ক্র্যাপিং পদ্ধতি

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-ক্র্যাপিং পদ্ধতি

ক্র্যাপিং পদ্ধতি Scraping Process

স্ক্যাপিং (Scraping) :

যে প্রক্রিয়া নরম ধাতু ক্ষয় করে কাঙ্ক্ষিত আকৃতি ও সাইজে আনয়নের জন্য এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে যথার্থ অমসৃণতা দূর করে, মসৃণতা আনয়নের নিমিত্তে স্ক্রেপার দ্বারা ঘষে ধাতু ক্ষয় করা কৌশলগত ক্রাপিং। অতএব স্ক্র্যাপের নামক হস্তচালিত কাটিং-টুলস দ্বারা নরম ধাতুর হতে চিহ্নিত অথবা অসমতল ধাতু স্বাস্থ্য পরিমাণে কর্তনপূর্বক অপসারণ করে ধাতুর তলে কাঙ্ক্ষিত বা যথার্থ সমতা আনয়নের প্রক্রিয়াকে এক কথায়-স্ক্যাপিং বলা হয়ে থাকে ।

স্ক্যাপিংয়ের প্রয়োগিক ক্ষেত্র (Field of Application of Scraping)

নিচে স্ক্যাপিংয়ের প্রয়োগ ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলো-

১. ক্রাপিংয়ের-এর মাধ্যমে অর্ধগোলাকার বিয়ারিং হতে ধাতু অপসারণ করে বিয়ারিং ল্যাপিং সম্পূর্ণ করণের ক্ষেত্রে।

২. ধাতুর দুটি সমতল সারফেস একটির উপর অপরটি স্লাইড করে চলার জন্য তল দুটির পূর্ণাঙ্গ মসৃণতার ক্ষেত্র।

৩. চ্যানেল পরিষ্কার কী ঘাট তৈরির পর এর গড় সমূহ মসৃণকরণের ক্ষেত্রে।

৪. বুশ হতে অনাকাঙ্ক্ষিত ধাতু অপসারণ করে এটি যথার্থ স্থানে শীট করার ক্ষেত্রে।

৫. ডিকার্বনাইজিংয়ের ক্ষেত্রে।

৬. রং, পুডিং ও আঠার ন্যায় ধাতু অপসারণ ক্ষেত্রে।

 

ক্র্যাপিং পদ্ধতি

 

ক্র্যাপারের শ্রেণিভেদের বর্ণনা (Description of different types of scraper):

মূলত স্ক্র্যাপের একটি হস্তচালিত কাটিং টুলস। এর কাটিং এজের আকৃতির উপর ভিত্তি করে একে নিচের তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

ক) ফ্ল্যাট স্ক্র্যাপার : এটার আকৃতি অনেকটা ফ্ল্যাট চিত্র ১৩.২ঃ বিভিন্ন প্রকার ক্র্যাপার ফাইলের ন্যায়। এটি সমতলে স্ক্র্যাপিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় । ফ্ল্যাট ক্র্যাপার সাধারণত হাতলসহ ২৫০ হতে ৩০০ মি. মিটার লম্বা হয়ে থাকে ।

খ) হাফ রাউন্ড স্ক্যাপার : এটার আকৃতি অনেকটা হাফ রাউন্ড ফাইলের ন্যায়। এর দুইপাশে দুটি কাটিং এজ থাকে। গোলাকার ও অর্ধগোলাকার তল স্ক্র্যাপিং করতে ব্যবহৃত হয় হাতলসহ ইটিও ১৫০ হতে ৩০০ মি.মি. লম্বা হয়ে থাকে।

গ) ট্যাজুলার জ্যাপার : এটি তিনটি কাটিং এজ বিশিষ্ট ত্রিকোণ ক্র্যাপার । বিয়ারিং বা অর্ধগোলাকার তল ক্র্যাপিংয়ে এর ব্যবহার যথার্থ। এটি সাধারণত ১০০ হতে ৩০০ মি. মিটার লম্বা হয়ে থাকে ।স্ক্র্যাপারের বিভিন্ন অংশের নাম

চিত্রসহ বর্ণনা (Description of different parts of Scraper with figures):

মূলত একটি স্ক্র্যাপারকে চারটি অংশে বিভক্ত করা যায় যা চিত্রসহ নিচে বর্ণনা করা হলো :

১. টিপ স্ক্র্যাপারের অগ্রভাগকে ফ্ল্যাট স্ক্যাপারে টিপের আকৃতি চ্যাপটা ও কিঞ্চিৎ গোলাকার থাকে এবং এর মাথায় কাটিং এজ থাকে। হাফ রাউন্ড ও ট্যাঙ্গুলার স্ক্যাপারের টিপের আকৃতি সরু থাকে ।

২. কাটিং এজ ফ্ল্যাট ক্র্যাপারের কাটিং এজ-এর সম্মুখে এবং হাফ রাউন্ড ও ট্র্যান্সলর স্ক্যাপারের কাটিং এজ পাশে থাকে ।

৩. ৰঙি : ট্যাং ও কাটিং এজের মধ্যবর্তী অংশের নাম বডি। কাস্ট স্টিল দ্বারা স্ক্যাপারের বডি তৈরি। বডির আকৃতি গোলাকার বা চ্যাপটা থাকে ।

৪. ট্যাং : বড়ির পিছনের অংশকে ট্যাং বলে। এটি হাতলের অভ্যন্তরে অবস্থিত থেকে হাতল ধারণ করে থাকে ।

প্রকার ভেদে ক্র্যাপং পদ্ধতির বর্ণনাঃ

১. প্রথমত সারফেজ গেজে রং মেখে সমতলকে ঐ ব্যয়ের উপর ঘষে উঁচু স্থানসমূহ চিহ্নিত করতে হবে ।

২. এক হাতে স্ক্র্যাপারের হাতলকে ধরে অন্য হাতে চাপ দিয়ে স্ক্যাপারকে শরীরের বিপরীতে পরিচালনা করতে হবে।

৩. ক্র্যাপার পরিচালনা করে চিহ্নিত মার্কসমূহ তুলে নিতে হবে ।

৪. স্ক্যাপারে কাটিং এজকে ভূমির সাথে ২৫°-৩০° কোণে পরিচালনা করা উচিত ।

৫. স্ক্র্যাপারে প্রতিবার ১০মি. মি. হতে ১৫ মি.মি. দৈর্ঘ্য পরিচালনা করা উত্তম ।

৬. স্ক্র্যাপারকে প্রতিবার .০৫ মি.মি. হতে .০৬ মি.মি. গভীরের বেশি চালনা করা সংগত নয় । ৭. প্রয়োজনে একাধিকবার সারফেস গেজের মাধ্যমে দাগ দিয়ে এবং স্ক্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে দাগ উত্তোলন করে সমতল ফ্ল্যাপিং সম্পন্ন করতে হয় ।

খ) হাফ রাউন্ড বা বিয়ারিং ফ্ল্যাপিং :

১. এ জাতীয় স্ক্র্যাপিংয়ের ক্ষেত্রে ট্যাঙ্গুলার বা হাফ রাউন্ড ক্র্যাপার ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।

২. প্লামার বুকে আবদ্ধ করে, শ্যাফট ঘুরিয়ে দুই খণ্ডে বিভক্ত বিয়ারিংয়ের উঁচু স্থানসমূহ চিত্রের ন্যায় চিহ্নিত করতে হবে।

৩. একটি একটি করে প্রত্যেক খণ্ডকে ভাইসে আবদ্ধ করতে হবে।

৪. এ ক্ষেত্রে স্ক্যাপার ২৫-৩০° কোণে পাশের দিকে পরিচালনা করতে হবে।

৫. চিহ্নিত উঁচু স্থানসমূহ ধীরে ধীরে ক্যাপিং করে অতিরিক্ত ধাতু অপসারণ করতে হবে ।

৬. প্রতি বার ১০-১৫ মি.মি. দৈর্ঘ্য ও ০৫-০৬ মি.মি. গভীরের বেশি ক্র্যাপার পরিচালনা করা উচিত নয় ।

৭. প্রয়োজনে গ্লামার বুকে বা ব্যবহারযোগ্য শ্যাফট দ্বারা একাধিকবার দাগ দিয়ে ও তা অপসাররণ করে বিয়ারিং স্ক্র্যাপিং সম্পন্ন করতে হবে ।

 

ক্র্যাপিং পদ্ধতি

 

 ফ্র্যাপিংকালীন সতর্কতা

১. সর্বদায় হাতল যুক্ত স্ক্র্যাপার ব্যবহার করতে হবে ।

২. শরীরের বিপরীতে ফ্ল্যাপারকে পরিচালনা করতে হবে ।

৩. সর্বদা তীক্ষ্ণ ও ধারালো স্ক্র্যাপার ব্যবহার করবে।

৪. স্ক্র্যাপারের তীক্ষ্ণতা কমে গেলে তা শান পাথরে ধার দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।

৫. নির্দিষ্ট গভীরতায় অথবা শুধুমাত্র চিহ্নিত স্থানসমূহ একযোগে স্ক্যাপিং করা শ্রেষ্ঠ ।

৬. সাধারণত স্ক্যাপারকে ২৫°-৩০° কোন সর্বদায় পরিচালনা করার চেষ্টা করতে হবে।

৭. যথার্থ ক্ষেত্রে যথার্থ জ্ঞ্যাপার নির্বাচনপূর্বক স্ক্র্যাপিং করা উচিত ।

৮. ডান হাতে ক্র্যাপারের হাত ধরে এবং বাম হাতে পরিমাণ মতো চাপ দিয়ে স্ক্র্যাপিং করা উচিত। ৯. হাত দ্বারা স্ক্যাপারের ধার নিরীক্ষণ না করে তা সমজাতীয় ধাতু কর্তন করে পরীক্ষা করা শ্রেষ্ঠ ।

 

ক্র্যাপিং পদ্ধতি

 

প্রশ্নমালা-১৩

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :

১. স্ক্র্যাপিং কাকে বলে?

২. জ্ঞ্যাপার প্রধানত কত প্রকার ও কী কী?

৩. ট্র্যাংগুলার ক্র্যাপার কত প্রকার ও কী কী? হাফ রাউন্ড স্ক্র্যাপার কত ডিগ্রিতে পরিচালনা করতে হয়?

8.হাফ রাউন্ড স্ক্র্যাপার কত ডিগ্রিতে পরিচালনা করতে হয়?

৫. ট্র্যাংগুলার ক্র্যাপারের অংশসমূহের নাম লেখ ।

৬. স্ক্র্যাপিং কতটি পদ্ধতিতে করা হয়?

৭. স্ক্র্যাপার কত পরিমাণে দৈর্ঘ্য পরিচালনা করা হয়?

৮. স্ক্র্যাপারকে কত গভীরে চালনা করা উচিত নয়?

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :

১. ক্র্যাপিং বলতে কী বোঝায়?

২. জ্ঞ্যাপিং-এর প্রয়োগক্ষেত্র উল্লেখ কর ।

৩. হাফ রাউন্ড বা বিয়ারিং স্ক্র্যাপিং পদ্ধতি ধারাবাহিকভাবে লেখ ।

রচনামূলক প্রশ্ন :

১. স্ক্র্যাপিং বলতে কী বোঝায়? এটি কত প্রকার ও কী কী?

২. স্ক্র্যাপিং-এর প্রয়োগ ক্ষেত্র লেখ ।

৩. স্ক্যাপিং-এর পদ্ধতি বর্ণনা কর ।

৪. স্ক্যাপিং-এর সতর্কতাসমূহ উল্লেখ কর।

আরও দেখুন :

Leave a Comment