আজকের আলোচনার বিষয় হলো ওয়েল্ডিং (Welding)। এটি এসএসসি ও দাখিল স্তরের “অটোমোটিভ ১” বইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ওয়েল্ডিং হলো একটি স্থায়ী জোড় প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে সমজাতীয় দুটি ধাতব খণ্ডকে তাপ বা তাপ ও চাপের সাহায্যে গলিত বা অর্ধগলিত অবস্থায় এনে একত্রে যুক্ত করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় বস্তুদ্বয়ের সংযোগ এতটাই মজবুত হয় যে তা ভাঙা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
যান্ত্রিক প্রযুক্তির আধুনিক বিশ্বে ওয়েল্ডিং প্রযুক্তি শিল্প, নির্মাণ, যানবাহন, অবকাঠামো নির্মাণ, মহাকাশ গবেষণা এবং জাহাজ নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এর ফলে, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং দক্ষ কারিগরি কর্মী তৈরির ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
এই পাঠে আমরা ওয়েল্ডিং প্রক্রিয়ার ধারণা, প্রকারভেদ, ব্যবহার ও এর বাস্তব জীবনে প্রয়োগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানব।
ওয়েন্ডিং (Welding)
যদিও জোড়া দেওয়ার জন্য রিভেটিং, সিমিং, সোল্ডারিং ও ব্রেজিং প্রভৃতি বিভিন্ন পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে, তবে শক্ত, স্থায়ী এবং ছিদ্ররোধী জোড় তৈরি করার ক্ষেত্রে ওয়েল্ডিং-এর কোনও বিকল্প নেই। বিশেষ করে এমন জোড় যেখানে শক্তি, স্থায়িত্ব ও নির্ভরযোগ্যতা অপরিহার্য, সেখানে ওয়েল্ডিং অত্যন্ত কার্যকর একটি সমাধান।
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক যান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ওয়েল্ডিং একটি অপরিহার্য প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শুধু ওয়ার্কশপে ভাঙা যন্ত্রাংশ জোড়া দেওয়া নয়, বরং এটি ব্যবহৃত হচ্ছে গ্যাস ও তেল শিল্পে, কৃষি যন্ত্রপাতিতে, নির্মাণ খাতে, রেলপথ, জাহাজ নির্মাণ এবং এমনকি মহাকাশ গবেষণার মত জটিল প্রযুক্তিতেও।
ওয়েল্ডিং প্রযুক্তির এই ব্যাপকতা ও বহুমুখী ব্যবহার একে আধুনিক যান্ত্রিক শিল্পে এক অবিচ্ছেদ্য উপাদানে পরিণত করেছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওয়েল্ডিং পদ্ধতির মধ্যে এসেছে বৈচিত্র্য ও প্রকারভেদের ব্যাপকতা। এখন বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন ধরণের ওয়েল্ডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যেমন: গ্যাস ওয়েল্ডিং, আর্ক ওয়েল্ডিং, টিগ ও মিগ ওয়েল্ডিং ইত্যাদি।
ফলে, ওয়েল্ডিং আজ শুধুমাত্র একটি মেরামতের কৌশল নয়, বরং এটি একটি আধুনিক, স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ প্রযুক্তি, যার গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে বিশ্বব্যাপী শিল্প ও প্রকৌশল জগতে।
ওয়েল্ডিংয়ের প্রকারভেদ (Types of Welding) :
বস্তু ধাতব ও অধাতব পদার্থের প্রকারভেদ, ধর্ম ও গুরুত্বের উপর ভিত্তি করে ওয়েল্ডিংকে নিচের প্রদত্ত প্রকারভেদ মোতাবেক মুখ্য ভাগে বিভক্ত করা যায় ।
বিভিন্ন প্রকার ওয়েল্ডিংয়ের বর্ণনা (Description of Deferent types of welding) :
ফিউশন ওয়েল্ডিং (Fusion welding) তাপের সাহায্যে ধাতব পদার্থকে সম্পূর্ণ গণিত অবস্থায় আনয়নপূর্বক কোন রূপ আঘাত বা চাপ ব্যতীত জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে ফিউশন ওয়েল্ডিং বলে। তুলমনামূলক পুরুত্ব ধাতব বস্তুতে শক্ত, মজবুত ও ছিদ্রমুক্ত জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে এ জাতীয় ওয়েল্ডিং ব্যবহৃত হয়। ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের শ্রেণিভেদের প্রচুর ভিন্নতা থাকলেও, সচরাচর ব্যবহৃত ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি বা বিবরণ নিচে প্রদত্ত হলো।
১. আর্ক ওয়েল্ডিং (Are Welding) :
বিদ্যুৎ পরিবাহী দুটি সমজাতীয় বস্তুকে সামান্য ব্যবধানে এনে বৈদ্যুতিক স্পার্ক কর্তৃক সৃষ্ট আর্ক দ্বারা ঝালাইকরণ বা জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে আর্ক ওয়েল্ডিং বলে। স্পার্কের ওয়েল্ডিং সম্পন্ন করা হয়। এসি/ডিসি দ্বারাই এ আর্ক সৃষ্টি করা সম্ভব। সাধারণত ২৫-৩০ ওয়ার্কিং ভোল্টেজে আর্ক-ওয়েন্ডিং করা হয়। ফাঁকা স্থান মেটাল দ্বারা পূরণের জন্য ফ্লাক্সযুক্ত ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয়। ইলেকট্রোড ব্যবহারের পদ্ধতিগত প্রকারভেদের উপর ভিত্তি করে আর্ক ওয়েল্ডিংকে নিচের দুটি ভাগে আবার বিভক্ত করা যায়:
ক. মেটাল আর্ক ওয়েন্ডিং (Metal Arc Welding):
মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং করাকালীন সময়ে বৈদ্যুতিক স্পার্কের সঙ্গে সঙ্গে এক দিকে যেমন কার্যবস্তু গলে, অন্য দিকে ইলেকট্রোডও খরচ হয়। ইলেকট্রোডের মেটাল, বাস মেটালের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জোড়া দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করে। এ জাতীয় আর্ক ওয়েল্ডিং একটি বহুল প্রচলিত সাধারণত ধাতু জোড়া দেওয়ার পদ্ধতি।
খ. কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং (Carbon Are Welding)
কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিংয়ে কার্বন ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয় যা স্পার্ক বা আর্কের সঙ্গে খরচ হয় না। কার্বন ইলেকট্রোড ও মেটালের মধ্যে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জোড়া দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করে। এ ক্ষেত্রে অক্সিডাইজেশন প্রতিরোধের জন্য পৃথক ফ্লস্ক রড ব্যবহার করতে হয়। পাতলা স্টিল ও কপারের ন্যায় ধাতব বস্তু ওয়েল্ডিংয়ের জন্য উল্লেখিত কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং অপরিহার্য ।
২. ইনার্ট গ্যাস আর্ক ওয়েল্ডিং (Inert Gas Are Welding)
ইনার্ট গ্যাস আর্ক ওয়েল্ডিং-এর প্রকার বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিক আর্ক ওয়েল্ডিং। সাধারণত স্টেনলেস স্টিল, এ্যালয় স্টিলের ন্যায় ধাতব বস্তু জোড়া দেওয়ার জন্য এ পদ্ধতি যথার্থ। অক্সিডাইজেশন প্রতিরোধের নিমিত্তে গ্যাসের আবদ্ধের মধ্যে রেখে যে আর্ক ওয়েল্ডিং করা হয় তাকে ইনার্ট গ্যাস আর্ক ওয়েল্ডিং বলে। আর্গন বা হাইড্রোজেন গ্যাস এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় বলে এটা অন্যান্য আর্ক ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় কিছুটা ব্যয়বহুল। ইলেকট্রোড খরচের পদ্ধতিভেদে এটি নিচের দুই প্রকার হয়। যথা-
ক. ইনার্ট গ্যাস টাংস্টেন আর্ক ওয়েল্ডিং (টিপ) (Tungstan Inert Gas Are Welding) :
একে সংক্ষেপে টিগ ওয়েন্ডিং বলে। সাধারণত খরচ হয় না, এ জাতীয় দুটি টাংস্টেন ইলেকট্রোডকে হাইড্রোজেন বা আরগন গ্যাসের প্রবাহের মধ্যে আবদ্ধ রেখে টিগ ওয়েন্ডিং সম্পন্ন করতে হয়। চিত্রে হাইড্রোজেন ও আরগন গ্যাসের দুটি প্রবাহ চিত্র দেখানো হলো।
খ. ইনার্ট গ্যাস মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং (MetalInert gas arc welding):
সংক্ষেপে একে মিগ ওয়েন্ডিং বলে। হাইড্রোজেন আরগন গ্যাসের প্রবাহের মধ্যে অটোমেটিকভাবে আগত ও ক্রমাগতভাবে খরচ হয় এ জাতীয় ওয়্যার ইলেকট্রোডের সাহায্যে যে ওয়েল্ডিং সম্পন্ন হয় তাকে মিগ ওয়েন্ডিং বলে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ জাতীয় ওয়েল্ডিং সম্পন্ন হয় বিধায় অধিক হারে ওয়েল্ডিংয়ের জন্য উৎপাদনমুখী কল কারখানায় এর ব্যবহার সর্বাধিক। অটোমোবাইলের ক্ষেত্রে ইঞ্জিন ক্র্যাংক শ্যাফট রিমোটলিং-এর ক্ষেত্রে এ জাতীয় ওয়েন্ডিং ব্যবহৃত হয়।
৩. গ্যাস ওয়েল্ডিং (Gas Welding) :
অক্সিজেনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিন বা প্রোপেন গ্যাসের সংমিশ্রণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অগ্নি শিখা তৈরি করে ফিলার রড ব্যবহারের মাধ্যমে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে গ্যাস ওয়েন্ডিং বলে। গ্যাসসমূহ সাধারণত উচ্চ চাপে সিলিন্ডারের মধ্যে আবদ্ধ থাকে।
অটোমোটিভের ক্ষেত্রে এ জাতীয় গ্যাস ওয়েন্ডিংয়ের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। অক্সিজেনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিন বা প্রোপেন গ্যাস ব্যবহৃত হয় বিধায় একে নিম্নের দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ক) অক্সি- অ্যাসিটিলিন গ্যাস ওয়েন্ডিং। খ) অক্সি- প্রোপেন (ম্যাপ) গ্যাস ওয়েন্ডিং।
নন ফিউশন ওয়েন্ডিং (Non Fusion Welding)
তাপের সাহায্যে ধাতুকে উত্তপ্ত লাল অবস্থায় বা অর্ধগলিত অবস্থায় এনে তাৎক্ষণিক অবস্থার চাপের মাধ্যমে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে মন ফিউশন ওয়েল্ডিং বলে। আজ হতে প্রায় তিন হাজার বছর আগে হতে কামারশালায় হাত ও হাতুড়ির সাহায্যে এ জাতীয় জোড়া দেওয়া হয়ে আসছে। আজকাল অনেক আধুনিক পদ্ধতিতে মেশিনের সাহায্যে এ জাতীয় ওয়েল্ডিংয়ের মাধ্যমে জোড়া দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন হয়ে থাকে। জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিভেদে একে নিম্নের কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
১. রেজিস্টেন্স-ওয়েল্ডিং (Resistance Welding)
রেজিস্টেন্স ওয়েল্ডিং মূলত মেশিনের সাহায্যে করা হয়ে থাকে। এ জাতীয় মেশিনকে স্পট ওয়েন্ডিং মেশিন বলে। স্পট ওয়েন্ডিং মেশিন হস্ত বা পদচালিত হতে পারে। চিত্রে এ জাতীয় পদচালিত একটি মেশিন দেখানো হয় লো-ভোল্টেজ উচ্চমাত্রার বাধা অতিক্রমের জন্য, উচ্চহারে কারেন্ট প্রবাহের ফলে কারেন্ট বাধাপ্রাপ্ত হলে টার্মিনাল এর দুই প্রান্তে পর্যাপ্ত তাপ উৎপন্ন করে।
এ টার্মিনালদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে জোড়া দেওয়ার ধাতব বস্তুকে রেখে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে তাপে ধাতব বস্তু অর্ধগলিত অবস্থায় এসে, চাপের ফলে জোড়া লেগে যায়। এ জাতীয় জোড়া দেওয়া পদ্ধতিকে রেজিস্টেন ওয়েল্ডিং বলে। একে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিভেদে নিচের তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় :
ক. স্পর্ট ওয়েল্ডিং (Spot Welding)
জোড়া দেওয়ার জন্য ধাতব বস্তুর নির্ধারিত স্থানকে একটির উপর অপরটি স্থাপন করে অর্থাৎ ওভারলেপিং অবস্থায় এনে টার্মিনালদয়ের ফাঁকা মধ্যবর্তী স্থানে রেখে পায়ে হাতে চাপ প্রয়োগ করে কিছু স্থান পর পর যে জোড়া দেওয়ার কাজটি করা হয় তাকে স্পট ওয়েল্ডিং বলে।
এ জাতীয় ওয়েল্ডিংয়ে ফিলার রড/ইলেকট্রোড কোনোটাই ব্যবহৃতহয় না, সমজাতীয় দুটি ধাতব খণ্ড অর্ধগলিতঅবস্থায় এসেপরস্পর জোড়া লেগে যায়। অটোমোটিভের গাড়ি, বাড়ি
তৈরিকরণে এ জাতীয় স্পর্ট-ওয়েল্ডিং বহুল ভাবে ব্যবহৃত হয়।
খ. সিম ওয়েন্ডিং (Seam welding) :
স্পট ওয়েল্ডিং-এর ন্যায় জোড়া দেওয়া দুটি ধাতব শিটকে আরও শক্ত ও অনড়করণের নিমিত্তে এ জাতীয় সিম-ওয়েল্ডিং করা হয়। সিমিংয়ের মাধ্যমে জোড়া দেওয়া স্থানকে স্পট ওয়েল্ডিং মেশিনের টার্মিনালঘরের মধ্যবর্তী স্থানে রেখে কিছু স্থান পর পর চাপ দিয়ে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে সিম ওয়েল্ডিং বলে।
গ. রেজিস্টেন্স বাট-ওয়েল্ডিং (Resistance Butt Welding) :
ধাতব খণ্ডের বা ধাতু নির্মিত সমব্যাসের দুইখণ্ড পাইপকে মেশিনের সাহায্যে বেঁধে দুই প্রান্তে লো ভোল্টেজ উচ্চ বিদ্যুৎ প্রবাহ করলে দুই প্রান্তই উত্তপ্ত লাল হয়ে যায়। এরপর দুই প্রাপ্ত বরাবর পরিমিত চাপ প্রয়োগ করা হলে দুই প্রাপ্ত পরস্পরের সঙ্গে শক্ত মজবুত ও ছিদ্রযুক্ত জোড়া লেগে যায়।
পাইপ বা ধাতু নির্মিত বারের দুই প্রাপ্ত জোড়া দেওয়ার জন্য এ জাতীয় রেজিস্টেন্স বাট ওয়েল্ডিং ব্যবহৃত হয়। অধিক পরিমাণে এ জাতীয় জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে রেজিস্টেন্স বাট ওয়েল্ডিংয়ের প্রচলন রয়েছে।
২. ব্রেজ-ওয়েল্ডিং (Braze Welding)
জোড়া দেওয়ার বস্তুকে/মেটালকে গলিত বা অর্ধগলিত অবস্থায় না এনে, কেবল লাল উত্তপ্ত অবস্থায় এনে অথবা পর্যাপ্ত উত্তপ্ত অবস্থায় নেয়, অপেক্ষাকৃত কম গলনাঙ্ক ধাতু পলিয়ে উল্লিখিত উত্তপ্ত স্থানে প্রয়োগপূর্বক জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে ব্রেজ ওয়েল্ডিং বলে। অটোমোটিভেরগাড়ির বডি মেরামত, এগজস্ট পাইপ মেরামত, এমনকি অ্যালুমিনিয়াম নির্মিত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ জোড়া দেওয়া ক্ষেত্রে ব্রেজ ওয়েল্ডিং যথোপযুক্ত ।
ক. ব্রেজিং (Brazing )
অক্সি-অ্যাসিটিলিন বা অক্সি প্রোপেন গ্যাস দ্বারা মেটালঘয়ের জোড়া স্থানকে লাল উত্তপ্ত করে, ব্রেজিং রড গলিয়ে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে ব্রেজিং বলে। ব্রেজিংকালে তরল অথবা পাউডার জাতীয় ফ্রান্স, অক্সিডাইজেশন প্রতিরোধকল্পে ও ভালো জোড়া নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। তাপ প্রয়োগের সাহায্যে এ জাতীয় জোড়া দেওয়া সম্পন্ন করতে হয় বিধায় ব্লো ল্যাপ দ্বারাও এ জাতীয় জোড়া দেওয়া যায় অথবা গ্রাসের কার্বুরাইজিং শিখা দ্বারাও জোড়া দেওয়া সম্পন্ন করা যায়।
খ. সোল্ডারিং ( Soldering )
কামারশালায় তাঁতাল বা সোল্ডারিং আয়রন ব্রো-ল্যাপ দ্বারা উত্তপ্ত করে বরং সোল্ডার গলিয়ে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে সাধারণত সোল্ডারিং বলে। আজকাল তড়িৎ কাজ সম্পন্নকরণের নিমিত্তে সোল্ডারিং আয়রনকে বৈদ্যুতিক প্রবাহের সাহায্যে উত্তপ্ত করে উল্লিখিত পদ্ধতিতে ছোটখাটো জোড়া দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করা হয়। টিন জাতীয় নরম ধাতু ও তারের সংযোগ ক্ষেত্রে সোল্ডারিংয়ের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।
৩. প্লাস্টিক ওয়েল্ডিং (Plastic Welding)
প্লাস্টিক জাতীয় বস্তু তাপ অথবা তাপ ও তাপ পদ্ধতি প্রয়োগ করে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে প্লাস্টিক ওয়েন্ডিং বলে। আজকাল প্লাস্টিকের পাইপ, প্লাস্টিকের শিট, এমনকি প্লাস্টিকের অনেক যন্ত্রাংশই কারিগরি প্রযুক্তি ক্রমবিকাশে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
মরিচা প্রতিরোধ ও নির্মাণ খরচ কম হওয়ায় আজকাল প্লাস্টিকের বস্তু বা যন্ত্রাংশ ব্যবহারের ব্যাপকতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্লাস্টিকের বস্তুর ব্যবহারের ব্যাপকতা যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে, স্বাভাবিক গতিতেই প্লাস্টিক ওয়েল্ডিংয়ের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্লাস্টিককে স্বল্প তাপমাত্রায় অর্থাৎ ২৪৬°-৩৫৭° সে. তাপমাত্রায় অর্ধগলিত বা নরম অবস্থায় এনে জোড়া দেওয়া হয়। পদ্ধতি ভেদে প্লাস্টিক ওয়েল্ডিং নিচের দুই প্রকার :
ক. কামারশালার চুলা যারা এটি অত্যন্ত আদি পদ্ধতি। কামারশালায় ভাঁতাল চুলায় উত্তপ্ত করে প্লাস্টিকের জোড়া স্থানে লাগিয়ে যখন অর্ধগলিত অবস্থায় আসে, তখন চাপ প্রয়োগ করে পরস্পরের সঙ্গে জোড়া দেওয়া যায়।
খ. বৈদ্যুতিক বা গ্যাস প্রবাহ দ্বারা প্লাস্টিকের বন্ধ এ জাতীয় ওয়েল্ডিংয়ে বৈদ্যুতিক টর্চ অথবা গ্যাস প্রজ্জ্বলিত বিশেষ ধরনের তাপ নিয়ন্ত্রিত টর্চ রা জোড়া দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়। জোড় স্থান বাট অথবা ফিলেট অবস্থায় আনয়নপূর্বক বিশেষ ধরনের টর্চ দ্বারা উল্লিখিত তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে প্লাস্টিকের ফিলার রড ব্যবহার করে চিত্রের ন্যায় জোড়া দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন হয়।
ওয়েন্ডিয়ের প্রয়োগ ক্ষেত্র (Application of Welding)
প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ ও ক্রমউন্নতির সাথে সাথে ওয়েন্ডিংয়ের প্রয়োগ ক্ষেত্রের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায়। নিচে ওয়েল্ডিংয়ের কয়েকটি প্রয়োগ ক্ষেত্রের মুখ্য অথচ সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রদত্ত হলো :
১. অটোমোটিভের ক্ষেত্রে
ক. ইঞ্জিন উৎপাদনে।
খ. ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরিকরণে
গ. গাড়ি / ইঞ্জিন মেরামতের কাজে ।
ঘ. গাড়ি-বডি তৈরিকরণে।
৫. গাড়ি-ফ্রেম তৈরিকরণে
চ. গাড়ির সাইলেন্সার তৈরি/মেরামতে ।
ছ. গাড়ি / ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ মেরামতকরণে।
জ. পাড়ি সার্ভিসিংকরণে।
২. উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানার ক্ষেত্রে :
ক. উৎপাদন দ্রব্য প্রস্তুত বা তৈরিকরণে।
খ. জটিল যন্ত্রাংশ উৎপাদনে।
গ. ान জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে।
ঘ. যন্ত্রাংশ মেরামতে ।
ঙ. স্বল্প খরচের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে।
চ. ফাউন্ডি/মোল্ডিংয়ের বিকল্প হিসেবে।
৩. কৃষি ক্ষেত্রে
ক. কৃষি / ইরিগেশন যন্ত্রপাতি মেরামতে।
খ. কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনে।
গ. পানি সরবরাহ লাইন মেরামতে।
ঘ. পানি সরবরাহ লাইন জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে
ঙ. স্বল্প খরচে কৃষি যন্ত্রপাতি জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে।
৪. গ্যাস ফিল্ডে
ক. গ্যাস সরবরাহ লাইন মেরামতে।
খ. গ্যাস সরবরাহ লাইন তৈরিকরণে।
গ. গ্যাস উত্তোলন ক্ষেত্রের যন্ত্রপাতি জোড়া দেওয়ার কাজে
ঘ. গ্যাস নিয়ন্ত্রণ ভালভ সংযোগ / মেরামতের ক্ষেত্রে।
ঙ. গ্যাস ফিল্ড সরবরাহ লাইন সার্ভিসিং করণের ক্ষেত্রে।
৫. তেল ক্ষেত্রে
ক. তেল ক্ষেত্রের সরবরাহ লাইন স্থাপনে।
খ. তেল ক্ষেত্রের যন্ত্রপাতি মেরামতে ।
গ. তেল ক্ষেত্র সার্ভিসিংয়ে।
ঘ. ক্রোড অয়েল উত্তোলনের যন্ত্রপাতি স্থাপনার ক্ষেত্রে।
ঙ. ক্রোড অয়েল উত্তোলনের যন্ত্রপাতি স্থাপনার ক্ষেত্রে।
চ. রিফাইনারি কারখানা স্থাপন কাজে।
৬. ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে
ক. লৌহজাত যে কোনো বস্তু/ আসবাবপত্র মেরামতে।
খ. স্টিল আলমারি, ফাইল কেবিনেট ও অন্যান্য লৌহজাত আসবাবপত্র তৈরির কাজ।
গ. লৌহজাত যে কোনো অবকাঠামো তৈরিকরণে।
ঘ. গ্রিল / লৌহজাত যে কোনো বেড়া নির্মাণে। যে কোনো লৌহাজাত বস্তু জোড়া দেওয়ার কাজে।
চ. ফ্রিজ বা এ জাতীয় যন্ত্র / যন্ত্রাংশে নিশ্ছিদ্র পাইপলাইন জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে।
৭. যান্ত্রিক ওয়ার্কশপের কর্মকান্ডে
ক. ভাঙা যন্ত্রপাতি মেরামত বা জোড়া দেওয়ার কাজে।
খ. মেশিন / যন্ত্রপাতি স্থাপনার কাজে।
গ. ফিলিং করে যন্ত্রাংশের পূর্বাবস্থায় আনায়নের কাজে।
ঘ. যে কোনো প্রয়োগযোগ্য যান্ত্রিক মেরামতে।
ঙ. পানির ট্যাংকে নির্মাণ কাজে।
চ. দুই বা ততোধিক যন্ত্রাংশ জোড়া দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ
ছ. স্বল্প খরচে যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও মেরামতে । যন্ত্র তৈরির কাজে।
জ. স্বল্প সময়ে যান্ত্রিক কার্য ও সার্ভিসিংয়ে ইত্যাদি কাজে।
ওয়েল্ডিংয়ের জোড়ার প্রকারভেদ (Types of Welding Joints) :
শক্ত, মজবুত ও নিশ্ছিদ্র ওয়েল্ডিংয়ের পূর্বশর্ত হচ্ছে ওয়েল্ডিং স্থানকে ওয়েন্ডিংয়ের জন্য যথোপযুক্তভাবে প্রস্তুতকরণ ও যথাস্থানে যথার্থ জোড়াটি নির্বাচন এবং প্রদানকরণ। এজন্য ওয়েল্ডিংয়ের জোড়ার প্রকারভেদ সম্পর্কে অবহিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
ওয়েল্ডিংয়ে একটি ধাতব খণ্ডের সঙ্গে অপরটি অর্থাৎ ওয়েল্ডিংয়ের পূর্বে এদের অবস্থানভেদে জোড়াকে প্রধানত নিম্নে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে :
১ বাট জয়েন্ট (Butt Joint)
এ পদ্ধতিতে ধাতব বস্তুদ্বয়কে ওয়েল্ডিংয়ের সাহায্যে জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে বা ধাতব খণ্ডষয়কে পরস্পরের মুখোমুখি স্থাপন করে, জোড়া দেওয়াকে বাট জয়েন্ট বলে। শক্ত, মজবুত এবং নিঃচ্ছিন্ন জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে এ জাতীয় জয়েন্ট / জোড়া ব্যবহৃত হয়ে থাকে। চিত্রে এ জাতীয় কয়েকটি বাট জয়েন্টের নমুনা দেখানো সিলে “ডিে হলো।
২. ফিলেট জয়েন্ট (Fillet Joint)
এ পদ্ধতিতে জোড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে ধাতব বস্তুর একটির উপর অপর একটি বস্তু স্থাপন করে ধাতব প স্থাপনপূর্বক জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে ফিলেট জয়েন্ট বলে। অবকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে এজাতীয় জয়েন্টের ব্যবহার সর্বাধিক।
এটি মজবুত জয়েন্টের নিশ্চয়তা বিধান করে। চিত্রে এ জাতীয় কয়েকটি ফিলেট জয়েন্টের নমুনা দেখানো হলো। বাট জয়েন্টের প্রকারভেদ শক্ত মজবুত ও নিশ্চিদ্র জয়েন্টের নিমিত্তে ওয়েল্ডিংয়ের জোড় স্থানকে বিভিন্ন আকৃতিতে তৈরি করা হয় । এ আকৃতিভেদে বা জয়েন্ট আট প্রকার :
ক. ক্ষয়ার বাট জয়েন্ট দুই প্রাপ্ত সামান্য ফাঁকা রেখে ও পরস্পর মুখোমুখি স্থানে করে, জোড়া দেওয়ার 1 পদ্ধতিকে উঁচু করা দুই প্রান্তের বাট জয়েন্ট বলে।
খ. উঁচু করা দুই প্রান্তে বার্ট জয়েন্ট মুখোমুখি অবস্থিত দুই প্রাপ্তকে উপরের দিকে বেঁকে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে ক্ষরার বাট্ জয়েন্ট বলে।
গ. সিঙ্গেল জে এন্ড জয়েন্ট জোড়স্থানটির দুই প্রান্তকে মুখোমুখি বসালে খালি স্থানটি ইংরেজি বড় হাতের জে বর্ণের ন্যায় দেখাবে। একে সিঙ্গেল জে গ্রুভ জয়েন্ট বলে।
ঘ. সিঙ্গেল ডি গ্রুত জয়েন্ট মুখোমুখি অবস্থিত ধাতব খণ্ডদ্বয়ের খালি স্থানকে ইংরেজি বর্ণের ‘ডি’ এর ন্যায় দেখাবে। এ অবস্থায় জোড়া দেওয়াকে সিঙ্গেল ডি এন্ড ডায়েন্ট বলে।
ঙ. সিঙ্গেল বেভেল গ্রুন্ড জয়েন্ট জোড় স্থান ভি বর্ণের একটি বাহু অথবা বেভেল দাঁতের এক প্রান্তের ন্যায় দেখাবে। এ আকৃতিতে জোড়া দেওয়াকে সিঙ্গেল বেভেল এন্ড জয়েন্ট বলে।
চ. সিমেন্স ইউ গ্রুত জয়েন্ট জোড় স্থানের আকৃতি ইংরেজি বড় বর্ণের ইউ-এর মতো দেখাবে। জোড় স্থানকে এ আকৃতিতে তৈরি করে জোড়া দেওয়াকে সিঙ্গেল ইউ গ্রুন্ড জয়েন্ট বলে।
ছ. ডাবল ভি এড জয়েন্ট ধাতব খণ্ডের দুই প্রান্তকে মুখোমুখি বসানো হবে, উপরে ও নিচের ফাঁকা স্থানকে দুটি ইংরেজি ডি বর্ণের ন্যায় দেখাবে। এ আকৃতিতে এনে জোড়া দেওয়াকে ডবল ডি গ্রুন্ড জয়েন্ট ।
জ. ডবল বেভেল এন্ড জয়েন্ট ধাতব খণ্ডদ্বয়কে মুখোমুখি বসানো হলে এর এক প্রান্তকে বেভেল দুটি প্রাপ্তের ন্যায় দেখাবে। এ আকৃতিতে এনে জোড়া দেওয়া হলে এ জাতীয় জোড়াকে ডবল বেভেল এন্ড জয়েন্ট বলে। ফিলোট জয়েন্টের প্রকারভেদ: ধাতব বস্তু বা ধাতব খণ্ডের একটির উপর অপরটি স্থাপনের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে ফিলেট মায়েন্টকে নিচের চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ঝ. ওভারলেপ জয়েন্ট ধাতব খণ্ডের এক পাশের কিছু অংশের উপর অপরটির কিছু অংশ স্থাপন করে, এক পাশে বা উভয় পাশে জোড়া দেওযার পদ্ধতিকে যথাক্রমে সিঙ্গেল বা ডাবল ওভারলেপ জয়েন্ট বলে।
ঞ. এজ-জয়েন্ট ধাতব বস্তুর বা খণ্ডদ্বয়ের এক পাশের উপর অপর পাশ স্থাপন করে, এক পাশে বা উভয় পাশে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে যথাক্রমে এজ জয়েন্ট বলে। কর্নার ।
ট. তব খণ্ডের দুটি এজকে কৌণিক অবস্থানে রেখে, বাইরে বা ভেতরের এজে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে কর্ণার জয়েন্ট বলে।
ঠ. টি-রেস্ট। একটি ধাতব খণ্ডের উপর অপর একটি ধাতব শত ইংরেজি বড় হাতের অক্ষর ‘টি’ এর ন্যায় রেখে এর এক পাশে অথবা উভয় পাশে ওয়েন্ডিংয়ের মাধ্যমে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে যথাক্রমে নিজেল বা ভবন ‘টি’
ওয়েল্ডিং কাজে পালনীয় সতর্কতা (Safety Precaution in Welding):
সচরাচর ব্যবহৃত ওয়েল্ডিংয়ের প্রকারভেদের ভিন্নতা থাকলে প্রধান প্রধান ওয়েন্ডিংসমূহ হলো বৈদ্যুতিক আর্ক যারা নতুবা গ্যাসের প্রজ্জ্বলিত শিখা দ্বারা সক্ষ্ম হয়ে থাকে বিধায় এ দুটি ক্ষেত্রেই পৃথক পৃথক সাবধানতা নিচে প্রদত্ত লো
১. লরেন্টের স্থান উত্তমরূপে পরিষ্কার করতে হবে।
২. যথার্থ স্থানের জন্য যথার্থ অরেন্ট নির্বাচন করতে হবে।
৩. সঠিক ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে হবে।
৪. ওয়েন্ডিংয়ের জন্য নির্ধারিত পরিদের পরিধান করতে হবে।
৫. ওয়েল্ডিং গণস বা হেলমেট অবশ্য পরিধানপূর্বক ওয়েল্ডিং করতে হবে।
৬. হ্যান্ড গ্লোভস পরিধান করতে হবে।
৭. যথার্থ কারেন্ট সরবরাহ/ সেট করতে হবে।
৮. হোন্ডারের নির্ধারিত স্থানে অনড়ভাবে ইলেকট্রাড লাগাতে হবে।
১. ওয়েন্ডিং কার্ডের জন্য পর্যাপ্ত আলো বাতাস থাকতে হবে।
১০. ওয়েন্ডিংয়ের নিকটবর্তী স্থানে কোনো দাহ্য পদার্থ বা তেলের আধার বা পেট্রোলিয়ামজাত দাহ্য থাকতে পারবে না।
১১. স্পট-ওয়েল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে টার্মিনাল টিপ পরিষ্কার রাখতে হবে।
১২. আর্থিং ক্ল্যাম্প অনড় ও শক্তভাবে লাগাতে হবে।
১৩. প্লাস্টিক ওরেল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত তাপ ও চাপ প্রয়োগ।
গ্যাস ওয়েল্ডিংয়ের পালনীয় সতর্কতা:
১। ফিলার রডের উপরের মাথা বাঁকা করতে হবে।
২। সঠিক ফিলার রড নির্বাচন করতে হবে।
৩। জয়েন্টের স্থান উত্তমরূপে পরিষ্কার করতে হবে।
৪। সঠিক / যথার্থ জয়েন্ট নির্বাচন করতে হবে।
৫। তীর চিহ্নের অনুকূলে নব ঘুরিয়ে গ্যাস ছাড়তে হবে।
৬। নির্ধারিত ওয়ার্কিং প্রেসার সেট করতে হবে।
৭। নির্ধারিত নজেল টিপ নির্বাচন ও সংযোগ করতে হবে।
৮। টর্চের মুখ শরীরের ও সিলিন্ডারের বিপরীত দিকে রেখে অগ্নি সংযোগ করতে হবে।
৯। ওয়েল্ডিং সিলিন্ডার ক্যারিয়ারের বিপরীত দিকে রেখে অগ্নি সংযোগ করতে হবে।
১০। দাহ্য পদার্থ ও তেলাধার হতে নিরাপদ দূরত্বে ওয়েল্ডিং করতে হবে।
১১। বামমুখী/জ্ঞানমুখী ওয়েল্ডিং নির্বাচনপূর্বক ওয়েল্ডিং করতে হবে।
১২। প্রটেকটিভ গগলস ও অ্যাপ্রন পরিধান করতে হবে।
১৩। নির্দিষ্ট যথার্থ অগ্নিশিখা নির্বাচন ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
১৪ । তাৎক্ষণিক বন্ধের জন্য রেঞ্জকে অ্যাসিটিলিন সিলিন্ডার ভালভে রেখে দিতে হবে ।
১৫। সিলিন্ডার ভালভ খোলা ও বন্ধ করার জন্য নির্ধারিত রেঞ্চ ব্যবহার করতে হবে।
১৬। পুনঃকন্ট্রোল ভালতায় খুলে হুজ পাইপের গ্যাস বের করতে হবে।
১৭। টর্চের কন্ট্রোল ভালভয়ে খুলে হুজ পাইপের গ্যাস বের করতে হবে।
১৮। কার্যান্তে তীর চিহ্নের বিপরীত ফ্লাক্স নির্বাচন করতে হবে।
১৯। ব্রেজিংয়ের জন্য নির্ধারিত ফ্লাক্স নির্বাচন করতে হবে।
২০। ব্রেজ ওয়েল্ডিং কালে যথার্থ ব্রেজিং রড নির্বাচন করতে হবে।
২১। গ্যাস সিলিন্ডার যথাসম্ভব উত্তাপবিহীন স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে ।
২২। ক্যারিয়ারের নিরাপত্তা শিকল দ্বারা সিলিন্ডার বেঁধে রাখতে হবে।
প্রশ্নমালা-১
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১। শক্ত ও ছিদ্রমুক্ত জোড়ার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতিতে জোড়া দেওয়া হয়?
২। ওয়েল্ডিং প্রধানত কত প্রকার ও কী কী?
৩। আঘাত বা চাপ ব্যতীত জোড়ার ওয়েন্ডিং পদ্ধতিকে কী বলে?
৪। আর্ক ওয়েল্ডিং কী ?
৫। কার্বন ইলেকট্রোড কোন ওয়েন্ডিং পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়?
৬। ইনার্ট গ্যাস আর্ক ওয়েল্ডিং মূলত কোন ধরনের অধাতু জোড়া ব্যবহৃত হয়।
৭। ফ্র্যাংক শ্যাফট রিমেটেলিং এ কোন ধরনের ওয়েল্ডিং পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
৮। গ্যাস ওয়েল্ডিং-এ অক্সিজেনের সাথে কোন কোন গ্যাসের প্রজ্জ্বলন ঘটানো হয়?
৯। অ্যালুমিনিয়াম নির্মিত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ জোড়া দিতে কোন পদ্ধতি যথোপযুক্ত?
১০। টিন জাতীয় নরম ধাতু ও তারের সংযোগের ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি ব্যাপক প্রচলিত।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন :
১১। ওয়েল্ডিং বলতে কী বোঝায় ?
১২। আর্ক ওয়েল্ডিং বলতে কী বোঝায়?
১৩। টিগ ওয়েন্ডিং বলতে কী বোঝায়?
১৪। মিগ ওয়েল্ডিং বলতে কী বোঝায়?
১৫। রেজিস্টেন্স ওয়েল্ডিং বলতে কী বোঝায়?
১৬। স্পট ওয়েল্ডিং-এ ইলেকট্রোড/ফিলার রড ব্যবহৃত
১৭। ব্রেজ ওয়েন্ডিং কীভাবে করা হয়? হয় না কেন?
১৮। অটোমোটিভের ক্ষেত্রে ওয়েল্ডিং-এর পাঁচটি প্রয়োগ দেখাও।
১৯। ওয়েল্ডিং জোড়া কী কী ভাগে ভাগ করা যায়?
২০। ওয়েল্ডিং কাজে পালনীয় পাঁচটি সতর্কতা উল্লেখ কর।
রচনামূলক প্রশ্ন :
২১। ওয়েল্ডিং বলতে কী বোঝায়? ওয়েল্ডিং-এর প্রকারভেদ দেখাও।
২২ । ফিউশন ওয়েন্ডিং বলতে কী বোঝায়? মেটাল আর্ক ও কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং-এর মধ্যে পার্থক্য লেখ।
২৩। টিগ ও মিগ ওয়েল্ডিং-এর মধ্যে প্রভেদ দেখাও।
২৪। ওয়েল্ডিং-এর প্রয়োগ দেখাও
২৫। নন ফিউশন ওয়েল্ডিং বলতে কী বুঝায়? স্পট ওয়েল্ডিং পদ্ধতি সম্পর্কে যা জানো লেখ ।
২৬। ওয়েল্ডিং জোড়ের প্রকারভেদ দেখাও।
২৭। ফিলেট জোড়ের চিত্রসহ প্রকারভেদ দেখাও
২৮ । ওয়েল্ডিং কাজে পালনীয় সতর্কতাগুলো বিবৃতি কর ।