কারখানায় নিরাপত্তামূলক নির্দেশাবলী নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “এককের বিভিন্ন পদ্ধতি” বিভাগের একটি পাঠ। অনেকের ধারণা দুর্ঘটনা (accident) ঘটা স্বাভাবিক।
কারখানায় নিরাপত্তামূলক নির্দেশাবলী
অনেকের ধারণা দুর্ঘটনা (accident) ঘটা স্বাভাবিক। কিন্তু নিরাপত্তা বিশারদগণ এই ধারণার সাথে একমত নন। তাঁরা মনে করেন দুর্ঘটনার নানা রকম কারণ রয়েছে:
দুর্ঘটনার কারণ:
(ক) কাজের প্রতি অমনোযোগী,
(খ) অযত্ন বা অবহেলা
(গ) যথাযথভাবে যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করা
(ঘ) সাধারণ বুদ্ধির অভাব।
নিম্নলিখিত নিয়মাবলী সঠিকভাবে পালন করলে অতি সহজেই সাধারণ দুর্ঘটনার হাত হতে রেহাই পাওয়া যায়।
দুর্ঘটনার হাত হতে রেহাই পাবার উপায়:
১। সুস্থ শরীরে কাজ করা
২ । গভীর মনোযোগের সঙ্গে কাজ করা কাজে অবহেলা বা অযত্ন না করা
8 | আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করা
৫ । কাজের সময় কথা না বলা একটানা দীর্ঘ সময় কাজ না করা শরীর অসুস্থ হলে কাজ না করা সকল কাজে উপযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা
৯। উৎফুল্ল মনে কাজ করা
১০। এপ্রন পরিধান করে কাজ করা
১১। কাজের সময় এদিক ওদিক না তাকানো
১২। কাজের সময় উচ্চস্বরে কথা বলা বা চিৎকার করা অথবা হাসি-ঠাট্টা না করা
১৩। কাজের প্রয়োজনে চোখে গগলস্ (goggles), হাতে দস্তানা (gloves) এবং মুখাবরণ ব্যবহার করতে হবে
১৪। কারখানা সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
১৫। কারখানায় আলো এবং বাতাসের সুব্যবস্থা থাকতে হবে
১৬। কারখানার মেঝেতে তৈল, গ্রীজ, মোবিল ইত্যাদি যাতে না থাকে তার প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।
১৭। কাজের জায়গায় উপযুক্ত আলো-বাতাস থাকতে হবে এবং ধুলা-বালি মুক্ত হতে হবে।
১৮। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি (fire extinguisher), পানির বালতি, বালুর বালতি ইত্যাদি কর্মশালার যথাযথ স্থানে রাখতে হবে। ১৯। লম্বা চুল, নখ, ঢিলা জামা-কাপড় ইত্যাদি পরিহার করা উচিত।
১৯। লম্বা চুল, নখ, ঢিলা জামা-কাপড় ইত্যাদি পরিহার করা উচিত।
২০। গাড়ী যখন জ্যাক (jack)-এর উপরে তুলে কাজ করা হয় তখন গাড়ীর নীচে গিয়ে কাজ করার পরে যথোপযুক্ত দণ্ডের অবলম্বন (support) লাগিয়ে নিশ্চিত হয়ে কাজ করা উচিত। কোন দণ্ডের সাহায্য ছাড়া গাড়ীর নীচে কাজ করা উচিত নয়। ২১। কাজের শেষে সকল যন্ত্রপাতি যথাস্থানে রাখতে হবে অথবা সংশ্লিষ্ট ইন্সট্রাক্টরের নিকট জমা দিতে হবে।
২২। দুর্ঘটনা ঘটার কোন সম্ভাবনা দেখলে সংশ্লিষ্ট ইন্সট্রাক্টর বা কর্তৃপক্ষকে তৎক্ষণাৎ অবহিত করতে হবে। ২৩। গ্যারেজ বা কারখানায় গাড়ী বা ইঞ্জিন চালানো উচিত নয়। গাড়ীর একজস্ট-এর সাথে কার্বন-মনোক্সাইড থাকে। ইহা খুবই বিষাক্ত গ্যাস যা মানুষকে ২/৩ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুর কারণ ঘটাতে পারে।
২৪। তাড়াহুড়া করে কোন কাজ করা উচিত নয়। ধীর-স্থিরভাবে কাজ করা উচিত।
২৫। গাড়ী মেরামতের পর প্রথমে কারখানায় পরীক্ষা করতে হবে। সাঠক মনে হলে রাস্তায়ও পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়।
২৬। দাহ্য পদার্থ (পেট্রোল, ডিজেল, মোবিল, গ্রীজ) আগুন হতে যথাসম্ভব দূরে এবং সাবধানে রাখতে হবে।
২৭। কারখানায় কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণাৎ ইন্সট্রাক্টর বা সুপারকে অবহিত করতে হবে। তিনি প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তৎপর হবেন। প্রতিটি কারখানায় প্রাথমিক চিকিৎসার (first aid) ব্যবস্থা রাখা আবশ্যক।
গাড়ী চালাবার (start) পূর্বে কি কি করণীয়:
গাড়ী চালাবার পূর্বে নিম্নলিখিত নিয়মগুলি অবশ্য পালনীয় :
(ক) পেট্রোল অথবা ডিজেল আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
(খ) ডিপস্টিক (deep stick)-এর সাহায্যে পিচ্ছিলকারক (lubricating) তেলের পরিমাণ ঠিক আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে।
(গ) রেডিয়েটরের ঢাকনা খুলে দেখতে হবে পানির পরিমাণ ঠিক আছে কিনা। যদি ঠিক না থাকে তবে পরিমিত পরিমাণে পানি দিতে হবে।
(ঘ) ব্যাটারীতে তড়িদবিশ্লেষ্য (electrolyte) এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক (positive) ও ঋণাত্মক (negative) সংযোগ (connection) ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
(ঙ) গাড়ীর সব চাকার হাওয়া দেখে নিতে হবে। যদি চাকায় হাওয়া কম থাকে তবে হাওয়া দ্বারা পূর্ণ করে নিতে হবে। প্রয়োজনবোধে চাকার নাট পরীক্ষা করে দেখা আবশ্যক। (চ) সুইচ (switch) দিয়ে দেখতে হবে নির্দেশক আলো (indicator light), হর্ন (horn) ইত্যদি ঠিকমত কাজ করে কিনা।
(ছ) এমতাবস্থায় ইঞ্জিন চালিয়ে গাড়ী বেক (brake system) এবং হেড লাইট পরীক্ষা করে গাড়ী রাস্তায় চালানো যায়। ব্রেক পরীক্ষা না করে রাস্তায় চালানো উচিত নয়। তাতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।
8 thoughts on “কারখানায় নিরাপত্তামূলক নির্দেশাবলী”