদনের জন্য। কিন্তু রকেট পরিচালনায় তরল অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ব্যবহার করা হয় এবং এর স্বতন্ত্র জ্বালানি ট্যাঙ্কও থাকে। টারবু জেট ইঞ্জিন থার্মাল জেট ইঞ্জিনের একটি উদাহরণ যা বিমান সংস্থাসমূহে দ্রুতযান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। রকেটসমূহ প্রধানত : ক্ষেপণাস্ত্র এবং মহাশূন্যে পরিভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে জঙ্গী বিমানসমূহে রকেটের ব্যবহার দেখা যায়।
১৫.৩৪ চিত্র অনুসারে অক্সিজেন ট্যাঙ্ক থেকে অক্সিজেন এবং জ্বালানি ট্যাঙ্ক থেকে জ্বালানি প্রবেশ করে পাম্পের সাহায্যে। জ্বালানি প্রকোষ্ঠে প্রজ্বলনের পরে ঐ গ্যাস নজল দ্বারা বায়ুমন্ডলে তীব্রবেগে বিচ্ছুরিত হয়। ফলে রকেটটি চলতে থাকে বিচ্ছুরিত গ্যাসের উল্টো দিকে।
আরও দেখুনঃ
- বাষ্পীয় বয়লার
- মোটরযানের টো-ইন ও টো-আউট নির্ণয়
- মোটরযান চালানো বা ড্রাইভিং
- ফ্রন্ট এন্ড জিওমেট্রি
- পাওয়ার স্টিয়ারিং
- মোটরগাড়ি শিল্প
2 thoughts on “গ্যাস টারবাইন”