ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি – এই পাঠটি “অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং” বিষয়ের “চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি” অধ্যায়ের একটি পাঠ।

Table of Contents

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি

ইঞ্জিন বিভিন্নভাবে চালানো যায়। যেমন : (১) ক্র্যাঙ্কিং মোটর বা সেলফ স্টার্টার (cranking motor or self starter ), (২) হ্যান্ডেল দ্বারা চালানো, (৩) পাইলট ইঞ্জিন, (৪) সঙ্কুচিত বাতাস (compressed air), (৫) বিস্ফোরণের সাহায্যে, (৬) রশি দ্বারা টেনে এবং (৭) পদাঘাত করে। উল্লেখিত পদ্ধতিসমূহের বিবরণ নিম্নে দেওয়া হলো।

 

(১) ক্র্যাঙ্কিং মোটর বা সেলফ স্টার্টার :

ইঞ্জিন চালু করাই এর প্রধান কাজ। জেনারেটর যান্ত্রিক শক্তি থেকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ যান্ত্রিক শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। কিন্তু ক্র্যাঙ্কিং মোটর বৈদ্যুতিক শক্তি থেকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ ক্র্যাঙ্কিং মোটর বিদ্যুৎ গ্রহণ করে কিন্তু কাজ করে যান্ত্রিক শক্তি। 

 

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

নিম্নলিখিত যন্ত্রাংশ নিয়ে ক্র্যাঙ্কিং মোটর গঠিত। যেমন :

(১) আর্মেচার ১টি, (২) ফিল্ড কয়েল ৪টি, (৩) কমুটেটর ১টি, (৪) কার্বন ব্রাশ ৪টি, (৫) ওভার রানিং ক্লাচ বা বেনডিকস্ ড্রাইভ ১টি, (৬) কমুটেটর এন্ড ফ্রেম ১টি, (৭) ড্রাইভ  এন্ড ফ্রেম ১টি, (৮) সেন্টার বিয়ারিং ১টি, (৯) সলেনয়েড সুইচ বা ম্যাগনেটিক সুইচ ২টি, (১০) থ্রো-বোল্ট ১টি, (১১) বুশ ২টি এবং (১২) পিনিয়ন ১টি।

 

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

ক্র্যাঙ্কিং মোটরের কার্যাবলী :

সলেনয়েড বা ম্যাগনেটিক সুইচ অর্থাৎ স্টার্টিং সুইচ যখন অন করা হয় তখন ব্যাটারী হতে বিদ্যুৎ এসে ক্র্যাঙ্কিং মোটরের ফিল্ড কয়েলকে সঞ্জীবিত করে। ফলে পোলপিসগুলি উঃ মেরু, দঃ মেরুতে রূপান্তরিত হয়। এই মেরু সমূহের মধ্যে একটা বলরেখার সৃষ্টি হয় এবং উঃ মেরু দঃ মেরুকে আকর্ষণ করে এবং দঃ মেরু উঃ মেরুকে আকর্ষণ করে। ফলে টর্কের সৃষ্টি হয় অর্থাৎ আর্মেচার শ্যাফট ঘোরে। আর্মেচার শ্যাফটের সাথে পিনিয়ন থাকে। এই পিনিয়ন ফ্লাইহুইলের সাথে সংযুক্ত হওয়ার ফলে ক্র্যাঙ্কশ্যাফট ঘুরে ইঞ্জিন চালু হয়।

মোটরযানে দুই ধরনের সেলফ স্টার্টার ব্যবহার করা হয়। যেমন : (১) বেনডিক্স ড্রাইভ (bendix drive) এবং (২) ওভার রানিং ড্রাইভ (over running drive)।

 

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

উল্লিখিত দুইটি ড্রাইভেই একটি করে পিনিয়ন থাকে যা ফ্লাইহুইলের রিং গিয়ারের সাথে সংযুক্ত হয়ে ইঞ্জিনকে চালু করে।

 

১। বেনডিক্স ড্রাইভ (bendix drive) :

এটি হেলিক্যাল গিয়ারের মাধ্যমে আর্মেচার শ্যাফটের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্লাইহুইলের সাথে যুক্ত হয়। যখন ইঞ্জিন চালানোর জন্যে সুইচ অন করা হয় তখন আর্মেচার শ্যাফট ঘুরতে থাকে। এই সময় হেভী স্পাইরাল স্প্রিং হেলিকসযুক্ত পিনিয়নকে ধাক্কা দিয়ে ফ্লাইহুইলের সাথে সংযুক্ত করে।

ফলে ফ্লাইহুইল ক্র্যাঙ্কশ্যাফট ঘুরে ইঞ্জিনকে চালু করে। যখন ইঞ্জিন চালু হয়ে যায় তখন মোটরের তুলনায় ইঞ্জিনের ঘূর্ণন বেশী (R. P. M) হয় এবং এর ঘূর্ণনের গতিও বিপরীত হয়। তাই হেলিক্‌সযুক্ত পিনিয়নটি ফ্লাইহুইল হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বেনডিক্স ড্রাইভের ডেন্ট পিন (dent pin) ব্যবহার করা হয় যাতে পিনিয়নটি ফ্লাইহুইলের (রিং গিয়ারের) সাথে যুক্ত থাকতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত না ইঞ্জিনের ঘূর্ণন ৪০০ বার না হয়।

ইঞ্জিন চালু হওয়ার সাথে সাথে চালুকরণ সুইচ বন্ধ করে দিতে হয়। নতুবা সেলফ স্টার্টার আর্মেচার জ্বলে যাবে। সুইচ অন করে একটানা ৩০ সেকেন্ডের বেশী কখনও ক্র্যাঙ্কিং করতে নেই। ত্রিশ সেকেন্ডের বেশী সেল্ফ দিয়ে ঘুরালে আর্মেচার এবং ব্যাটারী এবং সংযোগ লিডসমূহের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশী থাকে। সেলফ স্টার্টার বা ক্র্যাঙ্কিং মোটরের পিনিয়ন-এর সাথে ফ্লাইহুইলের রিং গিয়ারের অনুপাত হচ্ছে ১০ : ১ হতে ১৬ : ১। সেলফ স্টার্টার ১০ অথবা ১৬ বার ঘুরলে ফ্লাইহুইল ঘুরবে ১ বার মাত্র।

 

২। ওভার রানিং ক্লাচ :

এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্লাইহুইলের সাথে যুক্ত হয় না। এই ব্যবস্থায় সলেনয়েড (solenoid) নামক একটি নিয়ন্ত্রণ সুইচ (controling switch) ব্যবহার করা হয়। এই নিয়ন্ত্রণ সুইচের মধ্যে একটি প্লাজার ও একটি শিফটিং লিভার থাকে। এই শিফটিং লিভার সলেনয়েড নিয়ন্ত্রণ সুইচ এবং স্টার্টারের সাথে যুক্ত থাকে।

সুইচ অন করবার সাথে সাথে সলেনয়েড নিয়ন্ত্রণ প্লাজারটি চুম্বকত্ব হয় এবং কন্ট্রাক্ট বিন্দুর সাথে প্লাজার প্লেটটি মিলিত হয় এবং শিফটিং লিভারটিকে নিজের দিকে টেনে নেয়। ফলে ঐ লিভারের অপরপ্রান্ত ওভার রানিং ক্লাচ ও পিনিয়নকে ঠেলে রিং গিয়ারের সাথে (ফ্লাইহুইলের সাথে) যুক্ত করে দেয় এবং ইঞ্জিনকে ঘুরিয়ে চালু করে দেয়। ইঞ্জিন চালু হতে চালুকরণ সুইচ বন্ধ করে দিতে হয়। বন্ধ না করলে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা থাকে। সুইচ বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে সলেনয়েড নিয়ন্ত্রণের সকল যন্ত্রাংশ স্বস্থানে ফিরে আসে।

 

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

চালুকরণ মোটর সুইচ :

সুইচকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : (ক) চৌম্বক সুইচ এবং (খ) সলেনয়েড সুইচ। এগুলির বিবরণ দেওয়া হলো :

চৌম্বক সুইচ :

স্টার্টার মোটরের সাথে ব্যাটারীর শান্তিপূর্ণ সংযোগের জন্য বহু ধরনের স্টার্টার সুইচ ব্যবহার করা হয়। পূর্বে পায়ের সাহায্যে শক্তিশালী সুইচ ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে চৌম্বক সুইচ এবং সলেনয়েড সুইচ ব্যবহার করা হয়। এদের স্টার্টার রিলেও বলা হয়। (৮.১২ চিত্র দ্রষ্টব্য)।

 

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

সুইচ অন করার সাথে সাথে বিদ্যুৎ ব্যাটারী পুল-ইন-উইন্ডিং (pull-in-winding) হয়ে ড্যাশবোর্ড সুইচের মাধ্যমে ভূমি (ground) হয়ে বর্তনী পূর্ণ করে। পুল-ইন-উইন্ডিং-এর মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার সময় এটি প্লাঞ্জারকে শক্তিশালী চুম্বকে পরিণত করে এবং কন্ট্রাক্ট ডিস্ককে টেনে টার্মিনাল বিন্দুর সাথে যুক্ত করে দেয়, ফলে স্টার্টার মোটরকে বিদ্যুৎ সরবরাহে সহায়তা করে।

অর্থাৎ ব্যাটারী এবং স্টার্টার মোটরের মধ্যে বৈদ্যুতিক বর্তনী পূর্ণ করে। যখন সুইচ বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন পুল-ইন-উইন্ডিং দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে প্লাঞ্জার এবং কনট্রাক্ট ডিস্ক টার্মিনাল বিন্দু থেকে দূরে সরে যায় স্প্রিং টেনশনের সাহায্যে। এই জাতীয় সুইচ সাধারণত বেনডিক্স ড্রাইভে ব্যবহার করা হয়।

 

সলেনয়েড সুইচ : (Solenoid switch) :

বর্তমানে প্রায় সকল গাড়ীতে ওভার রানিং ক্লাচ ব্যবস্থার ক্র্যাঙ্কিং মোটর ব্যবহৃত হয়। এর প্রধান ও প্রথম কাজ ইঞ্জিন চালু করে দেওয়া। এই সুইচের মূল কাজ হচ্ছে প্লাঞ্জারটিকে নড়াচড়া (move) করে শিফটিং লিভারের সহায়তায় ক্র্যাঙ্কিং মোটরের পিনিয়নকে সঠিকভাবে ধাক্কা দিয়ে ফ্লাইহুইল রিং গিয়ারের সাথে সংযোগ ঘটানো। 

এই সুইচের কার্যক্রম অনেকটা চৌম্বকীয় সুইচের মত। পার্থক্য শুধু এটি শিফটিং লিভারের সাহায্যে ধাক্কা দিয়ে ওভার রানিং ক্লাচ এবং পিনিয়নকে ফ্লাইহুইলের সাথে যুক্ত করে লনয়েডের মধ্যে দেওয়া। সলেনয়েডের মধ্যে দুই ধরনের উইন্ডিং থাকে। (ক) পুল-ইন-উইন্ডিং এবং (খ) হোল্ড-ইন-উইন্ডিং। উভয় উইন্ডিং কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়, যাতে অতিশীঘ্র ব্যাটারী এবং স্টার্টার মোটরের মধ্যে বৈদ্যুতিক বর্তনী সম্পন্ন করা যায়। পুল-ইন-উইন্ডিং মোটর চালানোর

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

সময় কাজ করে কিন্তু হোল্ড-ইন-উইন্ডিং ড্যাশ-বোর্ডের সুইচ (ইগনিশন সুইচ) বন্ধ না করা পর্যন্ত কাজ করে। সুইচ বন্ধ করলে পুল-ইন-উইন্ডিং (সিরিজ উইন্ডিং) চুম্বকত্ব হারিয়ে ফেলে। ফলে পাঞ্জার কন্ট্রাক্ট ডিস্ককে টার্মিনাল বিদ্যুতের সাথে ধরে রাখতে পারে না বিধায় বর্তনী বন্ধ হয়ে যায়। শক্তিশালী স্প্রিং-এর সাহায্যে পিনিয়ন এবং ওভার রানিং ক্লাচ সংযুক্ত ফ্লাইহুইল থেকে সরে আসে (৮.১২ খ চিত্র দ্রষ্টব্য)। 

 

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

ক্র্যাঙ্কিং মোটর টর্ক পরীক্ষা :

চিত্রানুসারে সংযোগ সম্পাদনের মাধ্যমে ক্র্যাঙ্কিং মোটরের টর্ক বা মোচড়ানোর ক্ষমতা পরীক্ষা করা যায়। এর ফলাফল সাধারণত পাউন্ড-ফুটে বের হয়। এই পরীক্ষার সময় একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রোধ ব্যবহার করা হয় যাতে ভাল ভোল্টেজ এবং সঠিক ফলাফল নির্ণয় করা যায়। ক্র্যাঙ্কিং মোটরের মাঝামাঝি থেকে স্কেলের মাঝামাঝি থেকে স্কেলের মাঝামাঝি পর্যন্ত দূরত্বের সাথে পরিমাপক যন্ত্রের ওজন (পাউন্ড) গুণ করলে পাউন্ড—ফুটে ফল বের হবে। পরিমাপক যন্ত্রে যদি ১৪ পাঃ হতে ২০ পাঃ দেখায় এবং অ্যাম্পেয়ার যদি ১৭৫ হতে ২২৫ দেখায় তাহলে মোটর ভাল আছে বলে মনে করতে হবে।

 

ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি | পদ্ধতি চার্জিং ও স্টার্টিং পদ্ধতি | অটোমোবিল ইঞ্জিনিয়ারিং

 

ক্র্যাঙ্কিং মোটর বা সেলফ স্টার্টার খোলা লাগানো:

নিম্নলিখিতভাবে একটি সেলফ স্টার্টার খোলা ও লাগানো হয়।

১। প্রথমে ইঞ্জিন থেকে এটি খুলে ফেলতে হয়। তারপর এটি টেবিলের উপর বা মেঝেতে রেখে থ্রো বোল্টদ্বয় স্ক্রু ড্রাইভার দ্বারা খুলতে হয়। সেলফ স্টার্টার তিনটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। যেমন, (ক) এন্ড ফ্রেম (end frame), (খ) ফিল্ড কয়েল হাউজিং (field coil housing) এবং (গ) ড্রাইভ এন্ড হাউজিং (drive end housing) আর্মেচার এবং ড্রাইভ পিনিয়নকে ফিল্ড কয়েল হাউজিং হতে সরিয়ে নিতে হবে ।

২। সলেনয়েড সুইচটি সেলফ স্টার্টার হতে সরিয়ে নিতে হবে। থ্রাস্ট কলার, রিটেইনার, স্লিপ রিং ইত্যাদি খুলে ফেলতে হবে ।

৩। বেনডিক্স ড্রাইভ ইউনিট আর্মেচার হতে খুলে ফেলতে হবে। লক রিং প্রথমে খুলতে হয় ।

 

পরিষ্কার এবং পরীক্ষা  করা :

(১) প্রথমে সব যন্ত্রাংশ কেরোসিন বা দ্রাবক (solvent) দ্বারা ভালভাবে পরিষ্কার করতে হয়।

২। কোন যন্ত্রাংশ কেরোসিন বা দ্রাবকের মধ্যে ডুবানো উচিত নয়। কাপড় ভিজিয়ে যন্ত্রাংশসমূহ উত্তমরূপে পরিষ্কার করতে হয়।

৩। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার পর টেস্ট ল্যাম্প বা অ্যাভোমিটার দ্বারা শর্ট এবং গ্রাউন্ড পরীক্ষা করতে হয়। জেনারেটর পরীক্ষা যেভাবে করা হয়েছে অনুরূপভাবে সেলফ স্টার্টারও পরীক্ষা করতে হয়। ব্রাশ, হোল্ডার, কমুটেটর, বুশ ও বিয়ারিং পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

সেলফ স্টার্টার লাগানো : ১। খোলার সময় খুব ভালভাবে খেয়াল রাখতে হয় যে কোন যন্ত্রাংশ কোথা হতে খোলা হচ্ছে, কিভাবে লাগানো ছিল, কোন্ যন্ত্রাংশ কোটির পরে খোলা হচ্ছে ইত্যাদি।

২। প্রথমে ফিল্ড কয়েল হাউজিং-এর মধ্যে আর্মেচার লাগাতে হয় ।

৩। এন্ড ফ্রেম (end frame)-এর সাথে ব্যাস সমূহ লাগিয়ে কমুটেটরের সাথে ভালভাবে লাগাতে হয়।

৪। ড্রাইভ এন্ড (drive end) এর সাথে স্প্রিং, ওভার রানিং ক্লাচ ইত্যাদি লাগিয়ে সাফ রিং লাগিয়ে দিতে হয়। এমতাবস্থায় শিফটিং লিভারটিকে ওভার রানিং ক্লাচ এবং সলেনয়েড সুইচের প্লাঞ্জারের সাথে লাগাতে হয়। পিনিয়নের ক্লিয়ারেন্স সাধারণত ১০ হতে ১৪ থাউ হয়ে থাকে।

 

সেলফ স্টার্টার বা ক্র্যাঙ্কিং মোটরের অভিযোগ, কারণ ও প্রতিকার:

অভিযোগ—১ : স্টার্টিং মোটর ইঞ্জিন ঘুরাতে পারে না অথবা আস্তে আস্তে ঘুরায়

কারণ

১। ব্যাটারীতে চার্জ নেই।
২। ব্যাটারীতে চার্জ কম।
৩। স্টার্টিং মোটর বা নিয়ন্ত্রণ বর্তনীতে অতিরিক্ত রোধ।
৪। স্টার্টার সুইচ খোলা বা সলেনয়েড সুইচের তার খোলা।

৫। ব্রাশ ভাঙ্গা, ক্ষয়প্রাপ্ত, ব্রাশ সংযোগ নেই, ব্যাস স্প্রিং-এ টেনশন কম।
৬। কমুটেটর ময়লা বা জ্বলে গেছে।
৭। ফিল্ড উইন্ডিং খোলা অথবা শর্ট ৭ সার্কিট হয়েছে।
৮। আর্মেচার উইন্ডিং খোলা, শর্ট বা গ্রাউন্ড হয়েছে।
৯। আর্মেচার শ্যাফট বুশ বন্ধ অথবা বিয়ারিং আটকে গেছে।
১০। বেনডিক্স ড্রাইভ বন্ধ হলে বা আটকে গেলে পিনিয়ন ফ্লাইহুইল রিং গিয়ারের সাথে সংযুক্ত হতে চায় না।
১১। ইঞ্জিনে ঘর্ষণ হয়ে বন্ধ হলে।

প্রতিকার

১। ব্যাটারী চার্জ করতে হবে।
২। ব্যাটারী পূর্ণ চার্জ করতে হবে।
৩। ব্যাটারী সংযোগ, ব্যাটারী ক্যাবল পরীক্ষা করতে হবে।
৪। সুইচের তারসমূহের সংযোগ ভালভাবে এঁটে দিতে হবে।

৫। ব্রহ্ম বদলী করতে হবে। ব্রাশ সংযোগ আঁটাতে হবে এবং স্প্রিং ব্রাশ বদল করতে হবে।
৬। কমুটেটর স্যান্ড পেপার দ্বারা ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে। জ্বলে গেলে লেদে টারনিং করতে হবে।
৭। পরীক্ষা করে মেরামত বা বদলী করতে হবে।
৮। গ্রোলার বা টেস্ট ল্যাম্প দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে মেরামত অথবা বদলী করতে হবে।
৯। বুশ এবং বিয়ারিং বদলী করতে হবে এবং ভালভাবে গ্রীজ দিতে হবে।
১০। বেনডিক্স ড্রাইভকে বন্ধ হওয়া থেকে মুক্ত করার জন্য তৃতীয় গিয়ারে রেখে গাড়ীটিকে সম্মুখে ও পিছনের দিকে ধাক্কা দিতে হবে। ‘এতেও মুক্ত না হলে স্টার্টার মাউন্টিং বোল্ট অল্প একটু খুলে পুনরায় শক্ত করে এঁটে দিতে হবে।
১১। ইঞ্জিনে ঘর্ষণ মুক্ত করতে হবে। ক্র্যাঙ্ক পিন ও জারনাল এবং পিস্টন রিং সংযোগ ক্লিয়ারেন্স পরীক্ষা করতে হবে।

অভিযোগ—২ : স্টার্টার মোটর ঘুরতে চায় কিন্তু ইঞ্জিন ক্র্যাঙ্ক করতে পারে না

কারণ

১। বেনডিক্স ড্রাইভের হেলিক্যাল গিয়ার

প্রতিকার

১। কেরোসিন তেল দ্বারা ভালভাবে ময়লায় বন্ধ হলে। পরিষ্কার করতে হবে।

 

আরও দেখুনঃ

 

2 thoughts on “ইঞ্জিন চালুকরণ পদ্ধতি”

Leave a Comment